ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

অ্যান্টার্কটিকার প্রথম সালাদ

ফিচার ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ৭, ২০১৮
অ্যান্টার্কটিকার প্রথম সালাদ অ্যান্টার্কটিকার সবজি হাতে গবেষক

পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্গম, উচ্চতম, শীতলতম ও শুষ্কতম হিসেবে পরিচিত অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশে সফলভাবে সবজি চাষ করলেন জার্মান গবেষকরা।

একটি গ্রিনহাউজের (কৃত্রিম পরিবেশের ঘর) ভেতর চাষ করা হয়েছে লেটুস, শসা ও মূলা। চাষের সবজি দিয়ে সালাদ তৈরি করে খেয়েও দেখেছেন গবেষকরা।

বলা হচ্ছে- এটিই অ্যান্টার্কটিকার প্রথম সালাদ।

সালাদটি ছিল অন্যসব বাগানের তরতাজা সবজির সালাদের মতোই সুস্বাদু, এমনটিই দাবি করলেন অ্যান্টার্কটিকায় অবস্থিত জার্মান গবেষণা কেন্দ্র ‘নিউমেয়ার স্টেশন-থ্রি’র ম্যানেজার বেনার্ড গ্রপ।

বরফ শীতল স্থানটিতে চাষাবাদের উদ্যোগ নেওয়া হয় গত ফেব্রুয়ারি মাসে। গবেষণা কেন্দ্রটির ৪০০ মিটার দূরে স্থাপন করা হয় জাহাজের কন্টেইনার আকৃতির একটি গ্রিনহাউজ। গ্রিনহাউজের ভেতর গড়ে তোলা হয় সবজির বাগান। আর বাগানটির নাম দেওয়া হয় ‘ইডেন আইএসএস’।
অ্যান্টার্কটিকার সবজিমূলত, জার্মান নভোচারীদের প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যেও চাষাবাদের পদ্ধতি শেখানোর জন্য এ উদ্যোগ। পাশাপাশি অ্যান্টার্কটিকের জনবিচ্ছিন্ন অঞ্চলে অবস্থিত জার্মান গবেষণা কেন্দ্রটির গবেষকদের সবজি চাহিদা পূরণ করতে পারবে বাগানটি।

গবেষকরা জানান, নভোচারীদের ভবিষ্যৎ মিশনগুলোতে অনেক দীর্ঘ সময়ের জন্য মহকাশে অবস্থান করতে হতে পারে। এরকম পরিস্থিতিতে তাদের তরতাজা খাবার সরবরাহ করা প্রায় অসম্ভব। তাই মহাকাশে, চাঁদে বা মঙ্গলগ্রহে যাতে চাষাবাদ সম্ভব হয় সেই প্রশিক্ষণই দেওয়া হচ্ছে নভোচারীদের।

অ্যান্টার্কটিকার পরিবেশ ও মহাকাশ যানের ভেতরকার পরিবেশ অনেকটা একই রকম। উভয় স্থানেই কোনো মাটি নেই, নেই কোনো প্রাকৃতিক সূর্যালোক। কৃত্রিম আলোয় পানি সরবরাহ, বায়ু প্রবাহ ও কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিয়ন্ত্রণ দরকার হয় চাষাবাদের জন্য। উত্তর ইউরোপের কিছু কিছু শীতপ্রধান অঞ্চলেও একই চাষপদ্ধতি ব্যবহৃত হয়।

গবেষক পল জাবেল এ বাগানের গাছগুলো পরিচর্যার পেছনে প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ব্যয় করেন। বৃহস্পতিবার (৫ এপ্রিল) তিনি বাগান থেকে সাড়ে ৩ কেজি লেটুস, ৭০টি মূলা ও ১৮টি গাজর সংগ্রহ করেন। তবে গবেষকদের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ স্ট্রবেরি চাষ করা। কারণ স্ট্রবেরি চাষ কিছুটা কঠিন। এছাড়া বাগানে কিছু ঔষধি উদ্ভিদও রোপণ করা হয়েছে।  

আগামী মে মাসের মধ্যে ‘ইডেন আইএসএস’-এ পুরোদমে চাষাবাদ শুরু হয়ে যাবে। তখন প্রতি সপ্তাহে ৫ কেজি তরতাজা সবজি উৎপাদন সম্ভব হবে।

জানা যায়, ১৯০১ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত অ্যান্টার্কটিকায় ৪৬ ধরনের উদ্ভিদ চাষের প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। এগুলোরমধ্যে খুব অল্পই সম্ভাবনার মুখ দেখেছে। তবে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনের নভোচারীরা ইতোমধ্যেই মহাকাশে অল্প পরিমাণ লেটুস উৎপাদনে সক্ষম হয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০০৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০১৮
এনএইচটি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।