সকালের মিষ্টি রোদে অলস শুয়ে থাকা, খাবারের খোঁজে দোকানে দোকানে লাফালাফি কিংবা পথচারীর সঙ্গে আদুরে ভঙ্গি।
এ শহরের জীবনযাপনে বিড়ালের অনুপস্থিতিই যেন অস্বাভাবিক। জীবনযাপনের অন্যসব অনুষঙ্গের মতো বিড়ালের দাপিয়ে বেড়ানো নিয়ে কারও কোনো ভ্রুক্ষেপও থাকে না এ শহরে। বরং কখনো কখনো বিড়ালই হয়ে ওঠে এ শহরের মানুষের খোশগল্পের অনুষঙ্গ।
পাড়া-প্রতিবেশী কিংবা পুচকেদের মতো সবাই সবার বিড়ালের নাম জানে। বিড়ালগুলোকে তাদের নাম ধরেও ডাকা হয়। বিড়ালকে নিয়ে মালিকদের গর্ববোধেরও কমতি থাকে না। নতুন বন্ধু কিংবা অপরিচিত কাউকে পেলেই বিড়াল বন্দনায় মেতে ওঠেন মালিকরা।
যখন পুরো শহরে শীত নেমে আসে, উষ্ণতাই যখন হয়ে যায় একমাত্র চাওয়া, তখন এ শহরের মানুষ বিড়ালকে শীত কষ্টে রাখেন না। অনেকেই উষ্ণতার জন্য নিজের ঘরে নিয়ে আসেন। অনেকে বিড়ালের জন্যই তৈরি করে আলাদা উষ্ণ ঘর।
আদুরে প্রাণী বিড়াল কিনতেও কম যান না ইস্তাম্বুলের মানুষ। বিড়াল কিনতে আসলে অর্থও প্রাধান্য পায় না তাদের কাছে। বিড়াল বিক্রেতা ওজান বলেন, যারা বিড়াল কিনতে আসেন তাদের কাছে টাকা খুব বেশি প্রাধান্য পায় না।
পা নেই কিংবা চোখে দেখে না কোন বিড়াল অথবা অন্য কোন সমস্যা আছে, তাতে কি! তবুও বিড়াল কেনেন বিড়াল প্রিয় এ শহরের মানুষরা। এরপর তাদের প্রথম কাজ হয় বিড়ালদের ক্লিনিকে ভর্তি করা। বিড়াল যখন সুস্থ হয়ে ওঠে, তখন যেন বিড়ালক্রেতাদের চোখে-মুখে অন্যরকম দীপ্তি দেখা যায়।
ইস্তাম্বুল ঘেঁষা জেলা চিহানগির। এ জেলার দৃশ্যও অভিন্ন। এ শহরেও দাপিয়ে বেড়ায় বিড়াল। তবে এখানকার অন্যতম আকর্ষণ রাস্তায় সারি সারি সাজিয়ে রাখা বিড়ালদের আশ্রয় ঘর।
বিড়াল পুষে কোনরকম শ্লেষও নেই কারো; বরং অনেক বেশি উচ্ছ্বাস তাদের। তেমনি এক বিড়াল পালক এরসা যেন পুরো শহরের প্রত্যেকটি মানুষের কথা বললেন। তিনি বলেন, আমি এখানে বিড়াল পুষতে শুরু করি। তাদের জন্য খাবার কিনি, তাদের খাওয়াই। তারপর দেখলাম তারা আমার খুবই কাজে আসছে। আমার মনে হয় মানুষ নয়, বিড়ালকে ভালোবাসা উচিত। কারণ মানুষ অকৃতজ্ঞ হয়, বিড়াল নয়।
বাংলাদেশ সময়: ০০৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১৮
এএইচ/এএ