শহরের প্রাণকেন্দ্র মজমপুরে পৌরসভার পুকুর পাড়ে বসলেই প্রাণ জুড়াবে সুশীতল ছায়ায়। আর তার পাশেই চোখে পড়বে টেরাকোটার ধাঁচে সিমেন্ট আর সুড়কিতে করা দেয়ালের কারুকাজ।
শনিবার (২৫ আগস্ট) পৌরসভা ঘুরে দেখা গেছে, দেয়ালে দেয়ালে ফুটে উঠেছে এ জেলার গ্রামীণ ঐতিহ্য আর সংস্কৃতি। তাতে প্রথমেই চোখে পড়বে গায়ের বধূর ধান ভানার দৃশ্য। সেখানে গ্রামীণ যাতায় ধান থেকে চাল এবং চাল থেকে ময়দা তৈরির দৃশ্যও চোখে পড়বে।
আছে গ্রামের বাড়ির উঠান। সেখানে একদিকে যেমন মা তার সন্তানকে দুধ পান করাচ্ছেন, তেমনি বাড়ির বয়স্ক মানুষটি করছেন সংসারের তৈজশপত্র ঠিক করার কাজ। আর পাশেই বসে তা শিখে নিচ্ছে বাড়ির ছোট্ট ছেলেটি।
দেখা যাবে ঢেঁকিতে ধান ভানার দৃশ্য। বাড়ির গৃহিনীরা ঢেঁকির একপাশে পাট (ধাক্কা) দেন, আর অন্যদিকে গুঁড়ো হওয়া চালগুলো বেছে নেন অন্য গৃহিনীরা। ঢেঁকিতে পাট দেওয়ার সময় অনেক ক্ষেত্রে তারা গানও গেয়ে থাকেন।
এরপরেই দেখা মিলবে মাঠে কৃষকের গরু নিয়ে লাঙল দেওয়ার দৃশ্য। আর মাঠের পাশেই যে নদী তা থেকে পানি ভর্তি কলসি কাঁখে ঘরে ফিরছে গাঁয়ের কোনো বধূ।
আছে নদীতে মাছ ধরার দৃশ্যও। বর্ষাকালে কুষ্টিয়া জেলার প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে নদীতে পলো নিয়ে মাছ ধরা যেন একটি উৎসব। একসময় কুষ্টিয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পালকিতে করে বর বা কনে যাত্রা হলেও এখন তা অনেকটাই ইতিহাস। তবে সে দৃশ্যও চোখে পড়বে পৌরসভার দেয়ালে। এখানে দেখা যাবে চার বেহারার পালকিতে করে বর আর বউ যাওয়ার দৃশ্য।
সবশেষে ফুটে উঠেছে আবহমান গ্রামবাংলার মানুষগুলোর একাত্মতা। সুখে-দুঃখে গ্রামের মানুষগুলো সবসময় এসে দাঁড়ায় একে অপরের পাশে। আর এভাবেই তারা গড়ে তোলে একটি সুখি ও সমৃদ্ধ গ্রাম, জেলা বা শহর।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০১৮
এইচএমএস/আরআর