ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

ছবিতে হাড় কাঁপানো শীতে বিপাকে শ্রমজীবীরা

উপজেলা করসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৯
ছবিতে হাড় কাঁপানো শীতে বিপাকে শ্রমজীবীরা প্রচণ্ড শীতে জবুথবু এক বয়স্ক দিনমজুর। ছবি: বাংলানিউজ

ঈশ্বরদী (পাবনা): ‘ঠাণ্ডায় কাপ উইঠ্যি যাচ্ছে, কাম কাজও পাইনি কো, তাই বাড়িত চইল্যি যাচ্ছি’ আক্ষেপ করে মৃদু শৈত্যপ্রবাহের বর্ণনা দিচ্ছিলেন পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার সাড়া ইউনিয়নের আসনা গ্রামের কালু প্রামানিক (৫০) নামে এক বৃদ্ধা। তার কথাতেই অনুমান করা যাচ্ছে ঈশ্বরদীতে ঠাণ্ডার প্রকোপ কতোটা।

রোববার (২২ ডিসেম্বর) ঘড়ির কাঁটায় যখন সকাল ১১টা পেরিয়ে গেছে, সারাদিনের অর্ধেকটা পেরুলে সূর্যের দেখা নেই। বেলা যতই গড়াচ্ছে, বাতাস আর শীতের মাত্রা যেন ততই বাড়চ্ছে।



সকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঠাণ্ডা বাতাস বয়ে চলায় প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বেরোচ্ছেন না কেউ। জীবিকার তাগিদে কেউ কেউ কানে মাফলার ও গরম কাপড় শরীরের পেঁচিয়ে বেরোচ্ছেন।

মানুষের পাশাপাশি প্রাণীকুলেও শীতের প্রভাব পড়েছে। সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে-খাওয়া মানুষেরা। শীতার্ত অসহায় মানুষ শীতবস্ত্রের অভাবে গায়ে চট জড়িয়ে শীত তাড়ানোর চেষ্টা করছেন। শীতের প্রকোপ আর ঠাণ্ডা বাতাসের কারণে কাজে যেতে পারছেন না শ্রমজীবীরা। এছাড়া হাসপাতালগুলোতে ক্রমেই শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বিভিন্ন সড়কে যানবাহনে যাত্রী উপস্থিতি একেবারেই কম।

ঈশ্বরদী পৌর এলাকার দিনমজুর আজিম আলী (৪৫) বাংলানিউজকে বলেন, শীতের মধ্যে কোনো কাজ নেই, যদিও কাজের জন্য লোক নিচ্ছেন, ঠাণ্ডায় বয়স্ক কাউকে কাজেই নিচ্ছেন না। কাজ না পেয়ে শুকনো মুখে অনেকে বাধ্য হয়ে বাড়ি চলে যাচ্ছেন।

ঈশ্বরদী রেলগেট এলাকার চা-বিক্রেতা সেলিম মিয়া (৩৭) বাংলানিউজকে বলেন, প্রচণ্ড ঠাণ্ডার মধ্যে একটু কাজ করলেই হাত-পা অবশ হয়ে যাচ্ছে। বেচাকেনা না হলে তো সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে পড়বে।

ঈশ্বরদী আবহাওয়া কার্যালয়ের পর্যবেক্ষক নাজমুল হক বাংলানিউজকে বলেন, উপজেলায় এখন মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে। তবে, দু-একদিনে কমে যাবে। আজ সকাল নয়টায় তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রয়েছে। শনিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল। এছাড়া শুক্রবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বোচ্চ ২০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিলো।  ছবি: টিপু সুলতানহাড় কাঁপানো শীতের মধ্যে কাজে যাচ্ছেন দুই দিনমজুর।

.প্রচণ্ড শীতে কাজ করতে না পেরে ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে চট শরীরের জড়িয়ে জবুথবু এক বয়স্ক দিনমজুর। ..হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডা পড়ায় গবাদিপশুদের ওপর প্রভাব ফেলেছে। গবাদিপশুদের শরীরের পুরাতন কাপড় জড়িয়ে বিক্রির জন্য হাটে নিয়ে যাচ্ছেন দুই ব্যক্তি। .বাতাস আর ঠাণ্ডায় গরম পোশাক পরে বের হয়েছেন কয়েকজন চাকরিজীবী। .ঠাণ্ডায় কাঁপতে কাঁপতে হেঁটে যাচ্ছেন একজন দিনমজুর। ..ঈশ্বরদীতে সারাদিন সূর্যের দেখা পাওয়া যায়নি। ঠাণ্ডায় শীতবস্ত্র বিক্রি করছেন কয়েকজন ভ্রাম্যমাণবিক্রেতা। তা কিনছেনে কয়েকজন ক্রেতা। ..প্রচণ্ড শীতে কাজ না পেয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন বয়স্ক দিনমজুররা।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৯
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।