ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সব সময় গুরুত্ব বহন করে। এ গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিন’।
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ রোববার। ০৩ ফাল্গুন ১৪২৬ বঙ্গাব্দ। এক নজরে দেখে নিন ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনের জন্ম-মৃত্যুদিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।
ঘটনা
১৮৬২- আমেরিকান গৃহযুদ্ধে জেনারেল উলিসেস এস গ্রান্ট টেনেসির ফোর্ট ডনেলসন দখল করেন।
১৯১৮- লিথুনিয়া স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষিত হয়।
১৯২৩- হাওয়ার্ড কার্টার মিশরের ফারাও সম্রাট তুতানখামেনের সমাধি উন্মুক্ত করেন।
১৯৬১- এক্সপ্লোরার-৯ উৎক্ষেপণ করা হয়।
জন্ম
১৮১২- মার্কিন রাজনীতিবিদ, যুক্তরাষ্ট্রের ১৮তম উপ-রাষ্ট্রপতি হেনরি উইলসন।
১৮৩১- রুশ লেখক ও সাংবাদিক নিকোলাই লেসকভ।
১৮৩৮- মার্কিন ইতিহাসবিদ, সাংবাদিক ও ঔপন্যাসিক হেনরি অ্যাডাম্স।
১৮৬৮- দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার আলবার্ট রোজ-ইন্স।
১৯২৬- বাঙালি লেখক ও বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লা কায়সার।
ফেনীর মাজুপুর গ্রামে তার জন্ম। তিনি সমসাময়িক রাজনৈতিক আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। বামরাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার কারণে তিনি একাধিকবার কারাবরণ করেন। পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। দেশপ্রেমিক ছদ্মনামে ‘রাজনৈতিক পরিক্রমা’ ও বিশ্বকর্মা ছদ্মনামে ‘বিচিত্রা কথা’ শীর্ষক উপ-সম্পাদকীয় রচনা করতেন তিনি। ‘সাপ্তাহিক ইত্তেফাক’ পত্রিকা থেকে সাংবাদিক জীবনের হাতেখড়ি হলেও তার সাংবাদিক জীবনের সব কৃতিত্ব ও পরিচিতি ‘দৈনিক সংবাদ’-কে ঘিরে। ‘সংশপ্তক’ তার বিখ্যাত উপন্যাস। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে তিনি পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও স্থানীয় সহযোগী আল-বদরের হাতে অপহৃত হন। ধারণা করা হয়, অপহরণকারীদের হাতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
১৯৪২- পরমাণুবিজ্ঞানী, বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া।
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার ফতেহপুর গ্রামে তার জন্ম। বাবা আবদুল কাদের মিয়া এবং মাতা ময়জুন নেছা বিবি। তিনি সমধিক পরিচিত ছিলেন সুধা মিয়া নামে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন এবং ১৯৬১ সালে স্নাতক (সম্মান) পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে দ্বিতীয় স্থান এবং ১৯৬২ সালে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থানসহ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ওয়াজেদ মিয়া ১৯৬৩-৬৪ শিক্ষাবছরে লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজ থেকে ‘ডিপ্লোমা অব ইম্পেরিয়াল কলেজ কোর্স’ এবং ১৯৬৭ সালে ইংল্যান্ডের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৭৫ সালে তিনি পশ্চিম জার্মানিতে পরমাণু শক্তি বিজ্ঞানে উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৮ সালে বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
ড. ওয়াজেদ মিয়া ১৯৬৩ সালের ১ এপ্রিল পাকিস্তান পরমাণু শক্তি কমিশনে যোগ দেন। ১৯৬৯ সালে তিনি ইটালিভিত্তিক আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯৭৫-৮২ সালে তিনি ভারতের আণবিক শক্তি কমিশনের দিল্লির ল্যাবরেটরিতে গবেষণায় নিয়োজিত ছিলেন। দেশে ফিরে তিনি পুনরায় পরমাণু শক্তি কমিশনে যোগ দেন এবং ১৯৯৯ সালে এর চেয়ারম্যান হিসেবে অবসর নেন। তার গবেষণামূলক ও বিজ্ঞান বিষয়ক বহু প্রবন্ধ দেশি-বিদেশী সংবাদপত্র ও সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। তার উল্লেখযোগ্য প্রকাশনা Fundamentals of Electromagnetics (1982), Fundamentals of Thermodynamics (1988), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে ঘিরে কিছু ঘটনা ও বাংলাদেশ, বাংলাদেশের রাজনীতি ও সরকারের চালচিত্র। বিজ্ঞানে অবদানের জন্য বিক্রমপুর স্যার জগদীশচন্দ্র বসু সোসাইটি তাকে ‘স্যার জগদীশচন্দ্র বসু স্বর্ণপদক-৯৭’ দেয়।
১৯৪৮- কণ্ঠশিল্পী নীলুফার ইয়াসমীন।
১৯৫৪- জ্যামাইকান ক্রিকেটার মাইকেল হোল্ডিং।
১৯৫৯- মার্কিন টেনিস খেলোয়াড় জন ম্যাকেনরো।
১৯৮৮- ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার ডেনিলসন পেরেইরা নেভেস।
১৯৩৫- মার্কিন প্রকৌশলী ও উদ্ভাবক, গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেমের জনক ব্রেডফোর্ড পার্কিন্সন।
১৯৩৬- বাংলাদেশি সাহিত্যিক রাজিয়া খান।
লেখালেখি ছাড়াও তিনি দীর্ঘদিন মঞ্চে অভিনয় করেছেন। ১৫ বছর বয়সেই তিনি উপন্যাস লিখতে শুরু করেন। ১৮ বছর বয়সে তার লেখা ‘বটতলার উপন্যাস’ ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। তার লেখায় জটিলায়তন নগরজীবন, অন্তর্গত ব্যক্তিদের নৈঃসঙ্গ ও বিচ্ছিন্নতা প্রকাশ পেয়েছে। তার মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক উপন্যাস ‘দ্রৌপদী’ বেশ সমাদৃত।
১৯৫৩- বাংলাদেশি চলচ্চিত্র অভিনেত্রী অলিভিয়া।
মৃত্যু
১২৭৯- পর্তুগালের রাজা দ্বিতীয় অলফেন্সো।
১৩৯১- বাইজেন্টাইন সম্রাট পঞ্চম জন পেলাইওলোগস।
১৭৫৪- ব্রিটিশ চিকিৎসক রিচার্ড মিড।
১৮৯৯- ফরাসি ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ, ফ্রান্সের ৭ম রাষ্ট্রপতি ফেলিক্স ফাওরি।
১৯০৭- নোবেলজয়ী ইতালিয়ান কবি জিওসুয়ে কার্দুচ্চি।
১৯৩২- ফরাসি একাডেমিক ও রাজনীতিবিদ, শান্তিতে নোবেলজয়ী ফার্ডিনেন্ড বুইসন।
১৯৩৬- দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার টমি ওয়ার্ড।
১৯৫৬- বাঙালি পদার্থবিদ মেঘনাদ সাহা।
১৮৯৩ সালের ৬ অক্টোবর ঢাকার কাছে শ্যাওড়াতলী নামক গ্রামে তার জন্ম। তিনি পদার্থবিজ্ঞানের থার্মাল আয়নাইজেসন তত্ত্বের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে বিখ্যাত। তার আবিষ্কৃত সাহা আয়োনাইজেসন সমীকরণ নক্ষত্রের রাসায়নিক ও ভৌত ধর্মাবলী ব্যাখ্যায় ব্যবহৃত হয়। এছাড়া তিনি পরমাণু বিজ্ঞান, আয়ন মণ্ডল, পঞ্জিকা সংস্কার, বন্যা প্রতিরোধ ও নদী পরিকল্পনা বিষয়ে গবেষণা করেন।
১৯৮৪- বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিবাহিনী ও সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়ক মুহাম্মদ আতাউল গণি (এমএজি) ওসমানী।
১৯১৮ সালের ১ নভেম্বর সুনামগঞ্জে তার জন্ম। ১৯৪২ সালে ওসমানী মেজর পদে উন্নীত হয়ে ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক নিযুক্ত হন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তিনি বার্মা রণাঙ্গনে ব্রিটিশ বাহিনীর অধিনায়করূপে যুদ্ধ করেন। ১৯৪৮ সালে তিনি কোয়েটা স্টাফ কলেজ থেকে পিএসসি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৫৬ সালে তিনি কর্নেল পদে উন্নীত হন। এরপর তিনি আর্মি হেডকোয়ার্টারে জেনারেল স্টাফ ও মিলিটারি অপারেশনের ডেপুটি ডিরেক্টর নিযুক্ত হন। ১৯৬৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণের পূর্ব পর্যন্ত দীর্ঘ ১০ বছর তিনি এ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।
ওসমানী ১৯৭০ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। সত্তরের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে তিনি পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকার গঠিত হলে ওসমানী বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি নিযুক্ত হন। স্বাধীনতার পর ১৯৭১ সালের ২৬ ডিসেম্বর তিনি বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনীর জেনারেল পদে উন্নীত হন
আজীবন অকৃতদার ওসমানী ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে লন্ডনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৯৮৪ সালের এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ০০৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২০
টিএ