ঢাকা: ৬ আগষ্ট মানব ইতিহাসের ভয়াবহতম এবং লজ্জার হিরোশিমা দিবস। আজ থেকে ৭৫ বছর আগে এদিন যুক্তরাষ্ট্রের নিক্ষেপ করা পরমাণু বোমা হামলায় কেঁপে উঠেছিল জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকি।
১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে জাপানের হিরোশিমা শহরে পারমাণবিক বোমা হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। ঘড়ির কাঁটায় তখন জাপানের স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ১৫ মিনিট। মার্কিন বিমান বাহিনীর বি-টোয়েন্টিনাইন যুদ্ধবিমান থেকে হিরোশিমা শহরে ফেলা হয় ‘লিটল বয়’ নামে একটি পরমাণু বোমা।
ভয়বহতম এ হামলায় তাৎক্ষণিকভাবে প্রায় দেড় লাখ মানুষ নিহত হন। মাটির সঙ্গে মিশে যায় শহরের বেশিরভাগ স্থাপনা। নিমিষেই সাজানো একটি নগরী ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হয়। বোমা হামলার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় তেজস্ক্রিয়তার কারণে বছর শেষে আরও ৬০ হাজার মানুষ মারা যান।
হিরোশিমা শহরে বোমা হামলার তিনদিন পর ৯ আগস্ট জাপানের নাগাসাকি শহরে ‘ফ্যাটম্যান’ নামে আরও একটি শক্তিশালী পরমাণু বোমা হামলা করে যুক্তরাষ্ট্র। এতে নাগাসাকির প্রায় ৭৪ হাজার মানুষ নিহত হন।
এছাড়া, তেজস্ক্রিয়তার কারণে সৃষ্ট রোগে হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে চার লাখের মতো মানুষ মারা যান, যাদের অধিকাংশই ছিলেন বেসামরিক নাগরিক।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৯ সালে হিরোশিমাকে ‘শান্তির শহর’ ঘোষণা করা হয়। হিরোশিমায় নির্মাণ করা হয় শান্তির স্মৃতি পার্ক। এরপর থেকে প্রতিবছর ৬ আগস্ট শোক ও বেদনার মধ্য দিয়ে দিনটিকে স্মরণ করে বাংলাদেশসহ বিশ্ববাসী। একইসঙ্গে এদিন যুদ্ধবিরোধী প্রচার প্রচারণা চলে এবং পারমাণবিক বোমামুক্ত বিশ্ব গড়ার প্রত্যয় নেওয়া হয়।
একটি বিধ্বস্ত শহর কীভাবে ধ্বংসযজ্ঞ থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পারে, তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ হিরোশিমা। প্রতি বছর লাখ লাখ পর্যটক হিরোশিমা ভ্রমণে যান। পরমাণু বোমা হামলার পর যে শহর সম্পূর্ণ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল, সেই শহর এখন সবুজ গাছপালা আর ছায়ায় ভরা। পরিষ্কার-পরিছন্ন রাস্তাঘাট ও গগনচুম্বি দালানকোঠা যেন পরমাণু বোমা হামলার সেই ভয়াবহতাকে প্রতিনিয়ত ভুলে থাকতে চায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬, ২০২০
আরকেআর/এফএম