ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

এখনো প্রতিদিন প্রাসঙ্গিক ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২০
এখনো প্রতিদিন প্রাসঙ্গিক ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ছবি: রাজীন চৌধুরী

ঢাকা: ঊনবিংশ শতকের বাঙালি শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক ও গদ্যকার ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে আধুনিক বাংলা ভাষার জনক বললে হয়তো ভুল বলা হবে না। কেননা তিনিই প্রথম বাংলা লিপি সংস্কার করেছিলেন।

এছাড়া তিনি যে শুধু বাংলা ভাষাকে যুক্তিগ্রাহ্য ও সকলের বোধগম্য করে তুলেছিলেন তাই নয়, তিনি ছিলেন বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থা এবং বাঙালি সমাজে প্রগতিশীল সংস্কারের একজন অগ্রদূত।

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ২০০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তাকে ঘিরে সাজানো মঞ্চে আলোচকেরা বললেন এমন কথা। তারা বলেন, একুশ শতকের বাঙালি হৃদয়ে বিদ্যাসাগর এখনো প্রাসঙ্গিক হয়ে আছেন এবং থাকবেন বলেই মনে করা হচ্ছে।

শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ২০০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর। বিকেলে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় ‘একুশ শতকের বাঙালি হৃদয়ে বিদ্যাসাগর’ শীর্ষক আয়োজন।

অনুষ্ঠানে জাতীয় জাদুঘরের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ। আয়োজনে অনলাইনে যুক্ত হয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভারতের রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্যাকলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মহুয়া মুখার্জি। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান।

মূল প্রবন্ধে ড. মহুয়া মুখার্জি বলেন, ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সবসময়ই নারীদের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন। তিনি যা প্রচার করেছেন, তা তার নিজের জীবনেও প্রয়োগ করেছেন। বহুবিবাহসহ বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে সারাজীবন সংগ্রাম করেছেন এই মানুষটি। বিদ্যাসাগর দেখিয়েছেন বৈধব্যদশার অন্যতম কারণ হলো বালবিবাহ। এছাড়া একদিকে তিনি যেমন নারী শিক্ষার জন্য কাজ করেছেন, তেমনি নারীকে অধিকার দেওয়ার বোধটিও সকলের মাঝে প্রথম জাগিয়ে তোলেন তিনিই।

ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এবং রবীন্দ্রনাথ মিলে বাঙালিকে ভাষা শিখিয়েছেন। তাই এখনো প্রতিদিন তারা প্রাসঙ্গিক। বিদ্যাসাগর বিরামচিহ্ন এনে সাজিয়েছেন বাংলা ভাষাকে। সেই ভাষায় তিনি বুঝেছিলেন নারী যদি শিক্ষিত না হয় তবে নিজেদের এগিয়ে নেওয়া যাবে না। তিনিই প্রথম নারী শিক্ষাকে সামগ্রিক শিক্ষায় নিয়ে আসেন। বাংলাদেশের নারীবাদীদের কাছে তিনি তাদের শিক্ষক হিসেবে সম্মানিত হতে পারেন।

কেএম খালিদ বলেন, বিদ্যাসাগর এবং বঙ্গবন্ধু একই রেখায় দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করেছেন। বিদ্যাসাগরের মাতৃভক্ততা আমাদের জন্য শিক্ষণীয়। বিশেষ করে নতুন প্রজন্ম তার কাছ থেকে শিখতে পারে দেশপ্রেম।

সভাপতির বক্তব্যে আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর আমাদের শিক্ষা দেয় সময়নিষ্ঠ হওয়া এবং সত্যনিষ্ঠ হওয়ার। বাঙালি হিসেবে আমরা আজ যে জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছি, বাংলার যে নবজাগরণ, তাতে যাদের অবদান অনস্বীকার্য, তাদের মধ্যে বিদ্যাসাগর অন্যতম। এজন্যই তাকে আমাদের স্মরণ করা দরকার।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২০
এইচএমএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।