ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

ইতিহাসের এই দিনে

বব মার্লের জন্ম এবং ঋত্বিক ঘটকের মৃত্যু

ফিচার ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২১
বব মার্লের জন্ম এবং ঋত্বিক ঘটকের মৃত্যু

প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই সেখানে স্থান পায়, যা কিছু ভালো, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ।

তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এ গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিন’।

শনিবার, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ২৩ মাঘ ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪২। এক নজরে দেখে নিন ইতিহাসের এ দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনের জন্ম-মৃত্যুদিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

ঘটনা
১৭৮৮: ম্যাসাচুসেটকে যুক্তরাষ্ট্রের ষষ্ঠ অঙ্গরাজ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
১৮৪০: ওয়াইটাঙ্গি চুক্তির মাধ্যমে ব্রিটিশ কলোনি হিসেবে নিউজিল্যান্ডের আত্মপ্রকাশ।
১৯১৮: ৩০ বছর বয়স্ক ব্রিটিশ নারীরা ভোটাধিকার লাভ করেন।
১৯৩২: কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন উৎসবে বিপ্লবী বীণা দাস গভর্নর স্ট্যানলি জ্যাকসনকে গুলি করেন।
১৯৫৮: মিউনিখ বিমান দুর্ঘটনায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ৮ খেলোয়াড়সহ ২৩ জন যাত্রী মৃত্যুবরণ করেন।
১৯৭২: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম কলকাতায় আসেন এবং ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে তদনীন্তন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে একটি জনসভায় ভাষণ দেন।
২০০০: দ্বিতীয় চেচেন যুদ্ধ: গ্রোজনি ও চেচনিয়া দখল করে রাশিয়া।

জন্ম
১৮৯১: অমর বসু, ব্রিটিশবিরোধী বাঙালি বিপ্লবী
১৮৯৫: বসন্ত কুমার বিশ্বাস, ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের ব্যক্তিত্ব।
১৯১১: রোনাল্ড রিগ্যান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪০তম প্রেসিডেন্ট
১৯২৯: ট্রাঙ্কুলাইজার আবিষ্কর্তা কলিন মারডক।
১৯৩২: ফ্রঁসোয়া ত্রুফো, ফরাসি চলচ্চিত্র সমালোচক, পরিচালক, প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার ও অভিনেতা।
১৯৪৫: বব মার্লে, জামাইকান রেগে শিল্পী, গিটার বাদক, গীতিকার।

‘বাফেলো সোলজার’, ‘নো ওম্যান, নো ক্রাই’, ‘গেট আপ স্ট্যান্ড আপ’, ‘ব্ল্যাক প্রগ্রেস’-এর মতো ভুবনকাঁপানো অনেক গান দিয়ে সংগীতপ্রেমীদের মন জয় করেছিলেন বব মার্লে।
১৯৪৫ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি জ্যামাইকার কুখ্যাত একটি শহরতলির বস্তিতে জন্মগ্রহণ করেন মার্লে। তার জন্মের সময় জ্যামাইকা ছিল একটি অশান্ত দেশ। রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক সব ক্ষেত্রেই অস্থিরতা চলছিল দেশটিতে। শ্বেতাঙ্গ-কৃষ্ণাঙ্গ বিভেদের কারণে সংঘাতও ছিল নিয়মিত ঘটনা। কৃষ্ণাঙ্গ মা ও শ্বেতাঙ্গ বাবার কারণে ছোটবেলা থেকেই সাদা-কালো দ্বন্দ্বে ভুগতেন তিনি।

অবহেলিত মানুষের অধিকার নিয়ে গান গাওয়ায় তাদের প্রিয় মানুষে পরিণত হয়েছিলেন মার্লে। নিজের গানে নানা ক্ষোভ ও সমস্যার কথা বলে মন জয় করেছিলেন তরুণদের। মার্লে ও তার ব্যান্ড ওয়েলার্স ১৯৭৪ সালে ‘বার্নিন’ নামে যে অ্যালবামটি নিয়ে আসে তাতে ছিল বিখ্যাত গান ‘গেট আপ অ্যান্ড স্ট্যান্ড আপ’। ষাট ও সত্তরের দশকে দেশে দেশে উত্তাল জাতীয়তাবাদী ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী আন্দোলনে বিদ্রোহী মানুষের বুকে সাহস জুগিয়েছে এ গান।

ফুসফুস ও মস্তিষ্কের ক্যান্সারের কারণে তার শিল্পীজীবন মাত্র ১৮ বছরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। ১৯৮১ সালের ১১ মে তার মৃত্যু হয়।

মৃত্যু
১৯০৭: রেভারেন্ড কালীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, বাঙালি রাজনীতিবিদ, ইন্ডিয়ান লিগের প্রতিষ্ঠাতা ও ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।
১৯৩১: ভারতীয় আইনজীবী, বিপ্লবী ও ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের অন্যতম রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মতিলাল নেহেরুর প্রয়াণ দিবস।
১৯৩৭: সাতকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায়, ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণকারী বাঙালি বিপ্লবী।
১৯৪৬: স্যার উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারী, বাঙালি বিজ্ঞানী। (জ.১৮৭৩)
১৯৪৭: নলিনীকান্ত ভট্টশালী, বাঙালি মুদ্রাতত্ত্ববিদ, প্রত্নলিপিবিশারদ ও ঢাকা জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা।
১৯৬৪: রাজকুমারী বিবিজী অমৃত কাউর, ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী ও রাজনীতিক।
১৯৭৬: ঋত্বিক ঘটক, ভারতীয় বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক।

ঋত্বিক কুমার ঘটক বিংশ শতাব্দীর খ্যাতিমান বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক। ১৯২৫ সালের ৪ নভেম্বর তিনি পূর্ববঙ্গের বর্তমান বাংলাদেশের রাজশাহী শহরের মিয়াঁপাড়ায় জন্ম নেন।

পরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় রাজশাহী শহরে ফিরে যান তিনি। রাজশাহী শহরের পৈতৃক বাড়িতে শৈশব, কৈশোর ও তারুণ্যের একটি অংশ কাটিয়েছেন। এ বাড়িতে কিছু সময় বসবাস করেছেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবীও। ঋত্বিক ঘটক রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল ও রাজশাহী কলেজে পড়েছেন। তিনি রাজশাহী কলেজ এবং মিয়াঁপাড়ার সাধারণ গ্রন্থাগার মাঠে কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে নাট্যচর্চা করেছেন। ‌‌‌‌‌

১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষ এবং ১৯৪৭ সালের ভারত বিভাগের পরে পূর্ববঙ্গের প্রচুর লোক কলকাতায় আশ্রয় নেয় এবং এরই ধারাবাহিকতায় তার পরিবার কলকাতায় চলে যায়। শরণার্থীদের অস্তিত্বের সংকট তাকে গভীরভাবে আলোড়িত করে এবং পরবর্তী জীবনে তার চলচ্চিত্রে এর স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়।

বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে ঋত্বিক ঘটকের নাম বহুল উচ্চারিত। তার সবচেয়ে বিখ্যাত চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে মেঘে ঢাকা তারা (১৯৬০), কোমল গান্ধার (১৯৬১) এবং সুবর্ণরেখা (১৯৬২) অন্যতম; এ তিনটি চলচ্চিত্রকে ট্রিলজি বা ত্রয়ী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, যার মাধ্যমে কলকাতার তৎকালীন অবস্থা এবং উদ্বাস্তু জীবনের রূঢ় বাস্তবতা চিত্রিত হয়েছে। হিন্দু বাঙালি শরণার্থীর দুর্দশার কথা বলা হয়েছে। তার অন্যতম আরেকটি চলচ্চিত্র হলো ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ (১৯৭৩)।

১৯৭৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় মারা যান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ০০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০২১
এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।