ঢাকা: এক বর্ণিল সন্ধ্যা। সে সন্ধ্যায় সঙ্গীত, নৃত্য ও আবৃত্তিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আন্দোলন-সংগ্রাম, ত্যাগ-তিতিক্ষাকে তুলে ধরলেন শিল্পীরা।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের অংশ হিসেবে শুক্রবার (৫ মার্চ) সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে নান্দনিক এই আসরের আয়োজন করে সাংস্কৃতিক সংগঠন বহ্নিশিখা।
পরিবেশনার প্রতিটি পরতে পরতে ছিল বঙ্গবন্ধুর জীবনের নানান অধ্যায়ের বর্ণনা। সুর আর ছন্দমিশ্রিত শৈল্পিকতায় বসন্তের সন্ধ্যায় অনন্য হয়ে ওঠে জাতির পিতার অসামান্য সব কীর্তি।
বঙ্গবন্ধুর জন্ম, কৈশরের চপলতা ও সাহসী ভূমিকা, কলকাতায় এসে প্রত্যক্ষ ছাত্ররাজনীতিতে যোগদান ও বৃটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও দুর্ভিক্ষে মানবিক ভূমিকা পালন, আটচল্লিশ ও বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, চুয়ান্নর যুক্তফ্রন্ট ও ছেষট্টির ছয় দফা, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা ও ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন, ৭ই মার্চের ভাষণ ও ২৬ মার্চের স্বাধীনতা ঘোষণা, মুজিবনগর সরকার গঠন, ১০মার্চ বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তোলার সংগ্রাম, পঁচাত্তরের মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডসহ ১৬ পর্বে বিভক্ত এই গীতিনৃত্যালেখ্যটি রচনা করেছেন গোলাম কুদ্দুছ। এর সঙ্গীত, নৃত্য, আবৃত্তি ও কোরিওগ্রাফিতে অংশ নেন প্রায় ৫০ জন শিল্পী।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ওই মহামানব আসে’, গানটির সঙ্গে নৃত্যের অপূর্ব মিশেলের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আসরের উদ্বোধন। সংগঠনের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছের সভাপতিত্বে আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।
আয়োজনে রবিঠাকুরের ‘এদিন আজই কোন ঘরে গো’, কাজী নজরুল ইসলামের ‘দূর্গম গিরি কান্তার মরু দুস্তর পারাবার হে’, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ‘বঙ্গ আমার জননী আমার’, রজনীকান্ত সেনের ‘মায়ের দেয়া মোটা কাপড় মাথায় তুলে নে রে ভাই’, লোককবি পীতাম্বর দাসের (মতান্তরে মুকুন্দ দাস) ‘একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি’, আবদুল লতিফের ‘ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়’-সহ বিভিন্ন সঙ্গীতের মাধ্যমে বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়।
আবিদা রহমান সেতুর নির্দেশনায় এই গীতিনৃত্যালেখ্যের নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন সাহিদা রহমান সুরভী, আলোক পরিকল্পনায় দেবপ্রসাদ দেবনাথ ও জুনায়েদ ইউসুফ। প্রযোজনাটির আর্থিক সহযোগিতা করেছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০২১
এইচএমএস/ইউবি