ইট ভাঙায় ব্যস্ত নারী। ছবি: ডিএইচ বাদল
ঢাকা: কয়েকদিন ধরে দেশের তাপমাত্রা ভয়াবহতা রূপ নিয়েছে। বইছে তাপ প্রবাহ।
মানুষসহ জীবজন্তু সবাই যে হাঁসফাঁস করছে। শরীরের ঘাম যেন শুকায় না। এরই মধ্যে থেমে নেই শ্রমিকদের কাজ। রাজধানীর গাবতলী, আমিন বাজার, ফতুল্লাসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় এই প্রচণ্ড রোদের গরমে পুড়ে শ্রমিকরা যার যার কাজে ব্যস্ত। আমিনবাজারে সকাল থেকেই শুরু হয় শ্রমিকদের হৈ-চৈ। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা কয়েকটি কয়লার জাহাজ থেকে দলবেঁধে কয়লা খালাস করছে শত শত শ্রমিকরা। প্রচণ্ড গরমকে উপেক্ষা করে ছোট সন্তানকে সঙ্গে নিয়েই সকাল থেকে ইট ভাঙার কাজ করছেন কয়েকজন নারীরা। তাদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানালেন, সারাদিনে যা পাই তা দিয়ে সংসার চলে না। একেবেলা তো খাওয়া যায়? কষ্ট হউক তবুও বাসাবাড়ি, গার্মেন্টস কাজের চেয়ে ভালো আছি। উত্তপ্ত রোদের কড়া তাপ। তার মধ্যে চলছে ভারী হাতুড়ি ও গ্যাসের আগুনের তাপে লোহা জাতীয় জিনিস কাটার কাজ। এ যেন মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা। লোহা কাটার শ্রমিক আলামগীর বলেন, এখন করোনা ও লকডাউন কোথাও কোনো কাজ পাই না। সামনে ঈদ, পরিবার-পরিজনকে কিছু কিনে দিতে না পারলেও খেয়ে পড়ে তো বাঁচতে হবে। তাই বাধ্য হয়ে এই প্রচণ্ড গরমে আগুনের কাজ করতে হচ্ছে। ফতুল্লা এলাকার ইট উঠা-নামানোর শ্রমিক সোহেল। তিনি প্রায় পাঁচ বছর ধরে জাহাজ থেকে ইট উঠা-নামানোর কাজ করছেন। তিনি বলেন, কাজ করতে কষ্ট হয় না। কিন্তু কাজ করার পর যখন প্রাপ্য পাওনা দিতে মহাজনরা গড়িমসি করে তখন বুকটা ফেটে যায়। কারণ রোদে, বৃষ্টিতে সবাই যখন একটু ছায়া খোঁজে তখন আমাদের ঠিক মাল খালাস করতে হয়। এই টাকা তো শুধু আমরা যারা কাজ করি তারা খাই পড়ি না। আমাদের সবারই পরিবার আছে। তাদের দিতে হয়। তারা খেয়ে পড়ে বাঁচে। আমরা গরিব মানুষ। আমাদের কোনো স্বপ্ন নাই। আমরা দিন আনি, দিন খাই। সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে যখন কয়েকটা টাকা হাতে পাই তখন সব কষ্ট ভুলে যাই। তাই সব মহাজনদের উচিত বেশি না হউক আমাদের প্রাপ্য টাকা দিলেই আমরা খুশি।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৫ ঘণ্টা, মে ০১, ২০২১
এএটি
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।