ঢাকা: প্রতিদিন কতো ফুলের সঙ্গেই তো আমাদের দেখা হয়। তাদের কোনোটি আমাদের কাছে বেশ পরিচিত, আবার কোনোটি অপরিচিত।
আবার কিছু আছে বুনো ফুল, যেগুলো বনে-জঙ্গলে দেখতে পাওয়া যায়। বুনো ফুলের মধ্যে কিছু কিছু ফুল থাকে যেগুলো নজর কেড়ে নেয়। তেমনি এক বুনো ফুলের নাম ‘রুয়েলিয়া। ’ যাকে অনেকে ‘পটপটি ফুল’ বলে থাকেন।
অনেক এলাকায় এটি জংলী ফুল হিসেবেই বেশি পরিচিত। তবে এর সৌন্দর্য মুগ্ধ করে ফুলপ্রেমীদের।
বর্ষজীবী রুয়েলিয়া ফুলের রঙ হালকা বেগুনি। দেখতে অনেকটা কলমি ফুলের মতো। অনেকে এটিকে ধুতরা ফুলের সঙ্গে মিলিয়ে ফেলেন। এর পাপড়ির ওপরের অংশ পাঁচ ভাগে বিভক্ত। গুল্মের শিকড় বেশ মোটা ও শক্ত।
বেগুনি রঙের এ ফুল যে কারো মন নাড়িয়ে দিতে সক্ষম। অনেকে শখ করে বাড়ির ছাদে টবে রুয়েলিয়া গাছ লাগিয়ে থাকেন।
সম্প্রতি এ ফুলের দেখা মিলেছে রাজধানীর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে। বর্ধমান হাউজ এবং নজরুল মঞ্চের সামনে নিজস্ব বসতি গড়ে সে সৌন্দর্য বিলাচ্ছে আপন মনে।
ফুলটি নিয়ে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে কথা হয় লেখক নিসর্গবিদ মোকাররম হোসেনের সঙ্গে।
তিনি জানান, রুয়েলিয়া বা পটপটি মূলত এক ধরনের জংলি ফুল। এরা দলবেঁধে থাকতে পছন্দ করে। তাই যেখানে এ ফুল গাছ জন্মে সেখানে একসঙ্গে অনেক গাছ দেখা যায়। তবে, জংলি ফুল হলেও এর সৌন্দর্য মুগ্ধ করে ফুলপ্রেমীদের।
যারা একটু ছাদ বাগান পছন্দ করেন, তারা রুয়েলিয়াকে না ভালোবেসে পারবেন না। বারান্দায় রোদ আসে যে কোণে, সেখানে তো একটা টবে রুয়েলিয়ার স্থান হতেই পারে। তাও একেবারে নিশ্চিন্তে। আর এর ছোট ছোট ঝোঁপ হয়ে আসা গাছে রোদ লাগলে ফুল আসে বেশি। সারাদিন ফুটে থাকলেও দিনের আলো নিভে যাওয়ার আগ থেকেই নিজেদের গুটিয়ে নেয় রুয়েলিয়া।
ফুলটি সম্পর্কে বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা যায়, এটি খুব বান্ধব প্রকৃতির একটি ফুল। এর একটা গাছ বুনে দিলেই নিজের মতো করে মাটিতে স্থান করে নেয়। খুব সহজে ফুল ফোটে এ গাছে। জায়গাও লাগে অনেক কম। অনেকে লনের বর্ডার হিসেবেও ব্যবহার করেন এ ফুল।
রুয়েলিয়ার সবচেয়ে বড় গুণ হলো এ ফুলের জন্য যত্ন যেমন কম লাগে, তেমনি তা দ্রুত ছড়ায় এবং ফুল ফোটে বেশি।
আগাছার চেয়েও দ্রুত ছড়ানো এই গাছ ফুলপ্রেমী অনেকেরই ভীষণ পছন্দের। ফুলের উজ্জ্বল রঙ আর সৌন্দর্য শুধু আঙিনার বাগানকে সুন্দর করে তোলে না, রাস্তার ধারে শত শত ফুটন্ত রুয়েলিয়া পথেরও সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয়। তখন মনে হয় এ যেন এক প্রাকৃতিক ফুলের বাগিচা।
বাংলাদেশ সময়: ১০০৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০২১
এইচএমএস/এএটি