ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

পাহাড়ি ঢলে সন্তুষ্টির প্রাপ্তিস্বল্পতা!

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৬, ২০২২
পাহাড়ি ঢলে সন্তুষ্টির প্রাপ্তিস্বল্পতা! পাহাড়ি ঢলের মাঝে মাছ ধরছেন এক গ্রামীণ নারী। ছবি: বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন

মৌলভীবাজার: রাত থেকেই নামছে বৃষ্টি। সবাই তখন ঘুমের গভীরে।

সকাল হতেই বৃষ্টির পরশ মাটির সজল অংশটুকু ছুঁয়ে বৃষ্টি তার প্রমাণ হিসেবে উপস্থিত। রাতের মুষলধারের এই বৃষ্টি সকালটিকে দান করেছে দারুণ সজীবতা।

মাটির রাস্তায় কাঁদা নেই তিলপরিমাণ। ঝুমবৃষ্টির বেগ সমস্ত কাঁদামাটিগুলোকে ধুয়ে-মুছে সড়কটিকে করে রেখেছে ঝরঝরা। ঝুমবৃষ্টির এটাই দারুণ সুবিধে। তবে টিপটিপ বৃষ্টি বা মৃদু বৃষ্টি সড়কে বাড়ায় চরম দুর্ভোগ। আজ সেই দুর্ভোগের ভাগ নেই লেশমাত্র। আছে সতেজতা।  

শনিবার (৬ আগস্ট) মৌলভীবাজার জেলার একমাত্র আবহাওয়া অফিস শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে, মোটেই কম বৃষ্টিপাত হয়নি শুক্রবার দিবাগত রাতে। চার/পাঁচ ঘণ্টার বৃষ্টিতে এসেছে হঠাৎ পাহাড়ি ঢল। শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণকেন্দ্রের আবহাওয়া সহকারী মুজিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘শুক্রবার দিনগত রাত সোয়া ১টা থেকে শুরু হয়ে শনিবার সকাল ৭টা পর্যন্ত চলেছে এই বৃষ্টি। আমাদের দৈনিক মনিটরে (পর্যবেক্ষণ) এই বৃষ্টিপাতের সংখ্যা ধরা পড়েছে ১০০ দশমিক ৬ মিলিমিটার। আর যদি ইঞ্চির হিসেব ধরেন, তবে ৪ ইঞ্চি প্রায়। ’ 

কিন্তু তার থেকে বড় কথা- এই পাহাড়ি ঢল কারো কারো কাছে আশীর্বাদ। উপকারী কিছু প্রাপ্তির প্রাকৃতিক আয়োজন। পাহাড়ি ঢলে এসেছে দেশি মাছ প্রাপ্তির স্বল্প সন্তুষ্টিটুকু।
 
গ্রামীণ এক বয়োবৃদ্ধা নারী সকালেই বেরিয়ে পড়েছেন মাছ শিকার করে দৈনিক খাবারের চাহিদাটুকু পূরণস্বপ্নে। হাতে তার ‘টানাজাল’। এই জালটিকে কোনো কোনো অঞ্চলে আবার ‘ঠেলাজাল’ বলে। ত্রিভুজ বাঁশের কাঠামোতে বাঁধা এই বিশেষ ধরনের জালটি আবহমান বাংলার প্রাচীন একটি জাল। এই টানাজাল ঠেলে ঠেলে বিল, হাওর ও অতি বর্ষায় প্লাবিতভূমিতে সহজেই মাছ ধরা যায়।  হঠাৎ পাহাড়ি ঢলের পানির মাছ আহরণ করে নিজ ঘরের মাছের অভাব পূরণে মৎস্যজীবী পুরুষের পাশাপাশি গ্রামের নারীরাও সমান পারদর্শী। তাদের কেউ কেউ একাকীই বের হয়ে যান মাছ আহরণে।

মাছ ধরার সরঞ্জাম বা হাতিয়ার হিসেব মানুষহীন সকালেই এই বৃদ্ধাকে টানাজালটি ব্যবহারে দেখা যায়। নাম জিজ্ঞেস করতেই মুখে লাজুক হাসি। সেই সঙ্গে আপত্তির রেশ।  

তিনি জানান, ঘরে কিছু নাই বাজান। দেখি, একটু মাছ পাই কিনা? এই মনে কইরা আইছি। কিন্তু বহুক্ষণ হয়ে গেল এইটুকুই মাছ উঠছে জালে!   

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬, ২০২২
বিবিবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।