মৌলভীবাজার: বাংলার সর্বত্রই এই ফুলটিকে পাওয়া যায়। শহরের পরিত্যক্ত জায়গা থেকে গ্রামের পথে-প্রান্তরে।
তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো এই যে, বাংলাপ্রকৃতির চিরন্তন বাসিন্দা হলেও এ ফুলটি আজও অচেনা। আর অচেনা বলেই অবহেলিত, উপেক্ষিত। শরৎকাল এবং হেমন্তকালে বাংলার প্রান্তরে নীরবে ফুটে সে। প্রকৃতির সহজলভ্য অথচ অচেনা ফুল এটি। প্রকৃতিতে অযত্নে বেড়ে ওঠা অচেনা ফুল ‘কালকাসুন্দা’।
এই ফুলটির একটি নাম নানাভাবে অল্প অল্প করে পরিবর্তন হয়েছে। সেগুলো- ‘কলকাসুন্দা’, ‘কালকাসু্ন্দে’ এবং ‘কলকাসুন্দি’। শ্লেষ্মা, কফ, কাশি সারাতে ওষুধ হিসেবে কাজ করে থাকে বলে এই ফুলটির অপর নাম ‘কাশমর্দ’।
আপনি হয়তো শহর থেকে একটু দূরের পথ ধরে হেঁটে চলেছেন, সজাগ দৃষ্টির দ্বারা তখনই এই হলুদ রঙের ছোট্ট ফুলটিকে অনায়াসে দেখে ফেলতে পারেন। ফুলটি আকারে ছোট বলে সহজে আমাদের দৃষ্টি এড়িয়ে যায়। আপনার অনুসন্ধানী চোখ চালু থাকলে এই ফুলগুলো আপনাকে সহজে ফাঁকি দিতে পারে না।
‘চিরঞ্জীব বনৌষধি’ গ্রন্থ থেকে জানা যায়, এই গাছের পাতার শির এবং গাছটির ওপরের অংশ একটু বেগুনি রঙের হয় বলে একে ‘কালোকাসুন্দে’ বলে। প্রকৃতিতে এই গাছটির বিস্তার অযত্নে হয়ে থাকে। অনেকে এই গাছটিকে আগাছা হিসেবেই চিনেন। এটি ভেষজ গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Senna occidentalis Linn, এবং এটি Leguminosae পরিবারের অন্তর্গত। পূর্ণবয়স্ক কালকাসুন্দা প্রায় ৫-৭ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে।
আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাশান্ত্রে এ উদ্ভিদটি মানবদেহের জন্য উপকারী। নানা রোগের ভেষজ চিকিৎসায় এই উদ্ভিদটি বেশ কার্যকর। অরুচি, গলা ভাঙা, গলা ও বুক জ্বালায়, দাস্ত বা অমাসায়, কাশি, হাঁপানি এর গাছটির পাতা, ফুল অব্যর্থ পথ্য হিসেবে কাজ করে থাকে।
এই উদ্ভিদটি সর্দি-কাশির ‘যম’! এ কথাটির প্রতীকী অর্থ দাঁড়ায় সর্দি-কাশি যাকে সবচেয়ে বেশি ভয় পায়! ঠাণ্ডাজনিত এ রোগগুলো হলে এই উদ্ভিদের ওষুধ আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাশান্ত্রে কার্যকরী প্রমাণিত বলে জানা যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০২২
বিবিবি/এএটি