ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফুটবল

জিদানকে ‘অপমান’: পদত্যাগে বাধ্য হলেন ফ্রান্স ফুটবল প্রধান

স্পোর্টস ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২৩
জিদানকে ‘অপমান’: পদত্যাগে বাধ্য হলেন ফ্রান্স ফুটবল প্রধান

জিনেদিন জিদানকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে চাপের মুখে ক্ষমা চেয়েছিলেন ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশনের (এফএফএফ) প্রেসিডেন্ট নোয়েল লা গ্রেতকে। কিন্তু তাতেও কাজ হলো না।

শেষ পর্যন্ত দায়িত্ব থেকেই সরে দাঁড়াতে হলো তাকে।  

আজ প্যারিসে এফএফএফ-এর প্রধান কার্যালয়ে বোর্ডের নির্বাহী কমিটির বৈঠকে তাকে পদত্যাগ করতে বলা হয়। পরে এক বিবৃতিতে পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করে ফেডারেশন।  

তবে লা গ্রেতের এই 'অপসারণ' (দায়িত্ব ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে)। কারণ তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের তদন্ত করবে ফ্রান্সের ক্রীড়া মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত অডিট কমিশন। বোর্ডের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখার পর তার পদত্যাগের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে। এই মধ্যবর্তী সময়টায় লা গ্রেতের জায়গায় অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে থাকবেন বোর্ডের ভাইস-প্রেসিডেন্ট ফিলিপে দিয়ালোকে।  

বিষয়টির সূত্রপাত হয় দিদিয়ের দেশমের চুক্তি নবায়নকে ঘিরে। ২০২৬ সাল পর্যন্ত ফ্রান্সের কোচ থাকছেন তিনি। যদিও বিশ্বকাপের পর জিদানের কোচ হওয়ার গুঞ্জন ছিল অনেক বেশি। যদিও এখন ব্রাজিলের কোচ হওয়ার গুঞ্জন চলছে। এই বিষয়টি নিয়েই বিরূপ মন্তব্য করে বসেন লা গ্রেত।  

ফ্রান্সের আরএমসি রেডিওতে সাক্ষাৎকারে এ প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘আমার তাতে মাথাব্যথা নেই (জিদান ব্রাজিলের কোচ হলে)। তার যেখানে ইচ্ছা সে যেতে পারে। আমি খুব ভালো করেই জানি যে, জিদান সবসময়ই রাডারে ছিল (ফ্রান্সের সম্ভাব্য কোচ হিসেবে)। তার শুভাকাঙ্ক্ষীরও অভাব নেই। কেউ কেউ তো দেশমের বিদায়ের অপেক্ষায় ছিল… কিন্তু দেশমকে নিয়ে গুরুতর আপত্তি কার থাকতে পারে? কারও নয়। ’

‘জিদানের যা ইচ্ছা করতে পারে। আমি পরোয়া করি না। তার সঙ্গে আমার কখনও দেখা হয়নি। দেশমের দায়িত্ব ছিন্ন করার কথা আমরা কখনও ভাবিইনি। জিদান যেখানে ইচ্ছা যেতে পারে, কোনো ক্লাবে বা যে কোনো জায়গায়…। ’ জিদানের পক্ষ থেকে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল কি না, এই প্রশ্নে লু গ্রেত ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, ‘জিদান আমার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিল কি না? অবশ্যই নয়। চেষ্টা করলেও আমি তার ফোন ধরতাম না। ’

ফ্রান্সের ফুটবল ইতিহাসে জিনেদিন জিদানের নাম যে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে, এটা কারও অজানা নয়। দেশটিকে ১৯৯৮ বিশ্বকাপ ও ২০০০ ইউরো জয়ে বড় অবদান রেখেছিলেন তিনি। অথচ সেই জিদানকেই এভাবে অসম্মান করায় তোপের মুখে পড়েন ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি। দেশটির ক্রীড়ামন্ত্রী থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদ সবাই লা গ্রেতের সমালোচনা করেছেন।  

জিদানকে অপমান করায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান ফ্রান্সকে বিশ্বকাপ জেতানো তরুণ পিএসজি তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পে। কাতার বিশ্বকাপের গোল্ডেন বুটজয়ী বলেন, ‘জিদানই ফ্রান্স। তার মতো একজন কিংবদন্তিকে আমরা এভাবে অসম্মান করতে পারি না। ’ এমনকি বিবৃতি দিয়ে জিদানের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দেয় রিয়াল মাদ্রিদ।  

চারদিক থেকে এত সমালোচনার মুখে অবশেষে ক্ষমা চান লা গ্রেত। তিনি বলেন, ' ‘আমি মন্তব্যগুলোর জন্য ক্ষমা চাইছি। এতে আমার দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন ছিল না, কোচ ও খেলোয়াড় নিয়ে বিবেচনাও ছিল না। আমার আসলে আরএমসিকে সাক্ষাৎকার দেওয়া ভুল হয়েছে। ওরা দুই সেরা খেলোয়াড়ের মধ্যে বিতর্ক তৈরি করতে চেয়েছিল। ’

সূত্র- রয়টার্স

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২৩
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।