কিছুদিন আগে ব্রাজিলিয়ান ফুটবল কনফেডারশন (সিবিএফ)-এর প্রেসিডেন্ট পদ থেকে এদনালদো রদ্রিগেসকে অপসারণ করার নির্দেশ দেন রিও দি জেনেরিওর আদালত।
কিন্তু ফিফার আইন অনুযায়ী, এটা অ্যাসোসিয়েশনে বাইরের হস্তক্ষেপ।
গত ৭ ডিসেম্বর ব্রাজিলের স্টেট কোর্ট অফ জাস্টিস গত বছর অনুষ্ঠিত সিবিএফ নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে রদ্রিগেস এবং তার দ্বারা নিয়োগপ্রান্ত সকলকে বরখাস্ত করেন। তার স্থলে সিবিএফ-এর অন্তবর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে সুপ্রিম কোর্ট অব স্পোর্টর্সের বিচারপতি হোসে পারদিসকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে সিবিএফের নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য নির্বাচন সময় ও নীতিমালা ঘোষণা করার কথা পারদিসের। তবে এত তাড়াহুড়ো করে নির্বাচন করার ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছে ফিফা। ঐতিহাসিকভাবেই ফিফা সদস্য অ্যাসোসিয়েশনগুলোতে সরকার এবং তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়। ফিফা যদি ব্রাজিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে তাহলে, এমনকি পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলাও অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে।
ফিফার চিঠিতে স্বাক্ষর রয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবলের গভর্নিং বডি কনমেবলের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল মনসেরাত হিমেনেজ গার্সিয়ারও। সেই চিঠিতে বলা হয়েছে, আগামী ৮ জানুয়ারি পুরো বিষয়টি নিয়ে তারা একটি যৌথ কমিশন গঠন করবে। সেই কমিশনের কার্যক্রম শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত নির্বাচন কিংবা এধরনের কোনো সিদ্ধান্তের মাধযমে সিবিএফ-কে প্রভাবিত করা যাবে না।
চিঠিতে ফিফা আরও জানিয়েছে, যদি সতর্কবার্তাকে গুরুত্ব দেওয়া না হয়, তাহলে কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া ছাড়া কোনো থাকবে না। এর মধ্যে নিষিদ্ধ করার মতো ব্যাপারও থাকতে পারে। এমনকি ব্রাজিলের সদস্যপদও কেড়ে নিতে পারে ফিফা।
২০২১ সালে সিবিএফ-এর অন্তবর্তীকালীন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পান রদ্রিগেস। তিনিই ব্রাজিলের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ফুটবল প্রধান। এরপর ২০২২ সালে তিনি নির্বাচনের মাধ্যমে সিবিএফের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পান ২০২৬ সাল মেয়াদ পর্যন্ত।
২০২২ সালে পাবলিক প্রসিকিউটরের অফিসের সঙ্গে সিবিএফ-এর নির্বাচন সংক্রান্ত একটি চুক্তির কারণে পদ হারান ওই সময়ের একজন ভাইস-প্রেসিডেন্ট। তবে এরপর সিবিএফ প্রধানের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ আনেন তিনি। সেই অভিযোগের পেক্ষিতেই রুল জারি করেন আদালত। তবে রদ্রিগেস চাইলে সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন।
শুনানির পর আদালতের সিদ্ধান্ত হলো, পাবলিক প্রসিকিউটরের অফিস এবং সিবিএফের মধ্যকার চুক্তিটি বেআইনি। ফলে পদ হারান রদ্রিগেস। কিন্তু তাকে সরানোয় এবার ব্রাজিলের ফুটবল পড়ে গেল বিপদের মুখে। সম্প্রতি বাইরের হস্তক্ষেপের অভিযোগে ভারত, পাকিস্তান, রাশিয়া ও শ্রীলঙ্কার ফুটবল ফেডারেশনকে নিষিদ্ধ করে ফিফা। এর আগেও অনেক দেশকে একই রকম শাস্তি পেতে হয়েছে। ব্রাজিল কি সেই তালিকায় নতুন সংযোজন হতে যাচ্ছে?
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২৩
এমএইচএম