ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

ফুটবলের যত অজানা

কাঠমিস্ত্রি ক্লোসা, নষ্টের গোড়া মেয়েটাই!

অনুবাদ ও গ্রন্থনা: চন্দন চৌধুরী | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৮ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০১৪
কাঠমিস্ত্রি ক্লোসা, নষ্টের গোড়া মেয়েটাই!

লাল-হলুদকে লাল কার্ড
সবচে’ বেশি কার্ড পাওয়ার রেকর্ড কার দখলে শুনলে যে কারও চোখ দু’টি কপালে উঠতে পারে। ১৯৯৮ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ছয়টি লাল কার্ড পেয়েছেন ফরাসি ফুটবল গ্রেট জিনেদিন জিদান।

ছয়টি পেয়ে যুগ্মভাবে তার সঙ্গী হয়েছেন আরেক গ্রেট ব্রাজিলের কাফু। এ পর্যন্ত বিশ্বকাপে দু’বার লাল কার্ড পেয়েছেন দু’জন। সেখানেও রয়েছে জিদানের নাম, তার সঙ্গে আছেন ক্যামেরুনের রিগোবার্ট সং।

বিশ্বকাপে মাঠে খেলতে না নেমেও লাল কার্ড পাওয়ার রেকর্ড আছে। ২০০২ সালে সুইডেনের সঙ্গে খেলাটির সাইড বেঞ্চে বসেছিলেন আর্জেন্টিনার ক্লডিও ক্যানেজিয়া। তাকেই লাল কার্ড দেখান ম্যাচ রেফারি। আর তাই হয়ে গেল না খেলেও লাল কার্ড পাওয়ার রেকর্ড।

চিকন-মোটুদের ফুটবল
চিকন আর মোটাদের খেলা। বোঝাই যাচ্ছে হাসির খেলা ছাড়া আর কিছু হতেই পারে না। এ কাণ্ডটি ঘটেছিল জার্মানির মাগডেবুর্গে। মোটুদের ১১ জনের সর্বমোট ওজন ছিল ১.৩ টন। চিকনদের ওজন ছিল ৩৯-৫৬ কিলোগ্রামের মধ্যে। রেফারির কথা আর কী বলা যায়। তার উচ্চতা ছিল চার ফুট সাত ইঞ্চি। অন্যদিকে দুই লাইন্সম্যান মিলে ছিলেন তেরো ফুটেরও বেশি উচ্চতার!


গোল হয়নি তবু গোল
১৯৬৬ সালের ফাইনালে এই অদ্ভুত ঘটনাটি ঘটে। ইংল্যান্ড ও পশ্চিম জার্মানির মধ্যে এই খেলায় ছিল ৯৮ হাজার দর্শক। খেলার ১২ মিনিটে হেলমার্ট হেলারের গোলে এগিয়ে যায় জার্মানি। তবে ১৮ মিনিটেই সমতা আনেন জিওফ হার্স্ট। ৭৮ মিনিটে মার্টিন পিটার্সের গোলে ইংলিশরা উৎসব শুরু করলেও নির্ধারিত সময়ের মাত্র ১ মিনিট আগে জার্মানির ওলফ গ্যাং ওয়েবারের গোলে তা থেমে যায়। অতিরিক্ত সময়ের ৮ মিনিটে বক্সের মধ্য থেকে জোরালো শট নেন জিওফ হার্স্ট। বলটি ক্রসবারে লেগে গোল লাইনের দিকে আঁছড়ে পড়ে। আর সঙ্গে সঙ্গে সুইস রেফারি গোটফ্রিয়েড বাজিয়ে দেন গোলের বাঁশি। বল গোললাইন অতিক্রম করেনি, জার্মানদের এই আপত্তি তার কাছে ধোপে টেকেনি। গোল হয়নি, পরে নিশ্চিত হলেও জার্মানিদের ভাগ্যে আর কিছুই জুটলো না। গোল না হলেও বিশ্বকাপ ওঠে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের ঘরে।

লাইন ক্রস করে বহিষ্কার
বিশ্বকাপ ১৯৮৬। রেকর্ডে নাম উঠেছিলো প্যারাগুয়ের কোচ কেটানো রি’রও। তবে সেই রেকর্ডটা হয়তো ভুলেই যেতে চাইবেন তিনি। কেননা, তিনিই বিশ্বের প্রথম কোচ যিনি বারবার লাইন ক্রস করার জন্য মাঠ থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন!

৫৬ সেকেন্ডেই লাল কার্ড
খেলা শুরুর সবচে’ কম সময়ে লাল কার্ড পেয়ে রেকর্ড করেছেন উরুগুয়ের জোসে বাতিস্তা। ১৯৮৬ সালের স্কটল্যান্ডের সঙ্গে খেলায় মাত্র ৫৬ সেকেন্ডেই কপাল পোড়ে তার। খেলা শুরুর সবচে’ কম সময়ে হলুদ কার্ড পাওয়ার রেকর্ড ইতালির জিয়ামপেরিওর। পোল্যান্ডের সঙ্গে খেলার মাত্র ১ মিনিটের মধ্যেই এ ‘কীর্তি’ গড়েন তিনি।

সন্ন্যাসিনী গ্রেফতার
১৯৭৮ সালের বিশ্বকাপ চলাকালে জার্মানির ফ্রাঙ্কফুটে এক সন্ন্যাসিনীকে গ্রেফতার করা হয়েছিলো। এর কারণ ছিলো বিশ্বকাপ ফুটবল। পশ্চিম জার্মানির বিপক্ষে অস্ট্রিয়ার ৩-২ গোলের জয়ে এক লোক বেশ নাচানাচি করছিলো। ওটা সহ্য হয়নি সন্ন্যাসিনীর। গলা টিপে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন লোকটাকে। জার্মানির পুলিশ তাকে চালান করে দেয় কারাগারে।

পিকলস কুকুরের কাণ্ড
বিশ্বকাপ ফুটবল ১৯৬৬। ফাইনাল শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সূচিত হয় একটি কলঙ্কময় অধ্যায়। উধাও হয়ে যায় ‘জুলেরিমে’ কাপটি। সবকিছুতেই সমালোচনায় জর্জরিত হলো ইংল্যান্ড। শেষ পর্যন্ত পিকলস নামে একটি কুকুর সেই ‘জুলেরিমে’ কাপ ‘উদ্ধার’ করে নিয়ে আসে নরওয়ের একটি বাগান বাড়ি থেকে।
 
চীনে ছয়টি গোলপোস্ট
আড়াই হাজার বছর আগে চীনের যুদ্ধরত রাজ্য সমূহে ফুটবলের মতো খেলা ছিলো। হান রাজবংশে এই খেলা দু’টি দলের প্রতিযোগিতায় রূপান্তরিত হয়। প্রতি দল ছয়টি গোলপোস্ট রক্ষা করতো। থাং রাজবংশে প্রতি দলের গোলপোস্টের সংখ্যা কমে একটা হয়েছে।

নারিকেল দিয়ে খেলা
আগে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের আদিবাসীরা নারিকেল, কমলা দিয়ে বলের মতো খেলতো। উত্তর আমেরিকার রেড ইন্ডিয়ানদের মাঝে একটি খেলার প্রচলন ছিল, হাজার হাজার মানুষ একসঙ্গে সৈকতে এক মাইল দূরে বসানো দু’টি দ্বারের মধ্যে বল নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতেন।

ব্লেড নিয়ে খেলা!
১৯৯০ সালের বিশ্বকাপ। চিলি আর ব্রাজিলের মধ্যকার খেলায়, চিলির গোলরক্ষক রোজাস তার গ্লাভসের মধ্যে রাখা ব্লেড দিয়ে নিজেই আহত হন। এটা ধরা পড়ার পর চিলিকে ১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপ থেকে বাতিল করা হয়। আর রোজাস কে ১২ বছরের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।

চার্লস মিলার কে চেনেন!
ইংল্যান্ডে জন্ম নেওয়া ব্রাজিলিয়ান বংশোদ্ভূত এ কফি ব্যবসায়ীর হাত ধরেই ব্রাজিলে ফুটবলের শুরু। কফিও ব্রাজিলের সম্পদ। কফি ব্যবসা করতে এ তরুণ এসেছিলেন ইংল্যান্ডে। এসে কফি বেচলেন আর ফুটবল শিখলেন। ১৮৯৪ সালে কফি ব্যবসা গুটিয়ে তিনি যখন ব্রাজিলে ফিরলেন, তখন তাঁর সঙ্গে ফুটবলের নানা সরঞ্জাম। সেগুলো দিয়েই তিনি শুরু করলেন ফুটবল। সঙ্গী অবশ্যই সেখানকার ব্রিটিশ এবং ডাচরা। প্রথমে তাদের খেলাটা উৎসাহভরে দেখলো ব্রাজিলিয়ানরা, তারপর দেখে ভাবলো, এত সহজ একটা খেলা, আমরাও খেলি না কেন! খেলতে গিয়ে দেখা গেল কিছু না জেনেও তারা তাদের চেয়ে বেশি জানে। ইংলিশরা যখন বল কন্ট্রোলের জন্য কত কায়দা করে, তখন বল ওদের পায়ে যেন এমনিতেই আঠার মতো লেগে থাকে। তারা বলটা যে আরেকজনের কাছে দেয়, তার পেছনে একটা বুদ্ধির দীপ্তি থাকে। ব্যস, এভাবেই ব্রাজিলিয়ানরা ফুটবলকে নিজেদের করতে শুরু করলো।


কত মারামারি!
১৯৫৪ সালের বিশ্বকাপে ‘ব্যাটল অব বার্ন’ খ্যাত কোয়ার্টার ফাইনালে হাঙ্গেরির প্রতিপক্ষ ছিল ব্রাজিল। ম্যাচে হাঙ্গেরি যখন ৩-২-এ এগিয়ে, তখনই শুরু হয় মারামারি। রেফারি দু’জন ব্রাজিল ও একজন হাঙ্গেরির খেলোয়াড়কে মাঠ থেকে বহিষ্কার করেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেদিন মাঠে পুলিশ ডাকতে হয়েছিল। তবু একজন খেলোয়াড়কে মারতে আরেক খেলোয়াড় মাঠময় তাড়া করে ফেরেন। শুধু তা-ই নয়, ব্রাজিলিয়ানরা ম্যাচ শেষে ড্রেসিংরুমের আলো নিভিয়ে হাঙ্গেরি দলকে মারধরও করেছিলেন।

আজব গোলকিপার
জার্মানির এক গোলকিপার লুত্জ ফানেনস্তিয়েল। সিঙ্গাপুরের জেলে কাটিয়েছেন ১০১ দিন! মাঠের মধ্যে তিন তিনবার তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে! ফের বেঁচে উঠেছেন। ১৩টা দেশের ক্লাবে খেলেছেন তিনি! ক্লাবের সংখ্যা মাত্র ২৫! এবং তিনিই সারা পৃথিবীর একমাত্র পেশাদার ফুটবলার, যিনি ছয় মহাদেশেই পেশাদার ফুটবল লিগে খেলেছেন! না, এমন রংচংয়ে ক্যারিয়ার বিশ্বের কোনো ফুটবলারের নেই।

জার্সি নম্বর ১০
১৯৫৪ সালে ফিফা ইতিহাসের সর্বোচ্চ রেটিং নিয়ে শীর্ষে উঠেছিল হাঙ্গেরি। ৪২ জয় আর সাতটি ড্রয়ের পর যাদের একমাত্র পরাজয়টি এসেছিল ১৯৫৪ বিশ্বকাপ ফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে! কিন্তু কেউ কেউ হেরে গিয়েও জিতে যায়। পুসকাস যেমন জিতেছেন। স্কোর বলছে জার্মানি জিতেছিল, রেকর্ড বুকেও তা-ই লেখা। কিন্তু মাঠের খেলা আর ফুটবল নন্দনতত্ত্বে তাদের ছাপিয়ে যোজন যোজন এগিয়ে ছিল পুসকাসের হাঙ্গেরি, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই কারো। জয়টাও এখানেই। শুধু সেদিনের ফাইনাল নয়, তার আগে-পরে যা করেছেন পুসকাস, সবই এখনো স্মরণীয় হয়ে আছে ‘ভয়াল সুন্দর’ ফুটবলের বিজ্ঞাপন হিসেবে। সব সময়ই থাকবে। যেমন তার পরা ১০ নম্বর জার্সি। এখন সেরা খেলোয়াড়েরাই এই জার্সিটি গায়ে তোলে।


‘এ মেয়েটাই যত নষ্টের গোড়া’
‘রোল চব্বিশ আর কী লড়বে দুইয়ের সঙ্গে!’ এ নিয়ে টিপ্পনীও কেটেছেন অনেকে; কিন্তু সবাইকে অবাক করে গো হারা হারল দুই। ২০১০ বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ওয়ার্ল্ড ৠাংকিংয়ে ২৪ নম্বর দল সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে হেরেই বসল দুই নম্বর স্পেন। এর দায় গিয়ে চাপল বিশ্বের সেরা গোলকিপার ক্যাসিয়াসের ওপর! শুধু কি তাই, এখন ভাবতে হচ্ছে তাঁর বান্ধবী সারা কারবোনেরোকে নিয়ে। হাজারো স্পেন সমর্থকের মতে, ‘এ মেয়েটাই যত নষ্টের গোড়া। ’ আচ্ছা, কী এমন করেছেন সারা, অভিশাপের বিষবাষ্পে জর্জরিত করে তুলছে সবাই! উঠেপড়ে লেগেছেন এ মেয়েটার পেছনে! হারের দায় অধিনায়কের ওপরই বর্তাবে, এ আর নতুন কী! কিন্তু না, ঘটনার দায় চেপে বসল অধিনায়কের প্রেমিকার কাঁধেও।

স্পোর্টস চ্যানেল ‘টেলিসিনো’তে কাজ করেন স্পেনের সবচেয়ে সুন্দরী সাংবাদিক সারা। বছরখানেক ধরে ক্যাসিয়াসের সঙ্গে তাঁর মন দেওয়া-নেওয়া চলছে। এর মধ্যে অনলাইন স্পোর্টস ম্যাগাজিন এফএইচ.কম ম্যাগাজিনের জরিপে বিশ্বের সবচেয়ে আবেদনময়ী সাংবাদিক নির্বাচিত হয়েছেন সারা। ‘টেলিসিনো’র হয়ে এবারের বিশ্বকাপ কাভার করতে এসেছিলেন। ‘করবি তো কর! তাই বলে ক্যাসিয়াসের কাছাকাছি থেকে নিউজ কাভার করতে হবে!’ আর তাই তো স্পেন সমর্থকরা বলল, ‘এই ম্যাচে একটুও সুস্থির ছিলেন না ক্যাসিয়াস। আত্মবিশ্বাসের ছিটেফোঁটাও ছিল না তার মধ্যে। ’ তবে সারা কার্বোনেরোও জবাব দিয়েছেন, ‘আসলে মূর্খরা কত কিছুই বলে!’ ভাগ্যিস হন্ডুরাসের সঙ্গে স্পেনের দ্বিতীয় ম্যাচে স্বরূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন ডেভিড ভিয়া। নইলে হয়তো স্পেন সমর্থকদের শূলেই চড়তে হতো ক্যাসিয়াস-সারাকে।


কাঠমিস্ত্রি ক্লোসা
ছিলেন কাঠমিস্ত্রি, আর এখন বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতার রেকর্ডটি তাকে ডাকছে। জার্মানির স্ট্রাইকার মিরোস্লাভ ক্লোসা। মা-বাবা দু‘জনই পোলিশ। বাবা পোল্যান্ডের জাতীয় ফুটবল দলের হয়ে খেলেছেন। আর মা-ও ছিলেন খেলোয়াড়। ক্লোসার জন্মও পোল্যান্ডে। খেলোয়াড় মা-বাবার সন্তান খেলোয়াড় হবেন-এটাই ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু ভাগ্য তো কত কিছুই বদলে দেয়! একটু ভালোভাবে বেঁচে থাকতে ক্লোসার মা-বাবা পোল্যান্ড ছেড়ে প্রথমে ফ্রান্সে চলে যান।   সেখানে সুবিধা করতে না পেরে চলে যান জার্মানিতে। ক্লোসার নয় বছর বয়সে জার্মানিতে স্থায়ী নিবাস গড়েন তারা। নতুন দেশটিতে ক্লোসাকে করতে হয়েছে কাঠমিস্ত্রির কাজ। কাঠমিস্ত্রির জীবন সম্পর্কে বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই ফুটবল খেলতাম। ফুটবলের প্রাথমিক পর্বটা শেষ করার পর মনে হলো নিজের কাজের দিকেও একটু নজর দেওয়া দরকার। তখন আবার পুরনো কাজে মনোযোগ দিলাম। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ, হামবুর্গে থাকার কারণে ফুটবল থেকে আমার ভালোই আয় হতে শুরু করেছিল। নইলে ফুটবল ছেড়ে ফিরে যেতে হতো পুরনো পেশায়। ’

** ফুটবলের যত অজানা গল্প


বাংলাদেশ সময়: ২০২৬ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।