শেষ ভালো যার, সব ভালো তার। এই বিশ্বকাপে হল্যান্ড, ব্রাজিলের শেষ খেলা আজ।
মোটেও না। ওদের 'সব ভালো'টা শেষ হয়ে গেছে সেমিফাইনালেই। হেরে গিয়ে। ফাইনালে না গিয়ে। বিশ্বকাপ জিততে না পেরে।
ব্রাজিলের বিকেলে বাংলাদেশের গভীর রাতে দু'দল নামছে তৃতীয়স্থান নির্ধারণী খেলায়। না পাওয়ার বড় একটা দীর্ঘশ্বাস সঙ্গে নিয়ে। যে খেলার গুরুত্ব, আকর্ষণ ফাইনাল বা সেমিফাইনালের ধারে-কাছেও না। '
চ্যাম্পিয়ন, রানার্সআপ হই বা না হই, তৃতীয় আমাদের হতেই হবে'- এমন লক্ষ্য নিয়ে কি বিশ্বকাপ খেলতে আসে কেউ? দল দু'টি যদি হয় ব্রাজিল ও হল্যান্ড, ফুটবলে বিশ্বস্বীকৃত সকার জায়ান্ট - তাহলে তো প্রশ্নই ওঠে না ! তারা কেন আনন্দ পাবে তৃতীয় স্থানের জন্য লড়াই করে! ওরা তো আর ক্রোয়েশিয়া বা কোরিয়া না যে সেমিফাইনালে ওঠাটাই সর্বোচ্চ অর্জন হয়ে যাবে।
আর্জেন্টিনার কাছে হেরে হল্যান্ডের আফসোসটা একটু বেশিই। কারণ তারা মূল খেলায় হারেনি। হেরেছে টাইব্রেকারে। পেনাল্টি শুটআউটে হেরে যাওয়ার অর্থ তো খারাপ খেলে হেরে যাওয়া না।
অন্যদিকে, ব্রাজিলের বেলায় সেমিফাইনাল হারাটা যতোটা আফসোসের তারচে' অনেক বেশি লজ্জার। সেমিফাইনালের পর 'আরেকটু হলে আমরাও ফাইনালে যেতাম' এমন ভাবার সুযোগই নেই ব্রাজিলিয়ানদের। জার্মানির কাছে ৭ গোল খাওয়ার অবিশ্বাস্য ঘটনাটাই কুরে কুরে খাচ্ছে ব্রাজিল আর তার সমর্থকদের। হেরে যাওয়াটা না !
হল্যান্ডের হতাশার প্রেক্ষাপট ব্রাজিলের মতো না। ব্রাজিল যেখানে ৫ বার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন, হল্যান্ড সেখানে একবারও না। গতবারসহ ফাইনালে উঠেছে তারা ৩ বার। প্রতিবারই ঘরে ফিরেছে রানার্সআপ ট্রফি হাতে। এবার তাই আরেকটা সুযোগ এসেছিলো ফাইনালে গিয়ে কাপ জিতে বদনাম ঘোচাবার। শেষ পর্যন্ত সোনার হরিণ ধরা হলো না আরো একবার।
ব্রাজিলের দুঃখটা গুরুতর। স্বাগতিকতার ফায়দা লুটতে পারেনি তারা। নিজের মাটিতে, নিজের দর্শকের সামনে কাপ জয়ের সুবর্ণ সুযোগ তো হাতছাড়া হলোই, জঘন্যভাবে হারতেও হলো জার্মানির কাছে।
আজ রাতের খেলায় কে জিতবে কে হারবে তা কি খুব বেশি গবেষণার বিষয়? আসল ফাইনালের আগের দিন পরাজিতদের এই 'ফাইনালের' পরিসংখ্যান নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামাচ্ছেন না কেউ নিশ্চই। তবু এ দুই দলের মধ্যে হওয়া শেষ তিনটি খেলার ফলাফল স্মরণে আনা যেতে পারে। ২০১১ সালে গোলশূন্য ড্র ফ্রেন্ডলি ম্যাচে, ২০১০ বিশ্বকাপে হল্যান্ড ২ ব্রাজিল ১, ১৯৯৯ সালে ২-২ ড্র প্রীতি ম্যাচে।
ব্রাসিলিয়াতে আজকের খেলায় জিতলে হল্যান্ড অবশ্য 'জয় দিয়ে শেষ'- এই সান্ত্বনা নিয়ে দেশে ফিরতে পারবে। ব্রাজিল জিতলে সাময়িক হারানো গৌরব কিছুটা 'পুনরুদ্ধার' হবে। শোকগ্রস্ত জাতি আবার বিশ্বাস করতে শুরু করবে ' আমরাও পারি '।
তবুও ব্রাজিল-হল্যান্ডের এই ম্যাচটা হয়ে দাঁড়িয়েছে আমাদের আম-ছালা গল্পের মতো। আমরা একটা কথা প্রায়ই বলি না ... আমও গেল ছালাও গেল? দু'দলই আম হারিয়েছে সেমিফাইনালে হেরে গিয়ে। আজ হারলে ছালাও যাবে।
এই যুদ্ধে কে জিতবে আজ ... কমলা না হলুদ?
বাংলাদেশের আধুনিক স্পোর্টস সাংবাদিকতার পথিকৃৎ মনে করা হয় তাকে। বর্তমানে কানাডার মন্ট্রিয়লে থাকেন। তবে এখনও স্পোর্টস এবং লেখালেখি তার হ্রদস্পন্দনের সাথেই যেনো মিশে আছে। বিশ্বকাপ ফুটবলের এবারের আয়োজনে ফরহাদ টিটো লিখছেন বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য।
বাংলাদেশ সময়: ১০০২ ঘণ্টা, জুলই ১২, ২০১৪
** জিতলেও বিপদ !
** নেইমার নেই... ব্রাজিল তো আছে
** ক্রসবার , সাইডবার , গোলকিপার !
** ছন্দে ফিরেছে ব্রাজিল
** নাম তার নেইমার
** দুঃখিত, আবারও শিরোনাম 'মেসি'!
** মেসি'র গোল... আর্জেন্টিনার জয়?
** ছয় মিনিটের ঝড়ে মেক্সিকো শেষ!
** জয়টাই বড় কথা
** হারলেই সব শেষ !
** চাপে নেই আর্জেন্টিনা, তবে...
** নেইমার... নেইমার! ক্যামেরুন ছারখার
** আবারও শেষ মুহূর্তের গোল!
** মেসি-ই পারেন !
** আজ আর্জেন্টিনার জ্বলে ওঠার দিন
** ওচোয়া-বিদ্ধ ব্রাজিল !
** নিজের খোঁড়া কবরেই সমাধি বাংলাদেশের!
** আবার ব্রাজিল, আবারো বাংলাদেশ
** লিওনেল মেসি, ম্যান উইথ অ্যা প্ল্যান
** দিনে সাকিব রাতে মেসি
** দোস সান্তোসের দুঃসহ দিন
** নেইমার-ওস্কার শো
** বত্রিশের চক্করে বিশ্বকাপ
** বিশ্বকাপে বাংলানিউজে লিখছেন ফরহাদ টিটো