ঢাকা: সেমিফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে বিপর্যয়টা কাটিয়ে উঠতে পারছে না ব্রাজিল। তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচেও সেলেকাওদের রক্ষণভাগে বেসামাল অবস্থা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
মাত্র ৩ মিনিটের মাথায় উইঙ্গার অ্যারিয়েন রোবেনকে ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার থিয়াগো সিলভা ডি-বক্সের ভেতরে ফাউল করায় পেনাল্টি পায় নেদারল্যান্ডস, হলুদ কার্ড পান সিলভাও। সে পেনাল্টি থেকে রবিন ফন পার্সির গোলের পর ১৬ মিনিটের মাথায় ডি-বক্সের মাঝ থেকে দুর্দান্ত শটে দ্বিতীয় গোল আদায় করে নেন ডেলে ব্লাইন্ড। এর ফলে খেলার শুরুর দিকেই ২-০ গোলে এগিয়ে যায় ডাচরা।
এর মধ্যে ৯ মিনিটের মাথায় পলিনহোকে ফাউল করায় হলুদ কার্ড হজম করেন ডাচ উইঙ্গার রোবেন।
পিছিয়ে থাকার পর ২১ মিনিটের মাথায় আক্রমণে যায় ব্রাজিল। উইলিয়ানের বাড়িয়ে দেওয়া বল নিয়ে অনেক দূর পর্যন্ত দৌঁড়ে গিয়ে ডি-বক্সের বাইরে থেকে শট নেন অস্কার। তবে তার সে শট রুখে দেন নেদারল্যান্ডসের গোলরক্ষক সিলেসেন।
এরপর আবারও আক্রমণে যায় সেলেকাওরা ২৩ মিনিটেই লুইজ গুস্তাভোর বাড়িয়ে দেওয়া বল নিয়ে ডি-বক্স অতিক্রম করতে গেলে মাইকনকে ফিরিয়ে দেয় ডাচ রক্ষণভাগ।
২৯ মিনিটের মাথায় ডি-বক্সের বাম পাশ থেকে অস্কারের ফ্রি-কিকে ডেভিড লুইজের নেওয়া হেডও লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
একইসময়ে পাল্টা আক্রমণে গিয়ে রোবেনের বাড়িয়ে দেওয়া বল গুজম্যান সেলেকাওদের জালে জড়াতে চাইলেও তার ডি-বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শটটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
৩৬ মিনিটের মাথায় অস্কার বল নিয়ে ডি-বক্সের দিকে ঢুকে যেতে চাইলে তাকে অন্যায় পন্থায় বাধা দেন ডাচ ডিফেন্ডার গুজম্যান। এতে রেফারি তাকে হলুদ কার্ড দেখান।
এই ফাউল থেকে পাওয়া ফ্রি-কিকে মাইকনের বাড়িয়ে দেওয়া বলে ডি-বক্সের বাইরে থেকে ডেভিড লুইজ শট নিলেও তা আটকে দেয় নেদারল্যান্ডসের রক্ষণভাগ।
এরপর পাল্টা আক্রমণে গিয়ে ৪১ মিনিটের মাথায় ডি-বক্সের বাইরে থেকে ডাচ ফরোয়ার্ড ফন পার্সি দুর্দান্ত শট নিলে তা আকড়ে নেন জুলিও সিজার।
এরপর ফের ব্রাজিল পাল্টা আক্রমণে যায়। তবে ডি-বক্সের বাইরে থেকে অস্কারের নেওয়া দুর্দান্ত শট ফিরিয়ে দেয় ডাচ রক্ষণভাগ।
৪৪ মিনিটের মাথায় রন ভ্লারের ফাউলের সুবাদে ডি-বক্সের ডান কর্নারে পাওয়া ফ্রি-কিক থেকে শট নিলেও গোল আদায় করতে ব্যর্থ হন ম্যাক্সওয়েল।
ডাচদের ২ গোলের বিপরীতে পাল্টা আক্রমণে গিয়েও কোনো গোল না পাওয়ায় খালি হাতেই বিরতিতে যায় স্বাগতিক ব্রাজিল।
বিশ্বকাপের সেমিফাইনালিস্ট নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে মান বাঁচানোর লড়াইয়ে নেমেছে অপর সেমিফাইনালিস্ট স্বাগতিক ব্রাজিল। বাংলাদেশ সময় শনিবার রাত ২টায় ব্রাসিলিয়ার এস্তাদিও ন্যাসিওনাল স্টেডিয়ামে এ লড়াই শুরু হয়। সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে লড়েও টাইব্রেকারে বিদায় নেওয়া ডাচরাও তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নদের কোনো ছাড় দেবে না বলে মনে করা হচ্ছে।
আপাতঃদৃষ্টে টুর্নামেন্টে এ তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচের কোনো গুরুত্ব না থাকলেও ফুটবলের দেশ ব্রাজিলের লড়াই বলে নজর থাকছে অনেক বেশি। বিশেষত এই কারণে যে, সেমিফাইনালে জার্মানির সঙ্গে ৭-১ গোলে বিধ্বস্ত হয়ে বিশ্বকাপকে কেঁদে বিদায় দিয়েছে ব্রাজিল; জার্মানির সঙ্গে এমন হার কেবলই ‘অঘটন’ প্রমাণে ডাচদের বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়াতেই হবে স্বাগতিকদের। এ ম্যাচের ফলাফলও ‘অপ্রত্যাশিত’ কিছু হলে অনেক বেশি সমালোচনায় পুড়তে হবে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নদের।
আবার গতবারের রানারআপ নেদারল্যান্ডস সেমিফাইনালে এসে আর্জেন্টিনার সঙ্গে সমানতালে লড়ে টাইব্রেকার ভাগ্যে হত হয়ে বিদায় নিয়েছে। শিরোপা জিততে যে নিজেদের যথেষ্ট সামর্থ ছিল সেটা প্রমাণে এ ম্যাচে জিততেই চাইবে টোটাল ফুটবলের জনকরা।
বাংলাদেশ সময়: ০২৫১ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১৪