ঢাকা: উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের চলমান আসরে সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করলো স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদ। প্রথম লেগের ম্যাচে পিছিয়ে থেকে বিদায় নেওয়ার ভয়কে দূর করে উলফসবার্গের বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয় নিয়ে সেমিতে উঠলো বেল-বেনজেমা-রোনালদোদের রিয়াল।
ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ফিরতি লেগের ম্যাচে বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে একটায় মাঠে নামে রিয়াল মাদ্রিদ।
কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগের খেলায় ভকসওয়াগন অ্যারেনায় জার্মান জায়ান্ট উলফসবার্গের মাঠে ২-০ গোলে হেরে আসে রোনালদো বাহিনী। ফলে, ফিরতি লেগের ম্যাচটি ছিল রিয়ালের বাঁচা-মরার লড়াই। এ ম্যাচে জিনেদিন জিদানের শিষ্যদের ৩-০ গোলের ব্যবধানে জিতেই সেমির টিকিট নিশ্চিত করতে হতো।
শুরুর একাদশে ৪-৩-৩ ফরমেশনে রিয়ালের হয়ে মাঠে নামেন কেইলর নাভাস, কারভাজাল, পেপে, সার্জিও রামোস, মার্সেলো, লুকা মদ্রিচ, ক্যাসেমিরো, টনি ক্রুস, গ্যারেথ বেল, করিম বেনজেমা আর ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। অপরদিকে, ৪-২-৩-১ ফরমেশনে উলফসবার্গের হয়ে মাঠে নামেন দান্তে, নালদো, রদ্রিগুয়েজ, লুইস গুস্তাভো, হেনরিক, দ্রাক্সলার আর আন্দ্রে শুরলের মতো তারকারা।
ম্যাচের শুরু থেকেই লড়াই জমিয়ে তোলে দুই দল। প্রথমার্ধের ১৫তম মিনিটে প্রথম গোলের দেখা পায় স্বাগতিক রিয়াল। দলকে লিড পাইয়ে দেন রোনালদো। ডানদিক থেকে গড়িয়ে আসা বল উলফসবার্গের জালে জড়িয়ে দেন পর্তুগিজ তারকা।
পরের মিনিটে রোনালদোর হেড থেকে ব্যবধান দ্বিগুন করার সুযোগ আসলেও অতিথি ডিফেন্ডারের দক্ষতায় ১-০ গোলেই এগিয়ে থাকে রিয়াল। কর্নারের বিনিময়ে বেঁচে যায় উলফসবার্গ। তবে, পরের মিনিটেই (১৭ মিনিট) সেই কর্নার থেকে ব্যবধান দ্বিগুন করেন রোনালদো। টনি ক্রুসের তুলে মারা কর্নার কিক থেকে উড়ে আসা বলে হেড করেন সিআর সেভেন। আর তাতেই ২-০তে এগিয়ে যায় রিয়াল।
৩০ মিনিটের মাথায় বেনজেমার দূরপাল্লার জোরালো শট রুখে দেন উলফসবার্গের গোলরক্ষক বেনাগলিও। খেলার ৩২ মিনিটে পায়ে আঘাত পেয়ে মাঠ ত্যাগ করেন দ্রাক্সলার। তার বদলি হিসেবে মাঠে নামেন ম্যাক্স ক্রুস।
ম্যাচের ৩৪ মিনিটের মাথায় উলফসবার্গের আচমকা আক্রমণে রিয়াল শিবিরে কিছুটা ভীতির সঞ্চার হয়। ডি-বক্সের বেশ বাইরে থেকে জোরালো শট নেন লুইজ গুস্তাভো। রিয়ালের গোলরক্ষক নাভাস প্রস্তুত থাকায় সে যাত্রায় গোলবঞ্চিত হয় অতিথিরা। দুই মিনিট পরেই হেনরিকের আলতো স্পর্শে বল রিয়ালের জালের দিকে যেতে থাকলেও শেষ মুহূর্তে মার্সেলোর দৃঢ়তায় রক্ষা পায় রিয়াল।
প্রথমার্ধের বাকিটা সময় আর কোনো গোল না হলে ২-০ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় রিয়াল।
বিরতির পর উলফসবার্গকে আরও বেশি চেপে ধরে রিয়াল। রক্ষণভাগ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়া অতিথিরা কিছুটা নেমে এসে খেলতে থাকে। মাঝমাঠের খেলা গড়ায় উলফসবার্গের সীমানায়।
ম্যাচের ৬৭ মিনিটে ৩-০ গোলের ব্যবধান প্রায় করেই ফেলেছিল রিয়াল। টনি ক্রুসের আরেকটি কর্নার কিক থেকে রামোসের হেড উলফসবার্গের গোলপোস্টে লেগে গোললাইন বরাবর চলে যায়। সময়মতো অতিথি সুইস গোলরক্ষক বেনাগলিও বল নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন। ফলে, গোলবঞ্চিত হয় রিয়াল।
৬৯ মিনিটে আন্দ্রে শুরলে আর ৭০ মিনিটে গোলের সুযোগ নষ্ট করেন উলফসবার্গের দান্তে।
খেলার ৭৭তম মিনিটে ৩-০ গোলে এগিয়ে যায় রিয়াল। দলের তৃতীয় গোলটিও করেন রোনালদো। ফলে, কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচে গোলের অ্যাগ্রিগেটে এগিয়ে যায় লস ব্লাঙ্কসরা। উলফসবার্গের ডি-বক্সের বাইরে পাওয়া ফ্রি-কিক থেকে বাঁকানো শটে প্রতিপক্ষের জালে বল জড়ান রোনালদো।
ম্যাচের বাকি সময়ে ব্যবধান কমাতে পারেনি উলফসবার্গ। ফলে, প্রথম লেগে ২-০ গোলের অ্যাগ্রিগেটে এগিয়ে থাকলেও সেমির আগেই বিদায় নিতে হলো তাদের। অপরদিকে, ৩-০ গোলের ব্যবধানে জিতে আর ৩-২ অ্যাগ্রিগেটে এগিয়ে থেকে শেষ চার নিশ্চিত করলো জিনেদিন জিদানের শিষ্যরা।
বাংলাদেশ সময়: ০২৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৬
এমআর/