বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম থেকে: একটি দু’টি নয়। স্বাধীনতা কাপ ফুটবল সেমিফাইনালের মত হেভিওয়েট টুর্নামেন্টে শেখ জামালের জালে গুনে গুনে ছয়টি গোল জড়িয়ে রীতিমত গোল উৎসব পালন করেছে দেশের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব আবাহনী লিমিটেড।
এদিন সানডে সিজোবার চার গোল ও লি অ্যান্ড্রিও টাক’র জোড়া গোলে স্বাধীনতা কাপ ফুটবলের প্রথম সেমিফাইনালে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে ৬-০ গোলে বিধ্বস্ত করে প্রথম দল হিসেবে টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠলো আকশি-নীল জার্সিধারীরা।
এর আগে মঙ্গলবার (৩ এপ্রিল) বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে স্বাধীনতা কাপ সেমিফাইনালের কিক অফের শুরু থেকেই আক্রমণে যায় আবাহনী নিমিটেড। দলের আক্রমণ ভাগের খেলোয়াড়দের বেশ গোছালো এক একটি আক্রমণ কাঁপিয়ে তুলছিল প্রতিপক্ষ শেখ জামাল ধানমন্ডির রক্ষণভাগ।
তবে আবাহনীর ফিনিশিং দুর্বলতা ও আক্রমণভাগের বোঝপড়ার অভাবে প্রথমার্ধের খেলায় একবারের জন্যও বল জালে জড়ানো সম্ভব হয় নি। কম যায় নি প্রতিপক্ষ শেখ জামালও। প্রথমার্ধের খেলায়ই এগিয়ে যেতে একের পর এক আক্রমণ সাজিয়ে গেছে। কিন্তু তাদের অবস্থাও ওই আবাহনীর মতই ছিল। বিলাসী আর লক্ষ্যভেদী এক একটি শট গোলবারের বাইরে দিয়ে গেলে প্রথমার্ধে তারাও গোলবিঞ্চত থাকে।
তবে প্রথমার্ধে গোলবিঞ্চত থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধে ঠিকই জালের ঠিকানা খুঁজে পায় আকাশি-নীল জার্সীধারীরা। ৪৭ মিনিটে ডি বক্সে সারা কামারাকে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় আবাহনী আর সেই পেনাল্টি থেকে ইংলিশ ফরোয়ার্ড লি এন্ড্রিও টাক’র আত্মবিশ্বাসী শটে ১-০ তে লিড পায় আবাহনী।
এর ঠিক দুই মিনিট পর শেখ জামাল গোলবারের বাঁদিক দারুণ এক আক্রমণ রচনা করেন কামারা। মাঝমাঠ থেকে একাই বল নিয়ে শেখ জামাল ডি বক্সের ভেতর থেকে বলটি ক্রস তুলে দিলে দারুণ প্লেসিং শটে শেখ জামাল জালে জড়িয়ে নিজের দ্বিতীয় গোল তুলে নেন লি অ্যান্ড্রিউ টাক।
এখানেই থেমে থাকেনি আবাহনী। দ্বিতীয়ার্ধের ৬০ মিনিটে সম্পূর্ণ একক প্রচেষ্টায় শেখ জমাল গোলবারের বাঁ দিক দিয়ে দুরের পোষ্টে কোনাকুনি শটে নিজের প্রথম গোল করে ব্যবধান ৩-০ তে নিয়ে যান আবাহনীর নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড সনডে সিজোবা।
৬৪ মিনিটে আবার জ্বলে উঠেন সানডে। আর তাতেই ব্যবধান বেড়ে দাঁড়ায় ৪-০ তে। ৮৫ মিনিটে জুয়েলের ক্রসে সানডে মাথার জোড়ালো ছোঁয়ায় শেখ জামাল জালে বল জড়িয়ে দলকে নিয়ে যান ৫-০’র অধরা ব্যবধানে আর তুলে নেন টুর্নামন্টে নিজের প্রথম হ্যাট্ট্রিক।
এরপরের গোলটি আসে ৮৭ মিনিটে। এই গোলের নায়কও সেই সানডে। ডি বক্সের বাইরে থেকে দুরপাল্লার রংধনু শটে জামাল জালে বল ঠেলে দলকে এনে দেন ৬-০’র ব্যবধান।
আবাহনীর জন্য দিনটি যেমন গোল উৎসবের ছিল তেমনি জামালের জন্য ছিল শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখার। আবাহনীর এমন ক্ষুরধার পারফরম্যান্স দেখতে দেখতেই এক সময় খেলার নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে গেলে টুর্নামন্টে থেকে ৬-০’র বড় ব্যবধানে হারের লজ্জা নিয়ে মাঠ ছাড়ে শফিকুল হক মানিকের দল।
আর ফাইনালের আনন্দে ভাসে দ্রাগো মমিচ’র আবাহনী লিমিটেড।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৮ ঘণ্টা, ৩ মে, ২০১৬
এইচএল/এমএমএস