অনেক নাটকীয়তার পর রোববার (১ অক্টোবর) বার্সেলোনার ক্যাম্প ন্যুতে আয়োজিত স্বাগতিকদের সঙ্গে লাস পালমাসের খেলা শেষে পিকে এই কথা বলেন। গণভোটে বাধা দেওয়ার কারণে আগেই প্রধানমন্ত্রীর ওপর ক্ষোভ ঝেড়েছিলেন পিকে।
শেষ পর্যন্ত ম্যাচ মাঠে গড়ালেও গ্যালারি ছিল পুরো ফাঁকা। এই ফাঁকা মাঠে লাস পালমাসকে ৩-০ গোলে পরাজিত করে বার্সেলোনা। দু’টি গোল করেন বার্সার ‘আর্জেন্টাইন ঘরের ছেলে’ লিওনেল মেসি। আরেকটি করেন ‘কাতালান ছেলে’ সার্জিও বুসকেটস।
ম্যাচ শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে ক্ষোভ উগরে দেন পিকে। স্পেনের হয়ে ২০১০ বিশ্বকাপজয়ী এ ডিফেন্ডার বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম, তারা শান্তিপূর্ণ উপায়ে ভোটে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করবে। কিন্তু সবাই দেখেছে, বিষয়টাকে কতো নিম্নস্তরে নামিয়েছে তারা। ’
গণভোটে বাধা দেওয়ার বিষয়টিকে বাজে সিদ্ধান্ত বলে উল্লেখ করে পিকে বলেন, ‘এটা বিগত ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বাজে সিদ্ধান্তের একটি। তারা কাতালোনিয়া ও স্পেনকে আলাদা করে দিয়েছে এবং এর পরিণতি তাদের দেখতেই হবে। ’প্রধানমন্ত্রীকে তোপ দেগে বার্সেলোনার ‘হবু ক্লাব প্রেসিডেন্ট’ বলে পরিচিত পিকে বলেন, ‘এই সরকারের প্রধান সারাবিশ্ব ভ্রমণ করেন ইংরেজি না জেনেই। এই হচ্ছে তার পর্যায়। ’
নিজেকে কাতালান হিসেবে উল্লেখ করে পিকে বলেন, ‘আমি কাতালান জনগণকে নিয়ে গর্বিত, তাদের ব্যবহারের জন্য গর্বিত। এখানে কোনো আগ্রাসন ছিল না, কিন্তু পুলিশ এসে সেটাই করলো। ’
ক্ষমতাসীন দলের নেতৃত্বের সমালোচনা করে পিকে বলেন, ‘তারা স্প্যানিশদের এই বিশ্বাস করাচ্ছে যে, কাতালানরা খারাপ লোক, কিন্তু বিষয়টা তা নয়। আমরা শুধু ভোট দিতে চেয়েছি। ’
গণভোট ইস্যুতে স্পেন জাতীয় দলে নিজের অবস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জাতীয় দলে যাওয়া দেশপ্রেমের বিষয় নয়। দলে সর্বোচ্চটা দিতেই যাবেন আপনি। ’
‘যদি কোচ (জাতীয় দলের) বা ফেডারেশনের অন্য কেউ মনে করেন যে, আমি দলের সমস্যা। তবে আমি সরে দাঁড়াবো এবং ২০১৮ সালের আগেই জাতীয় দল থেকে অব্যাহতি নেবো। ’—বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন পিকে।
তিনি ছাড়াও গণভোট ইস্যুতে সোচ্চার আরেক কাতালান লিজেন্ড জাভি হার্নান্দেজও। ভোটে বাধা দেওয়ায় রোববারই তিনি বলেন, ‘একটি গণতান্ত্রিক দেশে মানুষ ভোট দিতে পারবে না, এটা অবিশ্বাস্য। সহিংসতার ঘটনা লজ্জাজনক। ’
কাতালান সংবাদমাধ্যম বলছে, রোববারের এই সহিংসতায় স্বাধীনতাকামীদের ৭৬১ জন আহত হয়েছে। পুলিশ অনেক ভোটকেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছে এবং ব্যালট বাক্স বাজেয়াপ্ত করেছে।
ভোট শেষে কাতালান প্রেসিডেন্ট কার্লেস পুগডেমন্ট বলেছেন, তারা স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের অধিকার জিতে গেছেন। যদিও স্প্যানিশ প্রধানমন্ত্রী রাজয় প্রথম থেকেই এই গণভোটকে প্রত্যাখ্যান করে আসছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২১ ঘণ্টা, অক্টোবর ০২, ২০১৭
এইচএ/
আরও পড়ুন
** ‘স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের অধিকার জিতে গেছে কাতালানরা’
** দর্শকশূন্য ক্যাম্প ন্যু, মেসি জাদুতে জিতলো বার্সা
** কাতালোনিয়ায় সংঘর্ষে আহত ৭৬১, ধর্মঘটের ডাক
** কাতালোনিয়ায় গণভোট নিয়ে সংঘর্ষে আহত তিন শতাধিক
** কাতালানদের স্বাধীনতার গণভোট রোববার, বার্সেলোনায় র্যালি