এভারটনের হয়ে ক্লাব ফুটবলে অভিষিক্ত হওয়ার পরের বছরই (২০০৩) সবচেয়ে কম বয়সে ইংল্যান্ড জাতীয় দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার গৌরব অর্জন করেন। জাতীয় দলের নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের অধিনায়কত্ব করেছেন রুনি।
২০০৪ সালে এভারটন ছেড়ে ইংলিশ ক্লাব জায়ান্ট ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে নাম লেখান। এভারটনের কলি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে গিয়ে ফুল হয়ে নিজেকে মেলে ধরেন রুনি।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে ২০০৭-২০১৩ সালের মধ্যে ৫টি প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জিতেছেন তারকা ফরোয়ার্ড রুনি। সেই সময়ে কিংবদন্তি ব্রিটিশ কোচ স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের অধীনে তার ক্যারিয়ারের সেরা সময় কাটিয়েছেন এই তারকা। এফএ কাপ, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, ক্লাব কাপ সম্ভাব্য সব শিরোপার স্বাদই পেয়েছেন তিনি।
২০১৭ সালে নিজের প্রথম ক্লাব এভারটনে ফিরে গেলেও সেখানে এক মৌসুমের বেশি থিতু হতে পারেননি। বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারের দল ডিসি ইউনাইটেডের হয়ে খেলছেন তিনি।
ক্যারিয়ারে অর্থকড়ি কিছু কামান নি রুনি। প্রায় অর্ধযুগ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে কাটানোর সময় তিনি লিওনলে মেসি আর ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পর সবচেয়ে বেশি বেতনভোগী ফুটবলার ছিলেন। বর্তমান ক্লাব ডিসি ইউনাইটেডের সবচেয়ে বেশি (প্রায় ৩ মিলিয়ন ডলার) বেতনভোগী খেলোয়াড় তিনি।
জাতীয় দলের হয়ে রুনির ক্যারিয়ার:
মাত্র ১৭ বছর বয়সে জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নেমে থিও ওয়ালকটকে ছাড়িয়ে ইংল্যান্ডের হয়ে সবচেয়ে কম বয়সে অভিষিক্ত হওয়া ফুটবলারের তকমা অর্জন করেন রুনি। ইংল্যান্ডের হয়ে সবচেয়ে কম বয়সে গোল করার রেকর্ডের মালিকও তিনি।
৫৩ গোল করে ইংল্যান্ডের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতার কৃতিত্বও নিজের করে নেন রুনি। জাতীয় দলের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার কৃতিত্বও আছে রুনির ঝুলিতে। সাবেক গোলরক্ষক পিটার শিল্টনের (১২৫) পরেই রুনির (১১৯ ম্যাচ) অবস্থান।
২০০৪ সালের ইউরোতে ৪ গোল করার পাশাপাশি ইউরোর ইতিহাসের সবচেয়ে কম বয়সী গোলদাতা হয়েছিলেন রুনি। এরপর ২০০৬, ২০১০ ও ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি। ইংল্যান্ডের চারবারের বর্ষসেরা ফুটবলার রুনি ২০১১ সালের ব্যালন ডি’অর পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়ে ভোটের হিসাবে পঞ্চম হন। ২০১১ সালের ফিফা বর্ষসেরা একাদশেও স্থান পেয়েছিলেন তিনি। এছাড়া আরও অসংখ্য অর্জন ও পুরস্কার আছে তার ঝুলিতে।
ক্লাব ক্যারিয়ার:
মাত্র ১৬ বছর ৩৬০ দিন বয়সে এভারটনের হয়ে আর্সেনালের বিপক্ষে গোল করে সবচেয়ে কম বয়সে প্রিমিয়ার লিগে গোল করার রেকর্ড গড়েন রুনি। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতাও রুনি। ৫৫৯ ম্যাচে ২৫৩ গোল করে আরেক ম্যানইউ কিংবদন্তি স্যার ববি চার্লটনকে ছাপিয়ে এই রেকর্ড গড়েন তিনি।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে ১৬টি ট্রফি জিতেছেন রুনি। এর মধ্যে ৫টি প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা, এফএ কাপ আর ২০০৮ সালের চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা জেতার স্বাদ পেয়েছেন তিনি।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে ১৮৩ গোল নিয়ে প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে একক ক্লাবের হয়ে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড তার দখলে। ২০০৪ সালের সেপ্টেম্বরে ফেনেরবাচের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেন রুনি। ১৮ বছর ৩৩৫ দিন বয়সের ওই কীর্তি তাকে চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সে হ্যাটট্রিক করার গৌরব এনে দেয়।
২০০৯/১০ মৌসুমের সেরা ফুটবলার নির্বাচিত হয়েছিলেন রুনি। এছাড়া প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে একমাত্র খেলয়াড় হিসেবে ১২টি ভিন্ন ভিন্ন মৌসুমে গোলের ডাবল ছুঁয়েছেন রুনি।
দুই দফায় এভারটনে খেলেছেন রুনি। প্রথমবার ৬৭ ম্যাচ খেলে ১৫ গোল আর শেষবার ৩১ ম্যাচে ১০ গোল করেছেন তিনি। আর বর্তমান ক্লাব ডিসি ইউনাইটেডের হয়ে এখন পর্যন্ত ১৯ ম্যাচ খেলে ১২ গোল করেছেন এই ইংলিশ তারকা।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৮
এমএইচএম