ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

ফুটবলে কাদা ছোঁড়াছুড়ি কারও জন্য মঙ্গলময় নয়: রুহুল আমিন 

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৪১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২০
ফুটবলে কাদা ছোঁড়াছুড়ি কারও জন্য মঙ্গলময় নয়: রুহুল আমিন  তরফদার মোহাম্মদ রুহুল আমিন

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি নির্বাচন নিয়ে চলছে নানা নাটক। দীর্ঘদিন ধরেই সভাপতি নির্বাচন করার কথা বলে আসছিলেন জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব তরফদার মোহাম্মদ রুহুল আমিন। তবে হঠাৎ করেই তিনি সভাপতি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন রুহুল আমিন। কেন তিনি হঠাৎ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন, বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দীনের সঙ্গে কোনো প্রকার দ্বন্দ্বে যাচ্ছেন নাকি সমঝোতায় বসতে যাচ্ছেন তা নিয়ে রুহুল আমিন একান্তে কথা বলেছেন বাংলানিউজের  সঙ্গে।

 

সভাপতি পদ থেকে সরে গেলেন। অন্য পদে নির্বাচন করবেন কি?

রুহুল আমিন: এটা নিয়ে ইতোমধ্যে আলোচনা চলছে। আমি যেটা বলেছি, আমাদের বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (বিডিডিএফএ) এবং বাংলাদেশ ফুটবল ক্লাবস্ অ্যাসোসিয়েশন তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে বসবে। তারা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে এবং তারা একটি শক্তিশালী প্যানেল তৈরি করবে।
 
সরে আসার পেছনে কোনো ওপর মহলের চাপ ছিল কি?

রুহুল আমিন: না, কোনো চাপ ছিল না। আমরা তো ফুটবলের স্বার্থে কাজ করছি। ফুটবলকে একটা ভালো জায়গায় রাখার জন্যই এই সিদ্ধান্ত। ফুটবলে যে কাদা ছোঁড়াছুড়ি হচ্ছে এটা কারও জন্য মঙ্গলময় নয়।

আপনি বলছেন, আলাদা প্যানেল করবেন। সালাউদ্দিন সাহেব বলছেন, আপনি তাকে সমর্থন দিয়েছেন। বিষয়টা কেমন হয়ে গেল না?

রুহুল আমিন: আমরা দুটো ক্লাবকে লিড করি। চট্টগ্রাম আবাহনী এবং সাইফ স্পোর্টিং। চট্টগ্রাম আবাহনী, সাইফ স্পোর্টিং ফুটবলের স্টেক হোল্ডার। ওনি তো সাপোর্ট দিচ্ছেন ক্লাব দুটিকে। নইলে আমরা প্রিমিয়ার লিগে খেলছি কিভাবে। মানে প্রশাসনিক সাপোর্ট যেটা থাকার দরকার সেটা তো থাকবেই। যেহেতু সভাপতি পদে আমি নির্বাচন করব না। এখন ওনার এখতিয়ার ওনি নির্বাচন করবেন কি করবেন না। ওনি কি করবেন তা ওনার ইস্যু। আমি নির্বাচন করব না।  

নির্বাচন করার যে কারও গণতান্ত্রিক অধিকার। আপনি নির্বাচন থেকে সরে যাচ্ছেন কেন? আর আপনারা প্যানেল যেহেতু করছেন, সেখানে সভাপতি পদে নির্বাচন করবেন না কেন? আপনি সভাপতি নির্বাচন করবেন না, তাই বলে অন্যরাও কি করবেন না?

রুহুল আমিন: নির্বাচন হচ্ছে গণতান্ত্রিক অধিকার এবং যে কেউ নির্বাচন করতেই পারে। আমরা বসে এই ব্যাপারে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেব। আপাতত আমি নির্বাচন করব না এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত। আমি আরও পরিস্কার করে বলছি, ফুটবলে একটা অস্থিরতা চলছে এবং নির্বাচনকে ঘিরেই এই অস্থিরতার সৃষ্টি। এখানে ব্যাপকভাবে বিভিন্ন রকম কথাবার্তা আসছে। সালাউদ্দিন সাহেব, যিনি নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন ওনার যে লোকজন আছে সেখান থেকেও ব্যাপক কথাবার্তা হচ্ছে; আমাদের লোকজন যে আছে সেখান থেকেও কথাবার্তা চলছে। ফুটবলের উন্নয়নের জন্য এটা ঠিক না। কারণ আমরা সবাই ফুটবলের উন্নয়ন চাই।

আপনি ক’দিন আগে সাংবাদিক সংগঠনগুলোতে (বিএসপিএ, বিএসজেএ) গিয়ে যে ফুটবলের সমস্যা আছে সেগুলো নিয়ে পয়েন্ট আউট করেছেন। আপনি এখন কেন সরে যেতে চাইছেন? আপনারা এই কমিটির দুর্নীতি নিয়েও কথা বলেছেন। আপনারা যেহেতু জানেন ওরা দক্ষ নয়, তাহলে সরে যাচ্ছেন কেন?

রুহুল আমিন: আবারও বলছি, এটা আমার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। এই অস্বস্তির মধ্যে আমার নির্বাচন করা সম্ভব নয়, সভাপতি পদে নির্বাচন করা ঠিক হবে না। ওখানে তো সভাপতি পদই সব না। সব মিলে ২১টা পদ আছে। ২১ পদের মধ্যে সভাপতি হল একটা পদ। সেকেন্ড ম্যান হলেন সিনিয়র সহ-সভাপতি। সহ-সভাপতি ৪ জন আছেন, মেম্বাররা আছেন। আমাদের জেলা ও বিভাগীয় সংগঠন বসে একটা সিদ্ধান্ত নেবে। কারণ আমাদেরও তো অনেক দক্ষ সংগঠক সারা বাংলাদেশে আছে। ঢাকা শহরের সব জায়গাতে আছে। দক্ষ সংগঠকরা এক জায়গায় বসে একটা সিদ্ধান্ত নেবে যে, কে কোন পজিশনে লড়বেন; সেই হিসাবে প্যানেল সাজানো হবে। তবে দিনশেষে কথা একটাই, আমরা সবাই ফুটবলের উন্নয়নের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছি এবং নির্বাচনের মাঠ যেটা বলা হয় সেই মাঠ ছেড়ে আমরা যাচ্ছি না।

আপনারা কি তাহলে সমঝোতার পথে হাঁটছেন?

(উত্তরটি রুহুল আমিনের পরিবর্তে দেন সিরাজউদ্দিন মো. আলমগীর)

সিরাজউদ্দিন মো. আলমগীর: না। সভাপতি পদে নির্বাচন করবেন না তরফদার সাহেব এটা ওনার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। । কিন্তু আরও অনেক পদ তো আছে। ওনার একার পক্ষে সিদ্ধান্ত দেওয়া তো সম্ভব না। আমরা জেলা ও বিভাগীয় এবং ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনে বসে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।  

চট্টগ্রামে একটা রাজনৈতিক পট-পরিবর্তন হয়েছে। আ জ ম নাছির সাহেবকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। ওটার সঙ্গে কি এটার কোনো সম্পর্ক আছে?

রুহুল আমিন: ক্রীড়ার সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। ওটা রাজনৈতিক ইস্যু, এটা ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। ওইটার সঙ্গে এটা কোনোই সম্পর্ক নেই।  

আ জ ম নাছির কিন্তু ক্রীড়াঙ্গনেরই লোক। তাকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে; এর আগে মুমিনুল হক সাঈদকেও সরিয়ে দেয়া হয়েছে। শোনা যাচ্ছে সভাপতি হিসেবে কাজী সালাউদ্দিন না-ও থাকতে পারেন। এ বিষয়ে আপনি কি বলবেন?

রুহুল আমিন: দেখেন, নির্বাচন সবার গণতান্ত্রিক অধিকার। এটা ফিফা-এএফসির নির্বাচন, তারা জড়িত। কোনো পক্ষেরই কারও ওপর কিছু চাপিয়ে দেওয়ার এখানে কিছু থাকে না। এটা একটা স্বাধীন সংস্থা। যে কেউ নির্বাচনে দাঁড়াতেই পারেন। কাজী সালাউদ্দিন সাহেব যেহেতু বলেছেন, তার মতো আরও অনেকেই আসতে পারেন। কাউকে তো বন্ধ করে রাখা যাবে না।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২০
ইউবি 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।