২৯ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে গত বছর অবশেষে কোপা আমেরিকা জয়ের স্বাদ পায় আর্জেন্টিনা। ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি ব্রাজিলকে তাদেরই মাটিতে হারিয়ে শিরোপা উঁচিয়ে ধরেন লিওনেল মেসিরা।
এর পেছনের মুল কারিগর কোচ লিওনেল স্কালোনি। তার হাত ধরেই দীর্ঘদিনের শিরোপা খরা কাটায় আর্জেন্টিনা। ২০১৮ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর বিধ্বস্ত দলটিকে একপ্রকার অপ্রতিরোধ্য বানিয়ে ফেলেন তিনি। কোপা আমেরিকা জয়ের পর আর্জেন্টিনার লোকেরা তাকে প্রেসিডেন্টের চেয়েও বড় ভাবতে শুরু করেন। তবে সেই লোকেদের এক বাক্যে থামিয়ে দেন স্কালোনি। নিজের সক্ষমতা ও সামর্থ্য সম্পর্কে তার জানা আছে।
তিনি বলেন, 'আপনি যদি নিজেকে নিজের চেয়ে বড় ভাবেন তাহলে আপনি সেখানেই শেষ। কেউ একজন আমাকে বলল, আপনি প্রেসিডেন্টের চেয়েও বড়। আমি বললাম না এটা ভুল, আমি কেবলই একজন ফুটবল কোচ। '
প্রত্যাশার অসম বোঝা নিয়ে বিশ্বকাপে এসেছেন স্কালোনি। তবে পা মাটিতেই রাখছেন তিনি, 'কোপা আমেরিকা জয়ের পর বিশ্বকাপ জিতে ফেলব এটা আমি বলব না। তবে হ্যাঁ, হারি বা জিতি আমরা একই পথে হাঁটব। হয়ত লোকে আমাকে পাগল বলবে। কিন্তু আমি স্বাভাবিকই আছি, আমার সঙ্গে যারা আছে আমরা সবাই এমন। '
স্কালোনি আরো যোগ করেন, 'আমরা তাদেরকে (সমর্থক) বলি যে তারা ফুটবলার, এর বেশি কিছু নয়। আমাদের কথা কারো চেয়ে বেশি যোগ্য নয়। জয় মানে এই না যে, আপনি যা ইচ্ছা তা-ই করবেন। আর্জেন্টিনায় নিজেকে নিজের চেয়ে বড় ভাবা বিপজ্জনক। আমি সেই বলয় ফেটে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছি না; শুধু বুঝাতে চেয়েছি ব্যাপারটা কেমন। '
বিশ্বকাপে একটা বাক্যই উচ্চবাচ্যে পরিণত হচ্ছে। এই আর্জেন্টিনাকে হারাবে কে? টানা সর্বোচ্চ ম্যাচ জয়ের রেকর্ডটি থেকে আর মাত্র এক ম্যাচ দূরে তারা। বিশ্বকাপে শিরোপার অন্যতম দাবিদার হলেও নিজেদের অজেয় দাবি করেছেন না স্কালোনি।
তিনি বলেন, 'আমরা অজেয় নই। রেকর্ড তৈরীই হয় ভাঙার জন্য। আমরা ভালো খেলছি, কোপা আমেরিকা জিতেছি। তবে টুর্নামেন্টটা (বিশ্বকাপ) আমাদের ভালোও যেতে পারে খারাপও হতে পারে। বিশ্বকাপ প্রতারণা করে, সেরা দল প্রায় সময়ই জিততে পারে না। আপনি কী চান সেটা জানাই এখানে গুরুত্বপূর্ণ। সেই পথেই চার বছর ধরে ভ্রমণ করছি আমরা । কাতারে আসার আগে শেষ ম্যাচের সঙ্গে প্রথম ম্যাচের তুলনা করেছিলাম আমরা, অনুভুতিটা সেই একই ছিল। '
বিশ্বকাপ বা অন্য কোনো ম্যাচ আর্জেন্টিনার হয়ে খেলার রোমাঞ্চটা একই থাকে বলে জানান স্কালোনি, 'যখন আপনি আর্জেন্টিনার হয়ে খেলবেন তখন সেই ক্ষোভ, স্নায়ু ও উত্তেজনা সবসময়ই থাকবে। বিশ্বকাপ হোক কিংবা গুয়াতেমালার সঙ্গে কোনো ম্যাচ, এর কোনো পরিবর্তন হয় না। '
বাংলাদেশ সময়: ১১২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০২২
এএইচএস