ঢাকা: একজন রোগী যখন হাসপাতালে আসেন, তিনি প্রথম নার্সদের সামনেই আসেন। স্বভাবতই নার্সের হাসিমুখ ও ভালো ব্যবহার আশা করেন রোগী।
আন্তর্জাতিক নার্সেস দিবস উপলক্ষে রোববার (১২ মে) ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ডা. এজিএম চৌধুরী অডিটরিয়ামে এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেছেন। ‘আমাদের নার্স আমাদের ভবিষ্যৎ: অর্থনৈতিক শক্তি, নার্সিং সেবার ভিত্তি’ শীর্ষক প্রতিপাদ্য নিয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি (বিএমএ) ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি (স্বাচিপ) ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ঢাকা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. দেবেশ চন্দ্র তালুকদার, ঢাকা মেডিকেল কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. আহম্মেদ হোসেন হারুন, বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল শাখার সভাপতি মো. কামাল হোসেন পাটোয়ারীসহ নার্সিং অফিসাররা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সেবা তত্ত্বাবধায়ক কারিমা খাতুন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সুপারভাইজর হারুন অর রশীদ দিপু।
ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, আজকের দিনটি নার্সদের জন্য আনন্দের ও গৌরবের। একটি হাসপাতালের জরুরি বিভাগ দিয়ে রোগী ভর্তি হয়ে নার্সদের সামনে আসে। এর মধ্যে ওই রোগীর সঙ্গে অনেকেই ভালোভাবে কথা বলেন, ভালো সেবা দেন। আবার অনেকেই দুর্ব্যবহার ও কর্কশ ভাষায় কথা বলেন। তবে এটা খুব কম। এই যেমন এক মণ দুধের মধ্যে এক ফোঁটা লেবুর রস।
তিনি বলেন, আমাদের নারী-পুরুষ নার্সদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তাহলে স্বাস্থ্যসেবার দিক দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর হাত আরও শক্তিশালী হবে। সামনে ঢাকা মেডিকেল পাঁচ হাজার শয্যায় উন্নীত হবে। তখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেড়ে যাবে। আপনারা সঠিকভাবে কাজ করলে রোগীরা ভালো সেবা পাবে।
ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে অনেক উন্নত করেছেন। তিনি নার্সবান্ধব। এখনো অনেক নার্স বেকার। তাদের সরকারি চাকরি দিয়ে চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতি করতে হবে। বিদেশে গিয়ে দেখেছি, সেখানে নার্সদের সেবা ও তাদের স্থান অনেক উঁচুতে। সেই স্থানে আমাদের নার্সদেরও যেতে হবে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে উন্নত করতে আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করবো। আপনাদের ন্যায্য দাবিগুলো অবশ্যই প্রধানমন্ত্রী শুনবেন।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, সবার জায়গা থেকে সব রোগীর সঙ্গে ভালোভাবে হাসি-খুশিতে কথা বলতে হবে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুই হাজার ৭০০ নার্স কাজ করেন। দুই-একজনের দোষ-ত্রুটি থাকবে। নিজেরা সংশোধন হয়ে যাবেন। (আধুনিক নার্সিং সেবার অগ্রদূত) ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের আদর্শকে ধারণ করে কাজ করলে আমার মনে হয় কোনো নেতিবাচক ধারণা থাকবে না। নার্সদের কোনো সমস্যা থাকলে আমরা সেটা সমাধানের চেষ্টা করবো।
ডা. দেবেশ চন্দ্র তালুকদার বলেন, নার্সরা একটি হাসপাতালে আয়না স্বরূপ। একটা রোগী যখন হাসপাতালে ভর্তি হয়, তখন সেই রোগী সর্বপ্রথম নার্সদের সামনে আসে। আপনাদের হাসিমুখ ও ভালো ব্যবহার তারা আশা করে। তবে অনেক সময় জানতে পারি, অনেকেই রোগীর সঙ্গে ভালো করে কথা বলেন না। মোবাইল ফোন নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকেন। মোবাইলটা খুব মারাত্মক ক্ষতি করছে। দুই-একজনের জন্য সবার বদনাম হয়। আমাদের এখান থেকে উঠে আসতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২৪
এজেডএস/এইচএ/