ঢাকা: মন্ত্রণালয়ের কাজ করে দেখছি, যেখানেই হাত দিচ্ছি, সেখানেই সমস্যা আর অনিয়ম— এমন মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) ঢাকার মিন্টু রোডের শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন হলে আয়োজিত ওষুধ শিল্প সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
নূরজাহান বেগম বলেন, আমাদের সব জায়গায় সিস্টেমে সমস্যা আছে। এই যে বিভিন্ন আইন আছে, সেই আইনের প্রয়োগ, আইন না মানা সেটা নিয়ে ফলোআপ করা হয় না। আইন নানান কারণে নাও মানা হতে পারে। যেমন জবাবদিহির অভাব, আবার অনেক ক্ষেত্রে জবাবদিহি থাকলেও সেটা নিয়ে কেউ চার্জ করে না। মন্ত্রণালয়ের কাজ করে দেখছি যেখানেই হাত দিচ্ছি, সেখানেই সমস্যা আর অনিয়ম। এই অবস্থা উত্তরণে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এজন্য প্রয়োজন সকলের সহযোগিতা।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, গ্রাম পর্যায়ে সাধারণ মানুষের সাথে কাজ করে আমার জীবনের ৪৫ বছর কেটেছে। আমার মনে হয় ওদের কষ্টটা আমি জানি, অনুভব করি। মাস দুয়েক আগে হোসেন জিল্লুর আমাদের এখানে একটা প্রেজেন্টেশন দিয়েছিলেন। তিনি বলেছেন ৮ থেকে ৯ শতাংশ মানুষ দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর হয়ে যাচ্ছে শুধু ওষুধ এবং চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে। কিন্তু সেখানেও তারা কোনো স্যাটিসফেকশন পাচ্ছে না।
উপদেষ্টা আরও বলেন, যদি ডাক্তার, মন্ত্রণালয়, যারা ওষুধ প্রস্তুতকারী, বিক্রেতা সবাই নিজেদের জায়গা থেকে আমরা একটু চেষ্টা করি তাহলে আমরা দেশের সাধারণ মানুষকে এ ব্যয়ভার থেকে কিছুটা হলেও স্বস্তি দিতে পারব। যেসব জায়গায় ফাঁকফোকর, অনিয়ম আছে সেগুলা শুধরে নিয়ে আমরা যদি চেষ্টা করি তাহলে আমরা সাধারণ মানুষের কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব করতে পারব।
তিনি বলেন, আন্দোলনে যে অসংখ্য মানুষ আর ১৯-২০ বছর বয়সী ছেলে চোখ, পা হারালো, তাদের ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আসুন আমরা একযোগে কাজ করি।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেন, আজকে মতবিনিময় সভায় আমরা রেগুলেটর, ম্যানুফ্যাকচারার এবং ডিসপেন্সারের সাথে বিস্তারিত কথা বলেছি। এ ছাড়া সামনে ডাক্তার এবং যারা ওষুধ ব্যবহার করেন তাদের সাথে আমাদের বসার পরিকল্পনা আছে। বাকি দুই গ্রুপের সাথে কথা বলে আমরা সবাই মিলে ওষুধ শিল্পের জন্য কমপ্রিহেনসিভ একটা প্ল্যান তৈরি করব।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. শামীম হায়দার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ, গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেডের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. মনজুর কাদির আহমেদ, রেডিয়েন্ট ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. নাসের শাহরিয়ার জাহেদী, এসিআই হেলথকেয়ার লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. মহিবুজ জামান, ডিজিডিএ পরিচালক আশরাফ হোসেন, বিসিডিএস পরিচালক মো. মিজানুর রহমান প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২৪
আরকেআর/এমজেএফ