ঢাকা: বাংলাদেশ এখন স্তন ক্যান্সারের উচ্চ মাত্রার ঝুঁকিতে রয়েছে। এখানে প্রতি ১০ জন নারীর ৮ জনই এমন ঝুঁকিতে রয়েছেন।
এ তথ্যটি উঠে এসেছে ফেডারেশন অব এশিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব রেডিয়েশন অনকোলজি'র (এফএআরও) এক গবেষণায়।
শুক্রবার (০৮ মার্চ) সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এক সেমিনারে তথ্যটি তুলে ধরেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দীন ফারুক।
তিনি বলেন, এদেশে প্রতি বছর ২৫ হাজার নারী ক্যান্সার রোগী হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছেন। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে লজ্জায় চিকিৎসকের কাছে না যাওয়া। এদেশে প্রতি ১০ জন নারীর ৮ জনই স্তন ক্যান্সারের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছেন। তাই প্রতিমাসে না হলেও নিয়মিত চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পরীক্ষা করা উচিত।
তিনি আরও বলেন, যেসব মেয়েদের কম বয়সে ঋতুস্রাব শুরু হয় এবং দেরিতে বন্ধ হয়, তাদের ঝুঁকি বেশি। এছাড়া যেসব মা শিশুকে স্তন পান করানো থেকে বিরত থাকেন। তারাও বেশি ঝুঁকিতে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভয়ংকর হচ্ছে যদি স্তনের বোটা দিয়ে দুধ না বেরিয়ে রক্ত বেরোয়। অথবা পুঁজ বা পানি বা আঠাঁল পদার্থ বের হলে কোনোভাবেই দেরি করা যাবে না। চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
এ সময় তিনি নারীদের কোনো প্রকার লজ্জা না পাওয়ার অনুরোধ জানান।
প্রধান অতিথি হিসেবে খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মো. কামরুল ইসলাম বলেন, এক সময় কলেরা, বসন্ত হলে মানুষ বাঁচত না। এখন কিন্তু মহামারী আকারে কলেরা, গুটি বসন্ত নাই। আমরা চিকিৎসা ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে গেছি। ক্যান্সার হ্যাজ নো অানসার-বলা হয়। কিন্তু প্রথম পর্যায়ে চিকিৎসা নিলে ভালো হয়।
তিনি আরও বলেন, মা-বোনদের লজ্জা করলে হবে না। নিজেদের স্তন নিজেরাই যদি নিয়ম অনুযায়ী চেক করে ডাক্তারের কাছে যান, তবে সমস্যা হবে না। তাই সচেতনভাবে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষ করে বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে হবে। ডাক্তার ইব্রাহীমের মাধ্যমে আমরা ডায়াবেটিস যেভাবে জয় করেছি, সেভাবেই ক্যান্সারকেও জয় করতে পারবো। তবে, এজন্য ব্যবসায়ী, বিত্তবানদের পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলনও গড়ে তুলতে হবে।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, সাধারণ মানুষের চিকিৎসা পাওয়া সাংবিধানিক অধিকার। সরকার এজন্য কাজ করছে। তবে সবার সমন্বিত উদ্যোগের মধ্য দিয়েই স্তন ক্যান্সারকে জয় করতে হবে।
সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. এম এ হাই, ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. গোলাম মোস্তফা, ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. ইসমাইল খান, দ্যা ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ অব ইউকে চ্যারিটির উপদেষ্টা আব্দুল আজিজ সরকার প্রমুখ।
সেমিনারটি যৌথভাবে দ্যা ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ ইউকে চ্যারিটি এবং বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটি যৌথভাবে আয়োজন করে।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০১৬
ইইউডি/পিসি