ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

৭০ রকমের অ্যান্টিবায়োটিক এখন ততোটা কাজ করছে না

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১২ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০১৭
৭০ রকমের অ্যান্টিবায়োটিক এখন ততোটা কাজ করছে না বক্তব্য রাখছেন শ্রীমঙ্গলের টিএইচও ডা. জয়নাল আবেদীন টিটু। ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: ‘এখন আমরা গভীরভাবে শঙ্কিত আছি যে, আমাদের দেশে প্রায় ৭০ রকমের অ্যান্টিবায়োটিক রয়েছে, সেগুলোতে ধীরে ধীরে আমাদের শরীর অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে। অর্থাৎ এগুলো আর মানবশরীরে আগের মতো কার্যকর নয়। ওই অ্যান্টিবায়োটিকগুলো যদি আমাদের শরীরে সম্পূর্ণভাবে ‘ফেল’ করে বা রোগ-জীবাণু দমনে ব্যর্থ হয় তাহলে আমাদের করার কিছুই আর থাকবে না। শিগগিরই নতুন অ্যান্টিবায়োটিক বাজারে আসবে তেমন কোনো জোরালো সম্ভাবনাও আপাতত নেই।’

মঙ্গলবার (২০ জুন) মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার লেবার হাউজে দুপুরে হীড (বাংলাদেশ) আয়োজিত যক্ষ্মা বিষয়ক এক সেমিনারে এই কথাগুলো বললেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. জয়নাল আবেদীন টিটু।

তিনি আরো বলেন, ‘কয়েকটা মারাত্মক সমস্যা আমাদের সামনে দেখা দিতে পারে।

এর একটি হলো এমডিআর টিবি। অর্থাৎ আমাদের শরীরে মাল্টি ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট তৈরি হয়ে যাওয়া। ফলে কোনো ঔষধই আর শতভাগ কাজ করবে না। ’

সোমবার (২০ জুন) মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার লেবার হাউজে দুপুরে হীড (বাংলাদেশ) আয়োজিত যক্ষ্মা বিষয় এক সেমিনারে এই কথাগুলো বললেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পারিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. জয়নাল আবেদীন টিটু।

অতীত ইতিহাস টেনে তিনি বলেন, ‘একটা সময় ছিল ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে যখন পেনিসিলিন ঔষধ আবিষ্কৃত হলো, তারপর যখন মানুষকে সেই পেনিসিলিন দেয়া হতো তখন তা সব রোগের কাজ করতো। এখন পেনিসিলিনের পরে প্রায় ৭০ রকমের অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কৃত হয়েছে। কিন্তু এখনকার অ্যান্টিবায়োটিকগুলো আগের ওই পেনিসিলিনের মতো কাজ করে না। ‘সিপ্রোফ্লোক্সাসিন’ নামের অ্যান্টিবায়োটিক ট্যাবলেটটি টাইফয়েড জ্বরে এক সময় জাদুর মতো কাজ করতো। কিন্তু এখন আর আগের মতো কাজ করছে না। ’

এর একটি কারণ হলো আমাদের শরীরের নানা ধরণের জীবাণু এই ঔষধে অভ্যস্ত হয়ে শক্তি অর্জন করে ফেলেছে। অর্থাৎ নিজেদের মধ্যে তারা একটি প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি করে ফেলে বলে জানান সেমিনারের প্রধান বক্তা ডা. জয়নাল আবেদিন।

যক্ষ্মা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের দেশে প্রতি বছর ৩ লক্ষ মানুষ যক্ষ্ম বা টিবিতে আক্রান্ত হয়। কফ পরীক্ষায় যক্ষ্মা ধরা পড়লে ধৈর্য ধরে ৬ মাস ঔষধ খেলেই পুরোপুরি সুস্থ হওয়া সম্ভব। সরকারের সহযোগিতায় হীড (বাংলাদেশ) যক্ষ্মার ঔষধ বিনামূল্যে সরবরাহ করছে।
বক্তব্য রাখছেন শ্রীমঙ্গলের টিএইচও ডা. জয়নাল আবেদীন টিটু।  ছবি: বাংলানিউজ
এ সেমিনারে বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রামভজন কৈরি, সাংবাদিক ইসমাইল মাহমুদ, সাংবাদিক বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, হীড বাংলাদেশ-র ডিস্ট্রিক প্রোগ্রাম অফিসার তাপস বারৈ প্রমুখ।

মৌলভীবাজারের ১৬টি চা বাগানের ২৫ জন কম্পাউন্ডার এবং ড্রেসার হীড বাংলাদেশ আয়োজিত এই যক্ষ্মা বিষয়ক সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০১৭
বিবিবি/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।