ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

যন্ত্রাংশ-লোকবল সংকট, শ্রীমঙ্গল হাসপাতালের সেবা ব্যাহত

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৩ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৯
যন্ত্রাংশ-লোকবল সংকট, শ্রীমঙ্গল হাসপাতালের সেবা ব্যাহত শ্রীমঙ্গল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অব্যবহৃত আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিন, ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারের ‘শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’। এখানের একমাত্র এক্স-রে মেশিনটি নষ্ট নয় বছর ধরে। আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিনটিও অব্যবহৃত অস্থায় পড়ে আছে দীর্ঘদিন; লোকবলের অভাবে তা ব্যবহার হয় না।

ফলে রোগীদের প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোতে গিয়ে উচ্চমূল্যে এক্স-রে, আল্ট্রাসনোগ্রাফিসহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হচ্ছে। এতে এক দিকে যেমন তারা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন, অন্যদিকে গুনতে হচ্ছে তাদের অতিরিক্ত টাকাও।

আর দিনের পর দিন হাসপাতালটির এই সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন উপজেলাটির সাধারণ মানুষ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিন ধরে এক্স-রে মেশিনের কক্ষটি তালা বন্ধ অবস্থায় থাকার কারণে মাকড়সার জাল পড়েছে। ভেতরে অকেজো অবস্থায় পরে রয়েছে এক্স-রে মেশিনটি। তাতে ধুলো-ময়লা জমে আছে। আর আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিনটিকে দ্বিতীয় তলায় অস্ত্রোপচার রুমে যত্ন করে ঢেকে রাখা হয়েছে। এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসার পর আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিনটি ব্যবহৃত হয়নি একবারও।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, শুরু থেকেই আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিন চালানোর ডাক্তার না থাকায় আরও অনেক প্রয়োজনীয় চিকিৎসা যন্ত্রপাতির ব্যবহার হচ্ছে না। এছাড়া ২০১০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি জার্মানির সিমেন্স কোম্পানি হাসপাতালের এক্স-রে মেশিনটি পরীক্ষা করে এটিকে নষ্ট ঘোষণা করে। এক্স-রে মেশিনটি ১৯৮৬ সালে স্থাপন করার পর ১৯৮৮ সাল থেকে এর ব্যবহার শুরু হয়। নষ্ট ঘোষণা করার পর এটি অকেজো হিসেবে পড়ে আছে। একইসঙ্গে এমন এক্স-রে মেশিন চালানোর লোকবলও এখন নেই হাসপাতালটিতে। অন্যদিকে, ২০১৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে হাসপাতালে আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিন আনা হলেও আজও এর ব্যবহার শুরু হয়নি। শ্রীমঙ্গল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিত্যক্ত এক্স-রে মেশিন, ছবি : বাংলানিউজশ্রীমঙ্গলের আশিদ্রোণ ইউনিয়ন থেকে চিকিৎসা নিতে আসা মোজাম্মেল বাংলানিউজকে বলেন, এই হাসপাতালে উপজেলার চা বাগানসহ অনেক দরিদ্র রোগী আসেন। কিন্তু বেশি টাকা খরচ করে আমাদের বাইরে থেকে এক্স-রে কিংবা আলট্রাসনোগ্রাফি করাতে হয়। এই সরকারি হাসপাতালে এসব সুযোগ-সুবিধা থাকলে আমাদের রোগীদের অর্থের অপচয় হতো না। আমাদের মতো গরিব রোগীদের জন্য অনেক উপকার হতো।

মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ডা. শাহজাহান কবীর চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, হাসপাতালের এক্স-রে এবং আল্ট্রাসনোগ্রাফি তো টেকনিক্যাল একটা বিষয়। এগুলো চালাতে হলে বিশেষজ্ঞ লোকবলের প্রয়োজন। বিশেষ করে আল্ট্রাসনোগ্রাফির জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রয়োজন। আমাদের এখানে তো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ দক্ষ টেকনিশিয়ানের পদে লোকবলের পদায়ন নেই। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক বরাবরে আমাদের সংকটের কথা লিখিতভাবে জানিয়েছি। আশা করি, এ সমস্যা কিছুদিনের মধ্যেই সমাধান হয়ে যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৩ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৯
বিবিবি/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।