ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

২৪ ঘণ্টায় বেড়েছে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৯
২৪ ঘণ্টায় বেড়েছে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রতীকী ছবি

ঢাকা: ২৪ ঘণ্টায় (রোববার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে আরও ৩৪৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় (শনিবার সকাল ৮ টা থেকে রোববার সকাল ৮ টা পর্যন্ত) এর সংখ্যা ছিল ৩৪২ জন। অর্থাৎ সারাদেশে এ সময়ে রোগী বেড়েছে ৬ জন।

সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ন্যাশনাল হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার এসব তথ্য বাংলানিউজকে জানান।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বৃষ্টি বেড়ে যাওয়ার কারণে ডেঙ্গুর হার বেড়েছে।

কেননা বৃষ্টির পানিতেই মশার লার্ভা প্রজননে সক্ষম হতে পারে।  এক্ষেত্রে মশার লার্ভা নিধন কার্যক্রমে কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। অন্যথায় বৃষ্টি বাড়লে মশা বাড়ার কথা না।

এছাড়া চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৩৮, ফেব্রুয়ারিতে ১৮, মার্চে ১৭, এপ্রিলে ৫৮, মে মাসে ১৯৩, জুনে ১ হাজার ৮৮৪, জুলাইয়ে ১৬ হাজার ২৫৩, আগস্টে ৫২ হাজার ৬৩৬ জন এবং সেপ্টেম্বর মাসের ৩০ দিনে ১৬ হাজার ৮৫৬ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা ২০১৯ সালেই সর্বোচ্চ। এর মধ্যে আগস্ট মাসে ছিল সর্বোচ্চ।

ডা. আয়েশা আক্তার বলেন, বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে রাজধানীর মাত্র ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ৫৫৫ জন ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত রোগী ভর্তি রয়েছে। একই সময়ে ঢাকার বাইরে ৯২৬ জন ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। কমছে না ঢাকার বাইরে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। সারাদেশে মোট ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত রোগী ভর্তি রয়েছে ১ হাজার ৪৮১ জন।

এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীতে আরও নতুন ১০০ জন ভর্তি হয়েছে ও হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ১২৮ জন এবং ঢাকার বাইরে আরও ২৪৮ জন নতুন ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছে এবং ছাড়পত্র পেয়েছে ৩১৬ জন।

রাজধানীর সরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১৫, মিটফোর্ডে ২০, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ১, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ১৭, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০, পুলিশ হাসপাতাল রাজারবাগে ২, মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৮, বিজিবি হাসপাতাল পিলখানা ঢাকায় ১, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ৩ ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ৫ সহ ঢাকা শহরের সরকারি ও স্বায়ত্ত্বশাসিত হাসপাতালে মোট ১০০ জন ভর্তি রয়েছেন। বেসরকারি হাসপাতালে রয়েছেন ১৮ জন।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) কাছে ডেঙ্গু সন্দেহে ২৩১ টি মৃত রোগীর তথ্য এসেছে। এরমধ্যে ১৩৬ টি মৃত্যু পর্যালোচনা করে ৮১ টি ডেঙ্গুজনিত মৃত্যু নিশ্চিত করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

প্রতিদিনই মৃতের সংখ্যা বাড়ছে বলে জানা যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে। এ সংখ্যা এখনও সরকারি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি। হাসপাতলে ভর্তি হয়ে মৃত ৮১ জন ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে এপ্রিলে ২, জুনে ৬, জুলাইয়ে ৩২, আগস্টে ৩৭ এবং সেপ্টেম্বর মাসে ৪ জনের মৃত্যু হয়। আর এসব মৃত্যুর মধ্যে শিশুমৃত্যুর হারই সবচেয়ে বেশি বলে জানায় প্রতিষ্ঠানটি।

এদিকে ঢাকা ছাড়া ঢাকা বিভাগে ৬৩, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৯, খুলনায় ৯২, রংপুরে ৮, রাজশাহীতে ১৫, বরিশালে ৩০, সিলেটে ৫ এবং ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৬ জন ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত রোগী ভর্তি হন।

হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ৮৭ হাজার ৯৫৩ জন। হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র নিয়েছেন ৮৬ হাজার ২৪১ জন।  আক্রান্তদের ৯৮ ভাগ রোগীই ছাড়পত্র পেয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৯
এমএএম/এইচএডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।