কলকাতা: বিজেপি বিরোধী ইন্ডিয়া জোট লোকসভা নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করলে সেই সরকারে যোগ দেবে না তৃণমূল কংগ্রেস। ইন্ডিয়া জোটকে বাইরে থেকে সমর্থন দেবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন দলটির প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুধবার (১৫ মে) হুগলি আসনে তৃণমূল প্রার্থী অভিনেত্রী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে নির্বাচনী প্রচারণায় মমতা বলেছেন, ইন্ডিয়া জোটকে নেতৃত্ব দিয়ে বাইরে থেকে সব রকম সাহায্য করে আমরা সরকার গঠন করে দেব।
পাশাপাশি তৃণমূল নেত্রীর স্পষ্ট বার্তা, বাংলায় সিপিআইএম ও কংগ্রেসের সঙ্গে তার দলের কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি দিল্লির রাজনীতিতে ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গে রয়েছেন।
হুগলির জনসভা থেকে মমতা বলেছেন, বাংলায় সিপিএম-কংগ্রেসকে ধরবেন না। ওই দুটো আমাদের সঙ্গে নেই। আমি দিল্লির কথা বলছি। ইন্ডিয়া জোটকে নেতৃত্ব দিয়ে, বাইরে থেকে সব রকম সাহায্য করে, আমরা সরকার গঠন করে দেব, যাতে বাংলায় আমার মা-বোনেদের কোনোদিন অসুবিধা না হয়।
মূলত গত বছর বিজেপি বিরোধী ইন্ডিয়া জোট তৈরি হওয়ার প্রধান কাণ্ডারী ছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার এবং বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর ধীরে ধীরে বাম-কংগ্রেসসহ ২৮ দল জোটে যোগ দেয়। চলতি বছর ইন্ডিয়া জোট ভেঙে বিজেপির জোট এনডিএ-তে নাম লেখায় নীতিশ ও তার দল জেএনইউ।
এরপরই মমতা বাংলায় জোট ভেঙে রাজ্যের ৪২ আসনে প্রার্থী দেন। ভোটের আগে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, বাংলায় সিপিআইএম এবং কংগ্রেসের সঙ্গে কোনো জোট হবে না। লোকসভা ভোটে জয়ের পরই জোট নিয়ে ফের ভাবব।
লোকসভা নির্বাচনে ইতোমধ্যে চার ধাপের ভোট হয়েছে। বাকি রয়েছে আরও তিন ধাপ। আগামী ২০ মে পঞ্চম ধাপের ভোট। তার আগেই মমতার গলায় অন্য সুর। তিনি জোটকে বাইরে থেকে সমর্থন দেবেন। অর্থাৎ তিনি জোট শরিকদের দলগুলোকে বার্তা দিলেন, ইন্ডিয়া জোটকে সমর্থন করলেও মন্ত্রিসভায় যোগ দিচ্ছেন না। কিন্তু কেন যোগ দেবেন না? তা স্পষ্ট করলেন না মমতা। ফলে জোটের ভবিষ্যতে আবার প্রশ্ন উঠল।
এ নিয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছেন, তিনি আমাদের নেত্রী। তিনি যা বলেছেন সেটাই চূড়ান্ত। এটা নিয়ে কোনো উত্তর দেব না। তবে একটা বিষয় স্পষ্ট, বিজেপি হারছে। এবং মমতা আগেই বলেছেন, ইন্ডিয়া জোটে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করবে তৃণমূল এবং বাংলার দাবি-দাওয়া আদায় করা হবে।
বিজেপির ফল এবার ভালো হবে না, সেই নিয়েও মমতা বলেছেন, ২০০৪ সালে অটল বিহারি বাজপেয়ী ‘রাইজিং ইন্ডিয়া’ স্লোগান দিয়েছিলেন। কিন্তু দেখা গেল দেশের হাওয়া বদলে গেল। তারা হেরে যাবে আমরা কেউ বুঝতে পারিনি। ভেতরে ভেতরে মানুষ ভোট দেয়নি। সেরকমই এবার হবে। শুধু বাংলায় নয়, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, রাজস্থান সর্বত্রই হারবে বিজেপি। ফলে আসন ওরা কোথা থেকে পাবে। জেতার অংক আর ওদের নেই।
মমতার দাবি দেশে চার ধাপের ভোট হয়ে গেছে। তাতে বিজেপি মোটেই ভালো ভোট পায়নি। বাকি আর তিন ধাপ। এই ধাপগুলোতে বিজেপি আর ভোট পাবে না। একই সাথে নির্বাচন কমিশনকে বিজেপির হাতেল পুতুল বলে অ্যাখ্যা দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। তিনি বলেছেন, নির্বাচন কমিশন একটা পাপেটের ভূমিকায় অবিতীর্ণ হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৬ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২৪
ভিএস/এমজেএফ