ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আসাম রাজ্য সরকার একটি নতুন আইন অনুযায়ী জনসমক্ষে গরুর মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ করেছে। এর মধ্যে রেস্তোরাঁ, অনুষ্ঠান এবং অন্যান্য জনসমাগমস্থলও অন্তর্ভুক্ত।
আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বুধবার জানান, জনসমক্ষে গরুর মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ করার এ সিদ্ধান্ত আগের একটি নিয়মের সম্প্রসারণ। আগে ওই নিয়ম অনুযায়ী মন্দির এবং অন্যান্য নির্দিষ্ট ধর্মীয় স্থানের আশেপাশে গরুর মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ ছিল।
তবে আসামে এখনো গরুর মাংস দোকান থেকে কেনা এবং বাড়ি বা ব্যক্তিগত স্থানে খাওয়ার অনুমতি রয়েছে। গরুর মাংস খাওয়া ভারতে অত্যন্ত সংবেদনশীল একটি বিষয়। কেননা হিন্দুধর্ম অনুসারীদের জন্য গরু পবিত্র প্রাণী হিসেবে বিবেচিত হয়। ভারতের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮০ শতাংশ হিন্দু।
গত কয়েক বছরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দল বিজেপি শাসিত বেশ কয়েকটি রাজ্যে গোহত্যার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আসামেও বিজেপি (ভারতীয় জনতা পার্টি) ক্ষমতায়।
ভারতের ২৮টি রাজ্যের মধ্যে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ রাজ্যে গরু জবাই এবং গরুর মাংস খাওয়া আংশিক বা পুরোপুরি নিষিদ্ধ। তবে কিছু রাজ্যে মহিষের মাংস খাওয়া বৈধ এবং এটি কিছু ক্ষেত্রে গরুর মাংসের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
ভারতের অনেক এলাকায় গরু রক্ষা গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে সহিংস উপায়ে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার অভিযোগ রয়েছে। এদের হামলার লক্ষ্য প্রায়ই মুসলিম মাংস বিক্রেতা, গবাদি পশুর ব্যবসায়ী এবং দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ, যাদের জন্য গরুর মাংস সাশ্রয়ী মূল্যের প্রধান প্রোটিনের উৎস।
২০২১ সালে আসামে এমন এলাকাগুলোতে গরুর মাংস কেনা-বেচা নিষিদ্ধ করা হয়, যেখানে হিন্দু, জৈন এবং শিখ সম্প্রদায়ের লোকেরা বাস করেন, যারা সাধারণত গরুর মাংস খান না। সেই আইনে মন্দিরের আশেপাশে গরুর মাংস বিক্রিও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, জনসমক্ষে গরুর মাংস খাওয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞাটি আগের আইনেই অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
এ সিদ্ধান্ত এমন সময়ে এলো, যখন ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস অভিযোগ করে যে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ সামাগুড়ি আসনের উপ-নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য গরুর মাংস বিতরণ করেন। তবে বিজেপি এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০২৪
আরএইচ