ঢাকা, রবিবার, ১ পৌষ ১৪৩১, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ভারত

ভারতীয় সেনাপ্রধানের অফিস লাউঞ্জ থেকে সরানো হলো নিয়াজির আত্মসমর্পণের ছবি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০২৪
ভারতীয় সেনাপ্রধানের অফিস লাউঞ্জ থেকে সরানো হলো নিয়াজির আত্মসমর্পণের ছবি

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তানি বাহিনী। আত্মসমর্পণপত্রে সই করেন পাক লেফটেন্যান্ট এ কে কে নিয়াজি।

উপস্থিত ছিলেন ভারতের সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা।

ওই বিশেষ মুহূর্তের ছবিটি দশকের পর দশক ধরে ভারতের সেনাপ্রধানের অফিসের লাউঞ্জের দেয়ালে টানানো ছিল। সেই লাউঞ্জে তিনি পরিদর্শনকারীদের স্বাগত জানাতেন। সম্প্রতি সেই ছবিটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। বিষয়টি অনেককে ক্ষুব্ধ করেছে।

সেনা সূত্র জানিয়েছে, ২৮ মাদ্রাজ রেজিমেন্টের লেফটেন্যান্ট কর্নেল থমাস জ্যাকবের আঁকা নতুন চিত্রকর্ম ‘কর্মক্ষেত্র – ফিল্ড অব ডিডস’ সেনাবাহিনীকে ‘ধর্মের রক্ষক’ হিসেবে উপস্থাপন করেছে।

এতে সেনাবাহিনীকে কেবলমাত্র জাতির প্রতিরক্ষক নয়, বরং ন্যায় প্রতিষ্ঠা ও জাতীয় মূল্যবোধ রক্ষার জন্য যোদ্ধা হিসেবেও দেখানো হয়েছে। এই চিত্রকর্মে সেনাবাহিনীর প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং সমন্বিত শক্তি হিসেবে তাদের বিকাশও তুলে ধরা হয়েছে।

ছবিতে দেখা যায়, পেছনে তুষারঘেরা পাহাড়। ডানে পূর্ব লাদাখের প্যানগং হৃদ। বাঁয়ে কৃষ্ণের রথ, চাণক্য। ছবিতে আরও দেখা যায়, আধুনিক সরঞ্জামসমেত ট্যাঙ্কসহ আরও নানা অস্ত্রের বহ। লেকে পেট্রল বোট, হেলিকপ্টার।

সেনা সূত্রগুলো জানায়, সংক্ষেপে বলতে গেলে, ছবিটি এমন একটি দেশের প্রতীক যা সমৃদ্ধ সভ্যতার অধিকারী, যা বরাবরই ন্যায়ে বিশ্বাসী, প্রয়োজন হলে শক্তির যথার্থ ব্যবহারে অঙ্গীকারবদ্ধ। এই দেশ খ্যাতনামা পণ্ডিত, রাজনীতিবিদ ও কৌশলবিদদের গর্বিত জন্মভূমি। এতে একটি সাহসী, আধুনিক এবং দক্ষ সেনাবাহিনী রয়েছে, যা সর্বদা তার সীমান্ত এবং স্বার্থ রক্ষায় প্রস্তুত।

অনেক বর্ষীয়ান সেনা কর্মকর্তা পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের ছবি সরানোয় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। সাবেক লেফট্যানেন্ট জেনারেল এইচ এস পানাগ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, এই ছবি বা চিত্রকর্মটি ছিল হাজার বছরের মধ্যে ভারতের প্রথম বড় ধরনের সামরিক বিজয়ের প্রতীক। ছবি সরানো এমন এক নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত, যারা বিশ্বাস করে পুরাণ, ধর্ম এবং দূর অতীতের খণ্ডিত সামন্ত যুগ ভবিষ্যতের বিজয়ে প্রেরণা যোগাবে।

আরেক সাবেক সেনা কর্মকর্তা ওই ছবিটি নির্দেশ করে এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, আমরা একেবারে ‘চরম নিম্নস্তরে’ পৌঁছেছি, এবং দুঃখজনকভাবে আমার এনডিএ কোর্সমেটরা এই ছবির সঙ্গে  সংশ্লিষ্ট।

অবসরপ্রাপ্ত এয়ার ভাইস মার্শাল মনমোহন বাহাদুরও ছবিটি সরানোর সমালোচনা করেছেন। ছবিটি কোথায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, সেটি অস্পষ্ট।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০২৪
আরএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।