ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

শেষবেলায় জমে উঠেছে কলকাতার নিউমার্কেট

ভাস্কর সরদার, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৯ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১৮
শেষবেলায় জমে উঠেছে কলকাতার নিউমার্কেট কলকাতার নিউমার্কেটে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়

কলকাতা: আর হাতেগোনা কয়েকটা দিন। তারপরই খুশির চাঁদ। তাই ব্যস্ততা যেনো দ্বিগুণ বেড়ে গেছে নতুন পোশাক আর ঘর সাজানোর কেনাকাটায়। ঈদ যত কাছে আসছে ততই জমে উঠছে কলকাতার নিউমার্কেট।

নিউমার্কেটের প্রতিটি দোকানে ক্রেতার উপচেপড়া ভিড়। রকমারি পোশাক, ঘর সাজানোর জিনিস, ব্রান্ডেড কসমেটিকস থেকে শুরু করে আসবাবপত্র, শুকনো ফল, রান্নার সামগ্রী, সমস্ত দোকানেই দেশি-বিদেশি ক্রেতাদের ভিড়।

ঈদের আগে সাপ্তাহিক ছুটির দিন রোববারেও (১০ জুন)  খোলা ছিল নিউমার্কেট।  

মেঘাছন্ন আকাশ আর হালকা বৃষ্টিতে গরমের তীব্রতা সাময়িক কাটিয়ে কিছুটা হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন কলকাতাবাসী। মনোরম আবহাওয়াকে কাজে লাগিয়েই দোকানে দোকানে উপচে পড়েছে ক্রেতাদের ঢল। ক্রেতাদের মধ্যে বেশি রয়েছে কলকাতাবাসী ও আশপাশ অঞ্চলের মানুষজন। ধীরে ধীরে ভিড় কমছে বাংলাদেশিদের। প্রতিবারের মতো এবারও মাঝের দিনগুলোতে বাজার শুধু জমে উঠেছিল বাংলাদেশিদের জন্য। তখন কলকাতার ক্রেতারা যে একেবারেই কেনেনি তা নয়, তবে খুবই কম। তবে বাংলাদেশিরা যে পরিমাণে এখান থেকে কেনাকাটা করেছে সে পরিমাণে কিনছে না কলকাতাবাসী। এমনটাই জানা গেল কলকাতার নিউমার্কেটে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে।

ঈদের পোশাক দেখাচ্ছেন দোকানি
কারণ জানতে চাইলে তারা বলেন, একে তো জিএসটির কারণে দাম বেড়েছে এবং দ্বিতীয়ত খোলা বাজার শেষ করে দিয়েছে অনলাইন শপিং। নামিদামি সমস্ত ব্রান্ডেড সংস্থাগুলো ভিড় করেছে সেখানে। রমজানের শুরু থেকেই বাংলাদেশিরা প্রতি বছর কেনাকাটা করতে আসেন এখানে। এছাড়া সারাবছরই কলকাতার সদর স্ট্রিট থেকে নিউমার্কেট বাঁচিয়ে রেখেছে বাংলাদেশিরা। এই বছর রমজান মাসের শুরু থেকেই তাদের ভিড় উল্লেখযোগ্য-জানালেন দোকানিরা।
 
ঈদের আগে প্রতি বছর দেখা যায়, চিরাচরিত পোশাকের মধ্যেই নতুন নতুন ফ্যাশন। তা নিয়ে উৎসাহও থাকে চরমে। সেসব পোশাকের চাহিদাও থাকে যথেষ্ট। বিশেষ করে বাংলাদেশিদের কাছে নারীদের সাজসজ্জা ও পোশাকের চাহিদা বেশি থাকে। তার মধ্যে থ্রি পিস অন্যমাত্রা পায়। ফ্যান্সি থ্রি পিস বাদেও এবছর বেশি বিক্রি হয়েছে জরি বসানো লম্বা ঝুলের ওভারকোট ও জরি দেওয়া পাড়ের প্লাজো। ঢোলা পায়জামার মতো দেখতে প্লাজো কলকাতার ফ্যাশন দুনিয়ায় পা দিয়েছে কয়েকবছর আগেই। কিন্তু তার সঙ্গে জুড়েছে লম্বা ঝুলের সুতির মধ্যে কোটের মতো চুড়িদার। 'মিক্স অ্যান্ড ফিট' পোশাকটি বেশি চলছে ছোট থেকে মধ্য বয়সীদের মধ্যে। এই পোশাক পরে যেমন যেকোনো অনুষ্ঠানে যাওয়া যায় তেমনই হালকা সাজের সঙ্গে বেশ মানানসই। অফিস পোশাক হিসেবেও এর দারুণ চল।
 
লম্বা চুড়িদার আবারও ফিরে এসেছে ফ্যাশনে। তবে শাড়ির চাহিদাও কম নয়। শিফন ও জর্জেট শাড়ির চাহিদাও যথেষ্ট আছে বাজারে। নিউমার্কেট ছাড়াও উত্তর কলকাতার হাতিবাগান বা দক্ষিণ কলকাতার গড়িয়াহাট মার্কেটে নারীদের পোশাকের মধ্যে থ্রি পিসের চাহিদাই বেশি। তবে নতুন ধরনের পোশাকের চাহিদা থাকলেও ক্রেতারা পুরনো ঘরানার কামিজ বা থ্রি পিস কিনতেই পছন্দ করছেন বেশি। ওড়নার মধ্যেও এসেছে বেশ নতুনত্ব। জরি বা সুতোর কাজের সঙ্গে এসেছে পুঁতি, পাথর বা ধাতু বসানো নকশা করা ওড়না। এসব ওড়নাগুলির চাহিদাও বেশি। ছোটদের পোশাকেও এসেছে নতুনত্ব।  

ভিড় রয়েছে কাঁচের চুড়ি এবং ব্রান্ডেড প্রসাধনী সামগ্রীর দোকানে। সেখানে নারীদের ভিড় চোখে পড়ার মতো।
 
ছেলেদের পোশাকের মধ্যে চাহিদা আছে ব্রান্ডেড কোম্পানির শেরওয়ানি এবং কাজ করা বিভিন্ন রঙের পাঞ্জাবির। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে স্টাইলিস্ট মুজিব কোট, আগ্রার ফেজ টুপি আর সঙ্গে নাগড়াই জুতো। বিক্রেতারা জানান, পাঞ্জাবি বাদেও ছেলেদের পোশাকে দারুণ চাহিদা আছে মুম্বাই কাটিং জিনস এবং টি শার্টের। তবে নামি ব্রান্ডেড শার্টের চাহিদাও চোখে পড়ার মতো।
 
মেয়েদের জন্য ঈদ উপলক্ষে নানা জুতার সম্ভার এনেছে কলকাতার নামি জুতোর দোকানগুলি। ছেলেদের জন্য বেশি চলছে সব ধরনের কভার ফিতা ছাড়া জুতো। তবে যাই কিনুক সঙ্গে এক জোড়া বর্ষাতি কিনতে কেউ ভুলছেন না। বর্ষাতি ফিনিশিং লেদার স্যুর মতো, দামও সাধ্যের মধ্যে।
 
একদিকে শপিং-এর ভিড় অন্যদিকে ইফতার। দুটোই সামাল দিচ্ছেন ক্রেতারা। নিউমার্কেট চত্বরের রেস্তোরাঁ বা রাস্তায় ইফতার সেরে নিচ্ছেন তারা। শপিং আর ইফতারে মজে থাকা দেশি-বিদেশির ভিড়ে শেষবেলায় জমে উঠেছে কলকাতার নিউমার্কেট।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৮ ঘণ্টা, ১১ জুন, ২০১৮
ভিএস/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।