ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রীর ৫০ বছরে ফোর্ট উইলিয়ামে নানা অনুষ্ঠান

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২১
বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রীর ৫০ বছরে ফোর্ট উইলিয়ামে নানা অনুষ্ঠান ফোর্ট উইলিয়ামে ‘শিল্পীদের চোখে ৭১ এর স্মরণে’ নামে চিত্রশিল্পকলার আয়োজন করা হয়েছে

কলকাতা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বাংলাদেশ- ভারত মৈত্রীর ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় শাখা কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামে বছরভর নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

ফলে সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ফোর্ট উইলিয়ামে ‘শিল্পীদের চোখে ৭১ এর স্মরণে’ নামে এক চিত্রশিল্পকলার আয়োজন করা হয়েছে।

তাতে অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশের দুই বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী ও আটজন প্রখ্যাত ভারতীয় শিল্পী। এছাড়া, অংশ নিয়েছেন কলকাতার ১০ জন শিক্ষার্থী শিল্পী।

তারা ফোর্ট উইলিয়ামের আয়োজনে সেখানে বসে নিজেদের ভাবনা অনুযায়ী, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সেনাবাহিনীর সহযোগিতা তুলে ধরবেন তাদের ক্যানভাসে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশের বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অবদান আমরা ভুলিনি। দুই দেশের সম্পর্ক আরও বন্ধুত্বপূর্ণ হচ্ছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর এমন উদ্যোগকে একজন শিল্পী হিসেবে সাধুবাদ জানাচ্ছি। এখানে এসে বেশ ভালো লাগছে। ভারতীয় সেনারা বাংলাদেশের শিল্পীদের সম্বন্ধে জানতে আগ্রহী। বাংলাদেশের শিল্পীদের শিল্পকলা দেখে তারা আনন্দ পাচ্ছেন। ’

এ চিত্রশিল্পী তার ছবির ভাবনা নিয়ে বলেন, ‘আমি এখানে তুলে ধরেছি নদীমাতৃক বাংলাদেশেকে কীভাবে ব্যবহার করে মুক্তিযুদ্ধ এগিয়েছিল। নদীমাতৃক দেশ হওয়ার কারণে প্রায় সব বাংলাদেশি সাঁতার জানেন। অপরদিকে, পাকিস্তানি সেনারা সাঁতার জানতেন না এবং ভারতীয় সেনারা পথ চিনতেন না। কীভাবে মুক্তিযোদ্ধারা নদীর স্রোতের বিপরীতে গিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিদের পথ দেখিয়েছিল, তা আমি তুলে ধরেছি। ’

অপর এক বাংলাদেশি শিল্পী আহমেদ শামসুদ্দোহা বলেন, ‘আমি এটাকে মহৎ উদ্যোগ বলবো। কারণ ভারতীয় সেনাবাহিনীর নতুন প্রজন্মের মধ্যেও একটা আগ্রহ দেখছি শেখ মুজিব ও বাংলাদেশকে জানার। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনী উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছ, যা সেসময় পাকিস্তান এবং পাকিস্তানকে সহযোগী রাষ্ট্রগুলো ভাবতেও পারেনি। ’

তিনি তার ভাবনা নিয়ে বলেন, ‘সেসময় যুদ্ধবিমানের একটা বড় ভূমিকা ছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করতে ভারতীয় যুদ্ধবিমান কীভাবে পাকিস্তানি বাঙ্কারগুলো ধ্বংস করেছিল, তা তুলে ধরেছি। ’

ভারতীয় শিল্পী অতীন বসাক বলেন, ‘বাঙালি তথা শিল্পীদের কোনো কাঁটাতার নেই। মুক্তিযুদ্ধ শুধু বাংলাদেশের নয়, এ যুদ্ধ ছিল ভারতেরও। তাই সেদিনের মুক্তিযুদ্ধ আমারও যুদ্ধ ছিল। আমিও স্বাধীনতার পক্ষে ছিলাম যদিও তখন আমার বয়স খুবই অল্প। আমি আমার চিত্রে ফুটিয়ে তুলতে চাইছি বাংলাদেশ মানে ‘মা’। সেখানকার নাগরিকরা সেই মায়ের সন্তান। মা তার সন্তানদের কোলে আগলে রেখেছেন। মায়ের দুই হাতের পাশ দিয়ে ‘ডানা’। এই ডানা স্বাধীনভাবে উড়ে যাওয়ার জন্য। ’

সেনাদের পক্ষ থেকে আয়োজক সুকন্যা যাদব বলেন, ‘খুবই ভালো লাগছে এমন একটি আয়োজন করতে পেরে। চলমান বছরে বিজয় দিবস ৫০ বছর। এ কারণে বছরভর ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী স্থাপনের জন্য সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আজকে ছিল তারই সূচনা। এরপর দুই দেশের সহযোগিতায় আরও অনুষ্ঠান হবে। ’

এবার মোট ১৮ জন শিল্পী কমবেশি ৪০টি চিত্র আঁকবেন। কারো পছন্দ হলে, তিনি সে চিত্র কিনতে পারবেন। তবে তা তুলে দেওয়া হবে ১৬ ডিসেম্বরের পর। কারণ এসব ছবি ডিসেম্বরের অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত হবে। অনুষ্ঠান চলবে দু’দিনব্যাপী। এরপর ছবিগুলো সেনাবাহিনীর হেফাজতে রেখে দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২১
ভিএস/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।