ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প

অবাস্তব ব্যয় থেকে বাঁচলো ৭৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা!

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫১ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০১৬
অবাস্তব ব্যয় থেকে বাঁচলো ৭৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা!

ঢাকা: নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের ড্রেজার এবং ড্রেজিং সহায়ক ও বিভিন্ন সরঞ্জামাদি ও যন্ত্রপাতি কেনার একটি প্রকল্পের সংশোধিত প্রস্তাবে প্রাক্কলিত ব্যয় থেকে ৭৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা সাশ্রয় হয়েছে। যেখানে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের মেয়াদের সঙ্গে সঙ্গে ব্যয় বৃদ্ধির অসংখ্য নজির রয়েছে, সেখানে এই ব্যয় সাশ্রয় মন্ত্রণালয়টির জন্য স্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এখন সাশ্রয়কৃত ৭৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকায় একই ধরনের অতিরিক্ত যন্ত্রপাতি কেনা হবে।  

তবে প্রকল্পটিতে অবাস্তব প্রাক্কলন ব্যয় ধরা হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।

সূত্র জানায়, ১০টি ড্রেজার, ক্রেনবোট, টাগ, অফিসার হাউজবোট ও ক্রু হাউজবোটসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি ও যন্ত্রপাতি কেনা বাবদ ৭৪৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল। ২০১১ সালের জুলাই থেকে ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এসব প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি ও যন্ত্রপাতি কেনার কথা ছিল।
 
কিন্তু টাকা খরচ বা যন্ত্রপাতি না কেনায় মোট ব্যয় ও মেয়াদ অপরিবর্তিত রেখে প্রকল্পটির আন্তঃখাত সমন্বয় করা হয়। সর্বশেষ গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর প্রকল্পের মেয়াদ এ বছরের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। এবারও ব্যয় বাড়ানো হয়নি, বরং প্রাক্কলিত ব্যয় থেকে ৭৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা সাশ্রয় হয়েছে।

এবার দ্বিতীয় সংশোধিত প্রস্তাবে প্রকল্পের মেয়াদ আরও দুই বছর বৃদ্ধি করে ২০১৮ সালের জুন নাগাদ নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। মূলত সাশ্রয় হওয়া বাড়তি অর্থ খরচ করার লক্ষ্যেই এ মেয়াদ বৃদ্ধি।

প্রকল্প বিশ্লেষণে দেখা গেছে, প্রাথমিক পর্যায়েই অবাস্তব অতিরিক্ত ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল। যে কারণে কয়েক দফা সময় বাড়িয়েও প্রাক্কলিত টাকার সব খরচ করা যায়নি, বরং সাশ্রয় হয়েছে। সরকার উন্মুক্ত পদ্ধতিতে টেন্ডার আহ্বানের ফলে এ অর্থের সাশ্রয় হয়েছে।
 
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিনিধি বাংলানিউজকে বলেন, দরপত্রে প্রাপ্ত দর অনুযায়ী ড্রেজার ও অন্যান্য যন্ত্রপাতির ক্রয়মূল্য অনুমোদিত প্রকল্পের চেয়ে সংশোধিত প্রস্তাবে কম এসেছে। সার্বিকভাবে চুক্তিমূল্য অনুসারে অনুমোদিত আরডিপিপির আইটেমভিত্তিক প্রাক্কলনের বিপরীতে সাশ্রয়কৃত অর্থের পরিমাণ ৭৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। সাশ্রয়কৃত অর্থে নতুনভাবে ১২টি ড্রেজার সহায়ক যন্ত্রপাতিসহ অানুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে একটি টাগবোট, পাঁচটি ক্রেনবোট, একটি ক্রু-হাউজবোট, দু’টি সেলফ প্রোপেন্ড মাল্টিপারপাস বার্জ ও তিনটি পাইপ ক্যারিং ডাম্ব বার্জ।

বিআইডব্লিউটিএ’র এক প্রতিনিধি বাংলানিউজকে বলেন, একটি মামলা থাকার কারণে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে দেরি হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ’র বর্তমানে ২২টি ড্রেজার রয়েছে। প্রতিটি ড্রেজার টানার জন্য একটি টাগবোট প্রয়োজন। ড্রেজারের সংখ্যার তুলনায় বেশি সংখ্যক টাগবোট থাকা প্রয়োজন, যেন ড্রেজারগুলো সব সময় চলমান রাখা যায়।
 
তিনি আরও বলেন, দরপত্রে দরের গড় করে ১০ শতাংশ ব্যয় বৃদ্ধি ধরে প্রস্তাবিত নতুন যন্ত্রপাতির ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে। চলমান প্রকল্পটির ভৌত অগ্রগতি ৮৪ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৬৭ শতাংশ।
 
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ন-প্রধান (পরিকল্পনা উইং) এনায়েত হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘ড্রেজার সংক্রান্ত জিনিসের বাজারদর যাচাই-বাছাই করেই একটি প্রস্তাবিত ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল। আমরা কোনো অযৌক্তিক অতিরিক্ত ব্যয় প্রাক্কলন করিনি। তবে ওপেন টেন্ডারের মাধ্যমে ৭৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা সাশ্রয় হয়েছে। সাশ্রয়কৃত টাকা দিয়ে ড্রেজার সহায়ক যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম কেনা হবে’।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০১৬
এমআইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।