ঢাকা, সোমবার, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ মে ২০২৪, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

তথ্যপ্রযুক্তি

ডিজিটাল বাংলাদেশে অ্যানালগ কম্পিউটার সমিতি!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৬
ডিজিটাল বাংলাদেশে অ্যানালগ কম্পিউটার সমিতি!

তথ্যপ্রযুক্তির উৎকর্ষতার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশও এগিয়ে যাচ্ছে। চিঠি-পত্রের জায়গাটি দখল করেছে ই-মেইল কিংবা মোবাইলের খুদেবার্তা। মুহূর্তেই বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে যে কারও কাছেই সেকেন্ড পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে প্রয়োজনীয় বার্তাটি। 

ঢাকা: তথ্যপ্রযুক্তির উৎকর্ষতার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশও এগিয়ে যাচ্ছে। চিঠি-পত্রের জায়গাটি দখল করেছে ই-মেইল কিংবা মোবাইলের খুদেবার্তা।

 

মুহূর্তেই বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে যে কারও কাছেই সেকেন্ড পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে প্রয়োজনীয় বার্তাটি।  

কিন্তু তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যম কম্পিউটার ব্যবসায়ে জড়িতদের সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতিই (বিসিএস) এখনও রয়ে গেছে অ্যানালগ।  

যেখানে সংগঠনটি দেশব্যাপী বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ ও সর্বশেষ প্রযুক্তি মানুষের কাছে পরিচিত করে তুলছে, সেখানে তারা নিজেরাই এখনও ই-মেইলের পরিবর্তে সেকেলে চিঠি চালাচালিতেই আটকে রয়েছে।  

আর এতে সময় মতো প্রাপকের কাছে না পৌঁছাচ্ছে না প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট, না পৌঁছাচ্ছে সময়ের বার্তা। ফলে অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে অনেক প্রাপককেও।  

তাদের অ্যানালগ কাণ্ডের তেমনই একটি ঘটলো শনিবার (১২ নভেম্বর)। সংগঠনটির ধানমন্ডির কার্যালয়ে সকাল সাড়ে ১১টায় সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। অথচ এ সংবাদ সম্মেলনের আমন্ত্রণপত্র বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে পৌঁছেছে প্রায় পৌনে ৪ ঘণ্টা পর বিকেল সোয়া ৩টার দিকে! যে জন্য আমন্ত্রিত সংবাদমাধ্যমই যেতে পারেনি এ সংবাদ সম্মেলনে।

আসছে ১৪ নভেম্বর মায়ানমারের ইয়াংগুনে শুরু হচ্ছে ‘এএসসওসিআইএ জেনারেল অ্যাসেম্বলি অ্যান্ড আইসিটি সামিট ২০১৬’।  

এশিয়া ও ওশেনিয়ার তথ্য প্রযুক্তি শিল্পের আঞ্চলিক সংস্থা ‘এমিয়ান কম্পিউটিং ইন্ডাস্ট্রি অরগানাইজেশনের (এএসসওসিআইএ) উদ্যোগে আয়োজিত তিনব্যাপী এ সম্মেলন শেষ হবে ১৬ নভেম্বর।  

মায়ানমার কম্পিউটার ফেডারেশন (এমসিএফ) আয়োজিত এ সম্মেলনে বাংলাদেশ থেকে ২০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল অংশ নেবে।  

এ উপলক্ষে তথ্য ও মতবিনিময় করতেই শনিবার সংবাদ সম্মেলনটির আয়োজন করে বিসিএস।  

আমন্ত্রণপত্রের খাম খুলে দেখা গেল, গত ৯ নভেম্বর বিসিএস এর ধানমন্ডি কার্যালয় থেকে সমিতির মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত সরকার স্বাক্ষরিত আমন্ত্রণপত্রটি পাঠানো হয় বাংলানিউজে! 

এতে শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় বিসিএস ইনোভেশন সেন্টারে (বাড়ি#৩৩/বি, রোড#৪) উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি জাতীয় দৈনিকের একজন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক বাংলানিউজকে বলেন, “এখন সাধারণত সবাই ই-মেইলে বিভিন্ন বার্তা আদান-প্রদান করেন। সময় অর্থ ব্যয় করে কেউ আর কুরিয়ার কিংবা পোস্ট অফিসের দিকে তাকিয়ে থাকেন না। ”

“আমন্ত্রণপত্র থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় বিষয়াবলী ই-মেইল করলেই ভালো হয়। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিসিএস সেটা করছে না। ”

আরেকজন সাংবাদিক বলেন, “ধানমন্ডি থেকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা কিংবা বারিধারায় বিসিএস-এর আমন্ত্রণপত্র কুরিয়ারে আসতে সময় লেগেছে তিনদিন। অথচ ই-মেইল এক সেকেন্ডেই তা সম্ভব ছিলো। ”

“বিসিএস-এর মতো প্রতিষ্ঠান যদি ডিজিটাল বাংলাদেশে এসেও এ অবস্থায় থাকে, তবে তা খুবই লজ্জাকর। কারণ তারাই মানুষের কাছে লেটেস্ট প্রযুক্তির সব পণ্য পৌঁছে দেন। ”

বুয়েটের কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের কায়সার শাকিল বাংলানিউজকে বলেন, “তারাই যেখানে প্রযুক্তির জ্ঞান শিক্ষা দেন। সেখানে এই অ্যানালগ চর্চা মানা যায় না। তাদেরই প্রযুক্তির প্রয়োগ ঘটানো জরুরি। ”

‍এ বিষয়ে বিসিএস-এর প্রোগ্রাম অফিসার হাবিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘তিনদিন আগে অর্থাৎ ৯ নভেম্বর কন্টিনেন্টাল কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ঢাকার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে চিঠিটি পাঠানো হয়। কিন্তু কী কারণে এটি দেরিতে পৌঁছালো তা খোঁজ নিয়ে দেখবো। ”

ই-মেইলের বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরা চিঠিই পাঠাই। তবে ভবিষ্যতে ই-মেইলের কথাও ভাবা হবে। ”

১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস) বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ ও কোর্স পরিচালনা করে আসছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৬
এমএ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।