ঢাকা: যুদ্ধবিরতি কার্যকর না হওয়ায় এবং ষষ্ঠ দিনের মতো লড়াই চলার কারণে সুদানের রাজধানী খার্তুম ছেড়ে পালাচ্ছে হাজার হাজার বাসিন্দা। একই সঙ্গে অনেক দেশ সুদান থেকে তাদের নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে।
বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান ও আল জাজিরা।
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক বাহিনীগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও সমর্থিত পক্ষগুলোর মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের প্রচেষ্টা ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। যা রাজধানীর অনেক বাসিন্দাকে আশ্বস্ত করতে পারেনি। ফলে বিমানবন্দর, প্রতিরক্ষা নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর মধ্যে লড়াই চললেও, এতে সবচেয়ে তীব্র সংঘর্ষের শিকার হয়েছে সদর দপ্তর এবং অন্যান্য মূল কৌশলগত সাইট।
এ অবস্থায় জার্মানি এবং জাপান তাদের নাগরিকদের সুদান থেকে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে বলে জানা গেছে।
তবে খার্তুমে মার্কিন দূতাবাস বলছে, রাজধানীর অনিশ্চিত নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং বিমানবন্দর বন্ধ হয়ে গেলেও যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও তাদের সমর্থিত জোটের এই মুহূর্তে এরকম কোনো পরিকল্পনা নেই।
এদিকে, জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতন ব্যবস্থাপনা বিভাগ সবচেয়ে বিপজ্জনক অবস্থানে থাকা তাদের কর্মীদের বলেছে যে, কীভাবে নিরাপদে থাকা যায় সেই বিষয়ে তাদের নিজেদেরই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, রাগ-উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, এ অবস্থায় জাতিসংঘ এবং অন্যান্য সাহায্য সংস্থার কিছু কর্মী যৌন সহিংসতার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছেন।
চলমান লড়াইটি মূলত সুদানের অন্তর্বর্তীকালীন সার্বভৌম পরিষদের প্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের অনুগত সেনা ইউনিট এবং কাউন্সিলের উপ-প্রধান হেমেদতি নামে পরিচিত জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালোর নেতৃত্বে আরএসএফ-এর প্রতি অনুগত বাহিনীর মধ্যে হচ্ছে। তাদের ক্ষমতার লড়াই বেসামরিক শাসনের পরিবর্তনকে কক্ষচ্যুত করেছে এবং একটি দীর্ঘ, নৃশংস গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছে।
জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস ঘেব্রেইসাস বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) বলেন, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত কমপক্ষে তিন শতাধিক লোক নিহত এবং প্রায় তিন হাজার লোক আহত হয়েছেন।
এদিকে আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, শাদের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী দাউদ ইয়ায়া ব্রাহিম নিশ্চিত করেছেন যে, গত সোমবার (১৭ এপ্রিল) ৩২০ জন সুদানী সৈন্যকে তার দেশে প্রবেশ করার সময় থামিয়ে দেওয়া হয় এবং তাদের নিরস্ত্র করা হয়।
তিনি বলেন, গত শনিবার (১৫ এপ্রিল) যখন যুদ্ধ শুরু হয়, তখন শাদ সুদানের সঙ্গে সমস্ত সীমান্ত বন্ধ করে দেয়।
শাদ এর আগে ৪ লাখেরও বেশি সুদানী শরণার্থীকে আতিথ্য দিয়েছে উল্লেখ করে ব্রাহিম বলেন, ‘আজ হাজার হাজার শরণার্থী সুরক্ষার জন্য আমাদের সীমান্ত অতিক্রম করছে। তাদের স্বাগত জানানো এবং রক্ষা করা ছাড়া আমাদের আর কোন উপায় নেই। ’
আরও পড়ুন: সুদানে দুই বাহিনীর লড়াইয়ে নিহত বেড়ে প্রায় ৩০০: জাতিসংঘ
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২৩
এনএস