ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

নামাজের জন্য বাস থামিয়ে কন্ডাক্টর বরখাস্ত, পরে আত্মহত্যা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০২৩
নামাজের জন্য বাস থামিয়ে কন্ডাক্টর বরখাস্ত, পরে আত্মহত্যা প্রতীকী ছবি

ভারতে চাকরি হারিয়ে আর কোথাও চাকরি না পেয়ে দিশেহারা হয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপিয়ে গত ২৮ আগস্ট আত্মহত্যা করেছেন মোহিত যাদব নামের ব্যক্তি। যিনি এর আগে বাস কন্ডাক্টর হিসেবে কাজ করতেন।

মোহিত যাদব ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের মৈনপুরীর ঘিরর থানার নাগলা খুশালি এলাকার বাসিন্দা।

তার আত্মহত্যার বিষয়ে মোহিতের স্ত্রী রিংকি যাদব বলেছেন, ‘আমার স্বামী মানবতা দেখানোর মাশুল দিয়েছেন। মানবতাবোধের কারণে মোহিতকে জীবন দিতে হলো’

মূলত এক দম্পতিকে নামাজ আদায় করতে দিতে বাস থামানোই কাল হলো মোহিতের, যে কারণে চাকরি হারান তিনি।

ভারতের গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনেও এমন তথ্য উঠে এসেছে।  

উত্তর প্রদেশের রাজ্য সরকার পরিচালিত (আপএসআরটিসি) একটি বাসে কন্ডাক্টর হিসেবে চাকরি করতেন মোহিত।

চলতি বছরের ৩ জুনের ঘটনা। এদিন বাসটি বেরেলি থেকে দিল্লির দিকে যাচ্ছিল। পথে নামাজ আদায়ের উদ্দেশে বাস কন্ডাক্টর তথা মোহিতকে বাস থামাতে অনুরোধ করেন এক দম্পতি। তাদের অনুরোধ রক্ষায় বাস থামান তিনি।  

এ ঘটনায় বাসের অন্যান্য যাত্রীরা বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানান ও অভিযোগ করেন। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই বাসের কন্ডাক্টর মোহিত ও বাসচালক কেপি সিংকে (৫৮) চাকরিচ্যুত করে স্থানীয় বাস চলাচল কর্তৃপক্ষ।  

এ ঘটনার সত্যতাও নিশ্চিত করেছে একটি ভিডিও ফুটেজ। বাসের এক যাত্রী ওই ভিডিওটি ধারণ করেন।

ঘটনার সময় ধারণ করা ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, বাস থামানোর আগে যাত্রীদের বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করছিলেন মোহিত। তিনি বলছিলেন, ‘আমরাও হিন্দু। হিন্দু বা মুসলিম কোনো বিষয় নয়। দুই মিনিটের জন্য বাস থামালে কী এমন হয়ে যাবে। ’

ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার পর কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই উত্তর প্রদেশের পরিবহন বিভাগ বাসটির চালক ও তার সহকারী মোহিত যাদবকে বরখাস্ত করে।

এনডিটিভি জানিয়েছে, পরিবারের বড় সন্তান মোহিত যাদব ওই বাসে ১৭ হাজার রুপি বেতনে কাজ করতেন। আট সদস্যের পরিবারটি মোহিতের এই আয়েই চলত। বরখাস্ত হওয়ার পর অনেক জায়গায় চাকরির আবেদন করেন মোহিত। তবে কোথাও চাকরি পাচ্ছিলেন না। এদিকে পরিবারও পথে বসেছিল।

স্বামীর আত্মহত্যার বিষয়ে মোহিত যাদবের স্ত্রী রিংকি যাদব অভিযোগ করেন, উত্তর প্রদেশের পরিবহন বিভাগ তার স্বামীর বক্তব্য শোনেনি। বেরেলির আঞ্চলিক ব্যবস্থাপককে মোহিত ফোন দিয়েছিলেন। তিনিও মোহিতের কথাগুলো শোনেননি। আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এ ঘটনায় হতাশ হয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১,২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।