যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে নজিরবিহীন ঘটনা- সাবেক বা বর্তমান প্রেসিডেন্টদের মধ্যে প্রথমবারের মতো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। গেল বৃহস্পতিবার ম্যানহাটনের আদালত ট্রাম্পকে ৩৪ অভিযোগে অভিযুক্ত করে।
আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ট্রাম্প হয়তো আপিল করতে পারেন। রায় নিশ্চিত হলেও হয়তো তার সম্ভাব্য সাজা হতে পারে জরিমানা কিংবা পর্যবেক্ষণে থাকা। সবচেয়ে খারাপ যা হতে পারে, তা হলো কারাদণ্ড- সেক্ষেত্রেও ট্রাম্প প্রার্থিতা চালিয়ে যেতে পারবেন।
প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীদের জন্য যেসব আইনি নিয়মকানুন, তা ১৭৮৯ সালের পর আর পরিবর্তন হয়নি। ওই বছর জর্জ ওয়াশিংটন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীদের হোয়াইট হাউসের জন্য লড়াইয়ের বিষয়ে কোনো নিয়ম-কানুন বলা নেই। ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের অধ্যাপক ইওয়ান মরগান মনে করেন, এর কারণ হলো যুক্তরাষ্ট্রের যাত্রা শুরুর ইতিহাস।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের জন্ম হয়েছে বিপ্লবের মধ্য দিয়ে এবং সে কারণে এমন সম্ভাবনা ছিল যে, রাজতন্ত্রবিরোধী তৎপরতায় জড়িয়ে কেউ হয়তো জেল খাটতে পারেন— তখনও যুক্তরাষ্ট্র ব্রিটিশ কলোনি- ফলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য তিনি অযোগ্য হয়ে পড়তে পারেন।
দেশটির প্রতিষ্ঠাতা পিতাদের- যারা ১৭৮৭ সালে সংবিধান প্রণয়ন করেছেন – তারা মূলত ব্রিটিশদের দ্বারা বন্দি ছিলেন, বলছিলেন অধ্যাপক মরগান। তিনি বলেন, বিপ্লব সফল না হলে তারা হয়তো রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হতেন এবং অপরাধী সাব্যস্ত হতেন।
এ কারণেই সংবিধান প্রণেতারা এ বিষয়ে কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করতে চাননি, এ নীতির সুযোগে এ পর্যন্ত তিনজন জেলে থেকে প্রেসিডেন্ট পদের জন্য প্রচারণা চালিয়েছেন।
ইয়ুজিন ভি ডেবস ১৯১২ ও ১৯২০ সালে প্রেসিডেন্ট পদের জন্য লড়েছিলেন। তিনি ১৯২০ সালে ফেডারেল কারাগারে ছিলেন। যদিও ওই সময় তিনি খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থী ছিলেন।
লিন্ডন লারুশ একটি রাজনৈতিক আন্দোলনকে প্রভাবিত করেছিলেন ষড়যন্ত্র তত্ত্ব দিয়ে। তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণা চালিয়েছিলেন জেলে থেকে।
বন্দি অবস্থায় ১৮৪৪ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রচারণা চালাবার সময় গুলিতে নিহত হন মরমনের প্রতিষ্ঠাতা জোসেফ স্মিথ।
বিবিসি বাংলা অবলম্বনে
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৩ ঘণ্টা, জুন ২, ২০২৪
আরএইচ