ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে টানা তৃতীয় মেয়াদের শপথ নেবেন নরেন্দ্র মোদী। আর অল্প কিছুক্ষণ পরই শপথ বাক্য পাঠ করবেন তিনি।
রোববার (৯ জুন) সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সন্ধ্যায় অনাড়ম্বর আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নেবেন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতা নরেন্দ্র মোদী। এ মেয়াদে তিনি যে মন্ত্রিসভা নিয়ে দিল্লির মসনদে বসবেন, তার অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ পদ থাকছে বিজেপির হাতে।
নতুন এ মন্ত্রিসভা কেমন হবে সেটি নির্ধারণের বিজেপি ও এনডিএ জোটের জাঁদরেল নেতারা দীর্ঘ সময় বৈঠক করেছেন।
সূত্রে বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানিয়েছে, টানা ১১ ঘণ্টা ধরে বৈঠক করেছে বিজেপি ও এনডিএ। এটি অনুষ্ঠিত হয় শনিবার নয়া দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিজেপির অন্যতম শীর্ষ নেতা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, দলের সভাপতি জেপি নাড্ডা ও জাতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বিএল সন্তোষ।
ওই সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মন্ত্রিসভার স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র, অর্থ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পদগুলো বিজেপি নিজের কাছেই রাখছে।
ইন্ডিয়া টুডের খবরে বলা হয়েছে, রোববার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন মোদী। শপথ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে। এর আগে মন্ত্রিত্ব পেতে যাওয়া ব্যক্তিদের সম্মানে তিনি চা চক্রের আয়োজন করবেন। এ আয়োজন হবে তার বাসভবনে। এতে অংশ নেওয়ারাই মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর ধারণা, অমিত শাহ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, রাজনাথ সিং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও নীতিন গড়করি সড়ক ও জনপথমন্ত্রী হিসেবে নিজেদের পদ ধরে রাখবেন। রাজ্যসভার সংসদ সদস্য নির্মলা সীতারমণ ও ড. এস জয়শঙ্করের পদও পরিবর্তন হবে না, এমন ইঙ্গিত মিলেছে।
মোদীর নতুন মন্ত্রিসভায় তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি) থেকে চারজন মন্ত্রী পদে ‘দিল্লি মসনদের’ পাশে বসবেন। দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন চন্দ্রবাবু নাইডু। তিনি এনডিএ জোটের শীর্ষ নেতা। তার সঙ্গে সংযুক্ত জনতা দল (জেডিইউ) থেকে দুজন মন্ত্রী হতে পারেন। আলোচিত এ দলটির নেতৃত্বে রয়েছেন নীতিশ কুমার। ১৮ তম লোকসভা নির্বাচন শেষে যখন ফলাফল প্রকাশ হচ্ছিল, বিশ্লেষকরা তাদের ভারতীয় শাসন পরিবর্তনের ‘ট্রাম্প কার্ড’ হিসেবে দেখছিলেন। জল্পনা-কল্পনাও তেমন শুরু হয়েছিল। কিন্তু সব শেষে এ দুই শীর্ষ রাজনৈতিব এনডিএর হয়ে বিজেপিকেই সমর্থন দিয়েছেন।
এনডিএ জোট শরিকদের মধ্যে হিন্দুস্তান আওয়াম মোর্চার জিতন রাম মাঞ্জি মন্ত্রী হতে পারেন। মন্ত্রিত্ব পেতে পারেন রাষ্ট্রীয় লোক দলের (আরএলডি) জয়ন্ত চৌধুরী, জনতা দলের (সেক্যুলার) এইচডি কুমরাস্বামী, আপনা দলের (সোনেলাল) অনুপ্রিয়া প্যাটেল ও লোক জনশক্তি পার্টির (রাম বিলাস) চিরাগ পাসওয়ান, বিজেপির দীর্ঘদিনের মিত্র রিপাবলিক পার্টি অব ইন্ডিয়ার (এ) প্রধান ও রাজ্যসভার এমপি রামদাস আটওয়াল, একথান শিন্ডের শিব সেনা দলের এমপি প্রতাপরাও যাদবও মন্ত্রী হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মন্ত্রী পদ পেতে পারেন বিজেপি পশ্চিম দিল্লির এমপি কমলজিৎ সেহরাওয়াত, মধ্যপ্রদেশের নেতা শিবরাজ সিং চৌহান ও জ্যোতিরাদিত্য মাধবরাও সিন্ধিয়া এবং হরিয়ানার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খাত্তার। ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চল থেকে বিজেপি নেতা সর্বানন্দ সোনোয়াল ও কিরেন রিজিজুও মন্ত্রী হবেন বলে ইঙ্গিত মিলেছে।
বিজেপির শীর্ষ পদের বরাত দিয়ে এনডিটিভি বলেছে, স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, অর্থ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিজেপি নিজেদের হাত থেকে যেতে দেবে না, এ বিষয়টি নির্বাচনের পর থেকেই আলোচনা হয়ে আসছিল। আর ভারতের সড়ক যোগাযোগে ব্যাপক উন্নতি করায় নীতিন গড়করিই এ মন্ত্রণালয় পাচ্ছেন, সেটা প্রায় নিশ্চিত।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৭ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০২৪
এমজে