ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ব্যাংককের মার্কেটে পুড়ে ছাই হাজার পোষা প্রাণী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৬ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০২৪
ব্যাংককের মার্কেটে পুড়ে ছাই হাজার পোষা প্রাণী

ব্যাংককে বিখ্যাত একটি মার্কেটে আগুনে প্রায় এক হাজারের মতো প্রাণীর মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার ভোরে চাতুচাক নামের ওই মার্কেটে প্রায় একশ দোকান পুড়ে গেছে।

খবর বিবিসির।  

মার্কেটটিতে পোষা প্রাণী কেনা-বেচার অংশে খাঁচার ভেতরে প্রাণীগুলো পুরে মারা যায়, যার মধ্যে ছিল পাখি, কুকুর, বিড়াল ও সাপ। এ ছাড়া ছিল ইঁদুর, অজগর ও গেকো।

বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন ধরে তা ছড়িয়ে যায় বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। তবে আগুনে কোনো মানুষের হতাহতের ঘটনা ঘটার খবর পাওয়া যায়নি।  

পোষা প্রাণী কেনা-বেচার অংশটি দীর্ঘদিন ধরেই বন্ধ করে দেওয়ার দাবি উঠছে। সেখানে জরাজীর্ণ পরিবেশের কারণে প্রাণীর রোগাক্রান্ত হওয়ার এবং মৃত্যুর হার বেশি। আগুনের এ ঘটনায় পোষা প্রাণী কেনা-বেচার অংশটি বন্ধ করে দেওয়ার দাবি আবারও উঠল।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে বড় মার্কেটগুলোর একটি হলো চাতুচাক। সরু সরু গলিতে রয়েছে হাজার হাজার দোকান। এসব দোকানে ভিড় লেগেই থাকে।

থাইল্যান্ডের সবচেয়ে বড় এবং ছুটির দিনের মার্কেট হিসেবে চাতুচাক বেশ পরিচিত। প্রতি শনি ও রোববার দুই লাখ পর্যটক মার্কেটটিতে আসে।  

মার্কেটের একটি অংশে অবশ্য সপ্তাহজুড়েই পোষা প্রাণী কেনাবেচা হয়। চাতুচাকের ২৭টি সেকশনের চারটিতেই তর্কাতীতভাবে সবচেয়ে বিতর্কিত এ বাণিজ্য চলে।  

আগুনের খবর পেয়ে মার্কেটে ছুটে আসা আমপর্ন ওয়ানাসুত নামে এক দোকান মালিক বলেন, যখন এলাম, তখন সব শেষ হয়ে গেছে, সব পুড়ে গেছে। আমি কিছুই করতে পারিনি, কারণ ভেতরে ছিল অন্ধকার। আমি প্রাণীগুলোকে কোনো সাহায্য করতে পারিনি। সব মারা পড়েছে।

৪২ বছর বয়সী এ দোকানি পোষা প্রাণী হিসেবে কচ্ছপ, অজগর, কিং স্নেকের মতো সরীসৃপ বিক্রি করতেন। তিনি বলেন, আমি জানি না, এরপর কী করব। আমার মনে হয়, সব নতুন করে শুরু করতে হবে। তবে জানি না, কীভাবে করব। কিছু মৃত সাপ আমি হিমায়িত করেছি, যাতে হিসাব করতে পারি আর্থিক ক্ষতি কতটা হয়েছে।

প্রাথমিক নিরীক্ষা অনুযায়ী, প্রায় এক হাজার ৪০০ বর্গমিটার জায়গাজুড়ে প্রাণী কেনাবেচার অংশটি অবস্থিত। এ অংশে থাকা ১১৮টি দোকানের বেশিরভাগই আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

মঙ্গলবার বিকেলে বিবিসি গিয়ে দেখতে পান, দোকান মালিকরা ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য নাম লেখানোর অপেক্ষায় রয়েছেন। তাদের অনেককে বিষণ্ণ থাকতে দেখা যায়, আবার অনেককে কান্নাকাটি করতেও দেখা যায়।  

অনেক লোক পুড়ে যাওয়া দোকানের সামনে গিয়ে সেলফি তুলছিলেন। দোকানগুলো ভেঙে পড়তে পারে, এমন শঙ্কায় পুলিশ তাদের সামনে যেতে নিষেধ করছিল। তবে তারা তা মানছিলেন না।

থাইল্যান্ডের ওয়াইল্ডলাইফ ফাউন্ডেশন চাতুচাক মার্কেটকে ব্যাংককের জন্য লজ্জা বলে আখ্যা দিয়েছে। ফাউন্ডেশনের পরিচালক এডউইন উইয়েক বলেন, এই জীর্ণ প্রাণীগুলোকে অনেক দেশে পাচার করা হয়, প্রায়ই অবৈধভাবে। এটি অনৈতিক, নিষ্ঠুর, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এবং সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয়।

পোষা প্রাণীদের ওপর নির্মম নিষ্ঠুরতা বন্ধে তিনি ব্যাংকক মেট্রোপলিটন প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪১ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০২৪
আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।