জনরোষ আর সশস্ত্র বিদ্রোহের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন আরও এক স্বৈরশাসক। সিরিয়ার দীর্ঘ দুই যুগের প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন ‘অজানা গন্তব্যে’।
বিদ্রোহী যোদ্ধারা দামেস্কের কেন্দ্রস্থলে প্রবেশের পর আরব দেশটিতে ‘নতুন যুগ’র সূচনা হয়েছে জানিয়ে প্রবাসী সিরিয়ানদের দেশে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) সিরিয়ার রাজনৈতিক বিরোধী জোটের প্রধান হাদি আল-বাহরা প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের ঘোষণা দিয়ে দেশবাসীর উদ্দেশে বলেন, আমি আপনাদের জানাচ্ছি, বাশার আল-আসাদের পতন হয়েছে। পরিস্থিতি এখন নিরাপদ এবং প্রতিশোধ বা প্রতিহিংসার কোনো জায়গা এখানে নেই। সিরিয়ার ইতিহাসের একটি অন্ধকার অধ্যায় শেষ হয়েছে।
তার এই ঘোষণার পর দামেস্কে আনন্দ-উল্লাসের খবর পাওয়া যাচ্ছে। রাজধানীর রাস্তা সিরিয়ানদের ‘মুক্তি! মুক্তি!’ স্লোগানে মুখর হয়ে উঠেছে।
এর আগেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তীব্র গণআন্দোলনের মুখে বহু স্বৈরশাসক পালিয়েছেন। সিরিয়ার আগে এমনটি ঘটেছিল বাংলাদেশে। জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের। প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা।
তার আগে অভ্যুত্থান সংঘটিত হয় শ্রীলঙ্কায়। দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে গণঅভ্যুত্থানের কারণে পালিয়ে গিয়েছিলেন।
বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করা অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন লিবিয়ার শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফি। অবশ্য স্বৈরাচার গাদ্দাফি পালাতে পারেননি। তিনি বিদ্রোহীদের হাতে নিহত হয়েছিলেন। মিশরে গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন হোসনি মোবারক। পরে তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছিল।
১৯৯৮ সালে গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট সুহার্তো। ২০০৬ সালে অভ্যুত্থান করে থাই জনতা। একটি টেলিকম কোম্পানি বিক্রয়কে কেন্দ্র করে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। ওই বছরেই থাকসিনকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশটির সেনাবাহিনী।
একবিংশ শতকে আলোচিত আরব বসন্ত শুরু হয় তিউনিসিয়ায়। গণঅভ্যুত্থান ঘটলে ২৩ বছর ধরে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখা প্রেসিডেন্ট বেন আলী দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।
বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০২৪
এইচএ/