ঢাকা: ভারতের দক্ষিণ পশ্চিমের রাজ্য কেরালার পুত্তিঙ্গল মন্দিরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের বিচার বিভাগীয় তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের মন্ত্রিসভা জরুরি বৈঠকে বসে আলোচনার পর এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
রোববার (১০ এপ্রিল) ভোরে অগ্নিকাণ্ডের পর দুপুরে জরুরি ওই বৈঠকে বসে মন্ত্রিসভা। বৈঠকটি শেষে বিকেল পৌনে ৩টার দিকে মুখ্যমন্ত্রী উমেন চান্দি এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
তিনি বলেন, আলোচনা করে মন্ত্রিসভা সর্বসম্মতিক্রমে এ ট্র্যাজেডির বিচার বিভাগীয় তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তদন্তকারীরা আগামী ছয় মাসের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দেবেন।
ভোরে রাজ্যের রাজধানী তিরুবন্তপুরম থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে উপকূলীয় শহর কোলামের পুত্তিঙ্গল মন্দিরে অগ্নিকাণ্ডটি হয়। এতে এখন পর্যন্ত অন্তত ১০৬ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন সাড়ে তিনশ’র বেশি মানুষ।
বিভিন্ন পক্ষের বরাত দিয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, দক্ষিণ ভারতের ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় উৎসব ‘নবরাত্রি’ উদযাপনকালে আতশবাজি ফাটানো হচ্ছিল। এক পর্যায়ে এর স্ফূলিঙ্গ মন্দিরে রাখা আতশবাজির স্তূপের ওপর পড়ে। এতে মুহূর্তেই বিকট বিস্ফোরণ হয়। এরপর আগুন ছড়িয়ে পড়ে পুরো মন্দিরে। এসময় দগ্ধ হয়ে মারা যান অনেকে। অনেকে নিহত হন পদদলিত হয়ে। আহত হন সাড়ে তিনশ’র বেশি মানুষ। তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ভোরের দিকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাতের পর সকাল পৌনে ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় রাজ্যের ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত উদ্ধার তৎপরতা চলছে। এতে অংশ নিয়েছে বিমান বাহিনী, নৌবাহিনী ও জরুরি দুর্যোগ মোকাবেলা বাহিনী। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানায়, উৎসব চলাকালে মন্দিরটিতে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে শোক প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ভাইস প্রেসিডেন্ট হামিদ আনসারী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং, ক্ষমতাসীন বিজেপির সভাপতি অমিত সিং, ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রাহুল গান্ধী, অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীসহ স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা।
অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়েই সব নির্ধারিত কর্মসূচি বাতিল করে কেরালা ছুটে গেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিকেলে যাচ্ছেন কংগ্রেস ভাইস প্রেসিডেন্ট রাহুল গান্ধীসহ অনেক নেতা। এরমধ্যে কেরালায় পৌঁছেছেন ক্ষমতাসীন বিজেপির সভাপতি অমিত সিংসহ আরও অনেক নেতা।
অগ্নিকাণ্ডের পর প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ২ লাখ রুপি ও আহতদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার রুপি করে অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।
স্থানীয় পুলিশ বলছে, মন্দিরে আতশবাজি ফাটানোর অনুমতি দেওয়া হয়নি কর্তৃপক্ষকে। তারপরও তা ফাটানো হয়েছে। এ ঘটনায় মন্দির কর্তৃপক্ষের নামে একটি মামলাও দায়ের করেছে পুলিশ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৬
এইচএ/