ঢাকা: সারা দেহ পাথরের তৈরি। এক এক করে ভেঙ্গে ফেলছে শত্রু পক্ষের স্থাপনা।
চিত্রটি মনে পড়ছে! কথা হচ্ছিলো হলিউড মুভি ‘ফ্যান্টাসিক ফোর’ এর বেনকে নিয়ে। তার সারা শরীর পাথরের তৈরি। দর্শকদের কাল্পনিকতার আরও গভীরে নিয়ে যেতে বিষয়টি তৈরি করেছিলেন মুভিটির পরিচালক।
তবে সম্প্রতি এমনই একজনের খোঁজ মেলেছে নেপালে। তবে সে শিশু। আর এই শিশুর শরীর অল্প অল্প করে যেন পরিণত হচ্ছে পাথরে। একটি রোগের কারণেই তার এই অবস্থা।
১১ বছর বয়সী এই ‘ছোট্ট বেনের’ নাম রামেশ। তার জন্ম নেপালের বাংলুঙ্গ শহরে। সে ইকথিয়োসিস নামের একটি বিরল রোগে আক্রান্ত।
রামেশের মা যখন তাকে জন্ম দিয়েছিলেন তখন তার কাছে কোনো কিছু অস্বাভাবিক লাগেনি। তবে ১৫ দিন পার হবার পর থেকে তিনি রামেশের শরীরের বাইরে কিছু একটি পরিবর্তন দেখতে পান।
তিনি দেখতে পান রামেশের শরীরে দিন দিন মোটা কালো কি যেন বাসা বাঁধছে। আস্তে আস্তে সেগুলো পাথরের মতো শক্ত বস্তুতে রূপ নিতে থাকে। ছেলেকে এভাবে পাথর হয়ে যেতে দেখে চিন্তিত হয়ে পরেন রামেশের বাবা নানদাও।
নানদা জানান, রামেশ জন্ম নেওয়ার ১৫ দিন পর থেকে তার শরীরের চামড়ায় আমরা কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করি। এ সময় তার শরীর ছোট ছোট পুরু পাথরের মতো রূপ নিতে থাকে। এ সময় আমাদের কেউ সাহায্য করেনি। আমরা সেই সময় দিশেহারা হয়ে পড়ি। যখন তার বয়স পাঁচ তখন সে আমাদের বলে তার হাঁটা চলায় সমস্যা হচ্ছে। রামেশের যখন ক্ষুধা লাগতো বা টয়লেট লাগতো তখন সে শুধু আমাদের ইশারা দিয়ে জানাতে পারতো। ’, যোগ করেন তিনি।
‘কোনো শিশু রামেশকে দেখলেই ভয় পেয়ে যেতো। এমনকি তারা কেঁদে দিতো। বিষয়টি যেমন তার কাছে খারাপ লাগতো সেই সঙ্গে আমরাও খুব কষ্ট পেতাম। ’
রামেশের চিকিৎসা সঠিকভাবে করানো মাসে ৭ হাজার নেপালি রুপি আয় করা নানদার জন্য একটু কঠিনই ছিলো। কিন্তু জনপ্রিয় নেপালি সংগীত শিল্পী সঞ্জয় এগিয়ে আসার বর্তমানে কিছুটা হলেও ছেলেকে নিয়ে আলোর মুখ দেখতে পাচ্ছেন নানদা ও তার স্ত্রী। কারণ রামেশের চিকিৎসায় সমস্ত ব্যয়ের ভার নিয়েছেন ওই সংগীত শিল্পী।
রামেশ বর্তমানে কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। চিকিৎসকরাও শোনাচ্ছেন আশার বাণী।
চিকিৎসকরা জানান, যখন রামেশকে হাসপাতালে যখন আনা হয় তখন তার খুব খারাপ অবস্থা ছিলো। আশা করা যাচ্ছে এ অবস্থা থেকে খুব তাড়াতাড়ি পরিত্রাণ পাবে সে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৮ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০১৬
আরএইচএস/আরআই