ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

মুসলমানদের ওপর চীনের নির্যাতন নিয়ে মুসলিম দেশগুলো চুপ কেন?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫১ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০২০
মুসলমানদের ওপর চীনের নির্যাতন নিয়ে মুসলিম দেশগুলো চুপ কেন? ছবি: সংগৃহীত

চীনের জিনজিয়াংয়ে বসবাসরত লাখ লাখ মুসলমান সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন করে আসছে বেইজিং। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে নীরব মুসলমান দেশগুলো। এ বিষয়ে বিশিষ্ট ব্রিটিশ সাংবাদিক মন্তব্য করেছেন, মুসলমান দেশগুলো শুধু নিজেদের স্বার্থেই ‘মুসলিম ঐক্যের’ ধারণাটি ব্যবহার করে।

‘কিন্তু মুসলমানদের নীরবে নিপীড়িত হওয়ার প্রধান কারণ মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ যে দেশগুলো রুশদি, জিল্যান্ডস পোস্টেন এবং চার্লি হেবদোর বিরুদ্ধে ক্রোধে ফেটে পড়েছে, সেগুলো এখন নীরব থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা ‘মুসলিম ঐক্যের’ ধারণাটি তখনই ব্যবহার করে, যখন নিজেদের স্বার্থে দরকার হয়।

দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত একটি কলামে এ মন্তব্য করেন সাংবাদিক কোহেন।

তিনি লেখেন, ‘জিনজিয়াংয়ে ‘স্বাধীন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক’ দল পাঠানোর অনুমতি দিতে চীনকে আহ্বান জানায় জাতিসংঘ। ২০১৯ সালের জুলাই মাসে পাকিস্তান, সৌদি আরব, মিশর, সংযুক্ত আরব-আমিরাত, আলজেরিয়া এবং অন্য মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলো, যারা নিজেদের ইসলামের রক্ষক হিসেবে দাবি করে, তারাই এ পশ্চিমা সিদ্ধান্তের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে তা রুখে দিয়েছিল। ’

‘ইরান মাঝে মধ্যে সমালোচনা করলেও ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তারা চীনের সহায়তা চায় বলে খুব সতর্কতার সঙ্গে নিজেদের অভিযোগ জানায়। তাদের কপটতা অনেকটাই হাস্যকর। ইরান, সিরিয়া এবং আরও অন্য কয়েক ডজন দেশ একটি যাদুবাস্তব উপন্যাস সহ্য করতে পারেনি, অথচ গণহারে মুসলমান নারীদের বন্ধ্যা করে দেওয়ার বিষয়টি তারা মেনে নিয়েছে। বন্দিশিবিরের প্রতি তাদের চাপা সমর্থন আছে কিন্তু একটি ড্যানিশ পত্রিকার কার্টুনে কী ছাপা হবে তার সীমা তারা ঠিক করে দিচ্ছে। ’

‘জাতিসংঘে চীনের কণ্ঠ এখন আরও সক্রিয় এবং প্রভাবশালী হয়ে উঠেছে কারণ অসংখ্য দেশ চীনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ অবকাঠামোগত প্রকল্পের কয়েক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে লাভবান হচ্ছে। ’

‘২০১০ সালে নরওয়ে এবং চলতি বছর অস্ট্রেলিয়া কোভিড-১৯ এর উৎপত্তি নিয়ে আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানিয়ে বুঝতে পেরেছে, চীনের বিরুদ্ধে গেলেই সাইবার হামলা এবং নিষেধাজ্ঞার শিকার হতে হয়। তাই সুফল ভোগ করা এবং সাজা এড়িয়ে যাওয়াই শ্রেয়। ’

চীনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘চীনা বিশ্ব পাবলিসিটি থেকে পালিয়ে বাঁচতে চাওয়া নিপীড়কদের পছন্দ। আমরা আমাদের জনগণের সঙ্গে কী করি, তা নিয়ে তোমরা কিছু বলবে না এবং তাহলে তোমরা তোমাদের দেশের মানুষের সঙ্গে কী করো, তা নিয়ে আমরাও কিছু বলবো না। ’

তিনি বলেন, ‘করোনা ভাইরাস ছড়ানোর রেকর্ড এবং মুসলমান সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে কোনো সমালোচনাই শুনতে চায় না চীন। অন্যদিকে, বিষয়টি নিয়ে যাদের সবচেয়ে জোরালো প্রতিবাদ জানানোর কথা, তারা মাথা নিচু করে নীরবতা পালন করছে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১১৫১ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০২০
এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।