রাশিয়া ও ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে প্রথম দফা বৈঠকে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার বিষয়ে কোনা ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। তুরস্কের মধ্যস্থতায় বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
তুরস্কের আন্তালায়ায় রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই লাভরভের সঙ্গে বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা এ তথ্য জানান।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ করা, ইউক্রেনের বেসামরিক নাগরিকদের দুর্ভোগ লাঘব এবং রুশ বাহিনীর হাত থেকে ইউক্রেনের অঞ্চল মুক্ত করার চেষ্টায় আমি এই আলোচনা চালিয়ে যেতে প্রস্তুত’।
তিনি আরও বলেন, ‘এ মুহূর্তে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মারিওপোলে মানবিক করিডোর স্থাপন করা এবং ২৪ ঘণ্টার জন্য যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা প্রয়োজন। কিন্তু এ বিষয়ে আলোচনায় কোনো অগ্রগতি হয়নি। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ যেসব কথা বলেছেন, তা আত্মসমর্পণ করারই নামান্তর’।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ ওই বৈঠকের পর বলেন, তার দেশের সামরিক অভিযান পরিকল্পনা মাফিক চলছে। রুশ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে যুদ্ধের অগ্রগতি কেমন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি বিশেষ অভিযান এবং তা সার্বিক পরিকল্পনা অনুযায়ীই চলছে।
ন্যাটোর কাছে রাশিয়া নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চেয়েছিল উল্লেখ করে ল্যাভরভ বলেন, ন্যাটো নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিলে এই অভিযানের প্রয়োজন হতো না। ইউক্রেন অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করতে পাশ্চাত্যের দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি
পুতিনের অবশ্যই বিচার করা হবে: জেলেনস্কি
সামরিক আগ্রাসন চালানোর জন্য রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
আল-জাজিরা ও এপির প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) এক ভিডিও বার্তায় এ মন্তব্য করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।
জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর জন্য ‘যুদ্ধাপরাধের’ অভিযোগে অবশ্যই ভ্লাদিমির পুতিনকে আদালতে হাজির হতে হবে। একই সঙ্গে রুশ জনগণও তাকে ‘ঘৃণা’ করবে।
পুতিনের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধে জড়িত থাকার জন্য আপনার অবশ্যই বিচার করা হবে’।
ইউক্রেনে আগ্রাসনের কারণে পশ্চিমারা রাশিয়ার ওপর কঠোর আর্থিক ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, এর পরিণতি সব রাশিয়ানরা ভোগ করবে।
জেলেনস্কি বলেন, ‘এটি অবশ্যই ঘটবে, আপনি (পুতিন) রুশ নাগরিকদের কাছে ঘৃণিত হবেন। রুশ জনগণের সঙ্গে আপনি অনেক বছর ধরে প্রতারণা করছেন। এখন তাদের অর্থে টান পড়েছে। রাশিয়ার শিশুরাও ভবিষ্যতে আপনার এই প্রতারণার পরিণতি ভোগ করবে’।
২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। সেখানে একের পর এক স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ধ্বংস করা হচ্ছে। বহু মানুষ হতাহত হচ্ছে। এরই মধ্যে দেশটি ছেড়ে অন্তত ২০ লাখ মানুষ পাশের দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
সূত্র: বিবিসি
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৬ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২২
জেএইচটি