ইউক্রেনে নিজের পরিবার আটকে আছে যুদ্ধের মধ্যে। কিন্তু নিজেকে লুকিয়ে রাখেননি পাকিস্তানের ‘খান ভাই’।
হাজার খানেক ভারতীয় শিক্ষার্থীর জন্য তিনি গাড়ির ব্যবস্থা করে বাড়ি ফিরতে সাহায্য করেছেন।
ভারতীয় শিক্ষার্থীদের কঠিন সময়ে পাশে দাঁড়ানো ২৮ বছর বয়সী এই পাকিস্তানি নাগরিকের নাম মোয়জ্জেম খান।
ভারতীয় শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানো প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ওরা তো সবাই আমার ভাই-বোন। ওদের বাড়ি যাওয়ার ব্যবস্থা করেছি। এটাকে সাহায্য বলতে লজ্জা লাগছে। আমি পাকিস্তানি বলে কোনও ভারতীয়কে সাহায্য করব না, এতটা অশিক্ষিত ছোট মনের হওয়া উচিত নয়।
আনন্দাবাজার জানাচ্ছে, হাজার খানেক ভারতীয় শিক্ষার্থীকে বাড়ি ফিরতে সাহায্য করলেও মোয়াজ্জেমের পরিবারের সদস্যরা আটকে আছেন রুশ হামলায় বিধ্বস্ত পূর্ব ইউক্রেনের সুমি শহরে। আর মোয়াজ্জেম আছেন পশ্চিম ইউক্রেনের টর্নোপিল শহরে। গত এক দশক ধরে ইউক্রেনে পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত মোয়াজ্জেম।
পর্যটন ব্যবসার জন্য তার বাস এবং ট্যাক্সি রয়েছে। সেসব গাড়িতে করেই তিনি ভারতীয় শিক্ষার্থীদের সীমান্ত পার করে দেন।
তিনি জানান, গত ১৫ দিনে বিভিন্ন দেশের হাজার তিনেক মানুষকে তিনি সাহায্য করেছেন। তার মধ্যে ৮০ শতাংশই ভারতীয়। প্রথমে গাড়ি দিয়ে শুরু হলেও পরে খাবার, থাকার ব্যবস্থা করেও সাহায্য করেন তিনি।
মোয়াজ্জেম বলেন, কত খরচ হয়েছে তার হিসাব করছি না, বেঁচে থাকলে আবার উপার্জন করা যাবে।
মোয়াজ্জেমের সাহায্য নিয়ে গত ৭ তারিখ ইউক্রেন থেকে ঝাড়খণ্ডের বাড়িতে ফিরেছেন মনমিত কুমার। তিনি জানিয়েছেন, ‘খান ভাই’ না থাকলে তারা সময়মতো সীমান্তে পৌঁছাতে পারতেন না।
ভারতীয় শিক্ষার্থী আর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলোর কাছে গত কয়েক দিনে মোয়াজ্জেম খান হয়ে গেছেন ‘খান ভাই’।
মনমিত জানিয়েছেন, বাসের জন্য তাদের কাছ থেকে টাকাও চাননি খান ভাই।
মোয়াজ্জেমের ভাষায়, বিদেশের মাটিতে তো পাকিস্তান আর ভারতীয়দের মধ্যে কোনও সীমান্ত নেই। আমি ভারতীয় শিক্ষকের কাছে পড়াশোনাও করেছি।
সীমান্ত পেরোনোর পর ভারতীয় শিক্ষার্থীরা ফোনে, মেসেজে ধন্যবাদ জানিয়েছেন খান ভাইকে। বা়ড়ি ফেরার পর তাদের মা-বাবাও ফোন করে আশীর্বাদ করেছেন। বাড়িতে যাওয়ার নেমন্তন্ন করছেন।
পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে নিজের পরিবারের সদস্যদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেবেন ‘খান ভাই’। তিনি সবার দোয়া চেয়েছেন। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০২২
নিউজ ডেস্ক