ইউক্রেনে হামলার নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ‘সচেতন’ করতে খোলা চিঠি লিখেছেন বিশ্বের ২০টি দেশের প্রায় ৪০ জন মনোবিদ।
ইউনিভার্সিটি অব ফ্রাঙ্কফুর্টের সামাজিক মনোবিদ রল্ফ ফান ডিক এবং ইউনিভার্সিটি অব মারবুর্গের উলরিশ ভাগনার এই চিঠির মূল উদ্যোক্তা।
বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব হাজির করে তারা ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি এবং ব্যক্তি ও সমাজ-জীবনে এর প্রভাব পুতিনের কাছে তুলে ধরেন। এই যুদ্ধ শুধু শারীরিক ক্ষতিই নয় ‘বিচ্ছিন্নতারও’ জন্ম দেবে বলে সতর্ক করেন তারা।
মনোবিদরা বলেন, দুই দেশের মানুষই যুদ্ধের কারণে ‘জাতিগত বিচ্ছিন্নতার’ শিকার হচ্ছেন। অন্যদিকে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে তাদের মধ্যে ‘বঞ্চনার বোধ’ বাড়ছে যা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জনগণের প্রতিরোধ, বিক্ষোভ ও বিপ্লবের মূল কারণ হতে পারে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি অভিজাতদের ওপরেও এর প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন তারা।
চিঠিতে পুতিনকে সতর্ক করে তারা লিখেছেন, অতি আত্মবিশ্বাস খুব সহজেই ভেঙে যায় এবং এ ধরনের নেতারা একপর্যায়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। ‘বাস্তবতার বোধের কারণে মানুষ এক পর্যায়ে যুদ্ধ সূচনাকারী ও দুর্ভোগ, ক্ষতি ও মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যক্তিকে চিহ্নিত করেন’।
পুতিনকে পরামর্শ দিয়ে তারা আরও বলেন, ‘মনোজাগতিক দৃষ্টিকোণ থেকে আমাদের প্রাথমিক প্রস্তাব হলো অবিলম্বে গুলি, বোমাবর্ষণ, লড়াই, হত্যা থামাতে হবে। ...যুদ্ধের বিষয়ে আপনার সিদ্ধান্ত নিয়ে আরেকবার ভাবুন, এই সহিংসতার মধ্য দিয়ে শেষ পর্যন্ত রুশ জনগণ বা ব্যক্তিগতভাবে আপনি আসলে কী অর্জন করবেন’।
চিঠিতে মনোবিদরা পুতিনকে আলোচনার জন্য সবসময় উদার থাকার আহ্বান জানান। তবে এই চিঠি আদৌ পুতিনের কাছে পৌঁছাবে কি না, সেই সন্দেহ উড়িয়ে দিচ্ছেন না অধ্যাপক ফন ডিক।
প্রসঙ্গত, ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরুর পর শুক্রবার (১১ মার্চ) যুদ্ধ গড়িয়েছে ১৬তম দিনে। এখনো ইউক্রেনে বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে রুশ সেনারা। তাদের ঠেকাতে সাধ্যমতো যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেন। এই লড়াইয়ে ইউক্রেন সেনাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন বেসামরিক লোকজনও।
যুদ্ধে বহু হতাহত হয়েছে। ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হয়েছে পুরো ইউক্রেন। এমন পরিস্থিতিতে নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে পাশের দেশগুলোতে অন্তত ২৫ লাখ মানুষ শরণার্থী হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
সূত্র: ডয়চে ভেলে
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০২২
জেএইচটি