ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

আকিকা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আট বিষয়

ইসলাম ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৫ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০২৪
আকিকা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আট বিষয়

সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার সপ্তম দিন আকিকা দেওয়া মুসলিম সংস্কৃতির অন্যতম অংশ। এটি মুসলমানদের অন্যতম ইবাদতও বটে।

ইসলামে আকিকার কিছু নিয়ম-কানুন আছে। নিম্নে সেগুলো তুলে ধরা হলো—

আকিকা কে করবে : যিনি সন্তানের লালন-পালন কিংবা ভরণ-পোষণের দায়িত্ব পালন করছেন, তিনিই সন্তানের আকিকা আদায় করবেন।

তাই প্রথমত, এই দায়িত্ব বাবার ওপর ন্যস্ত হয়। বাবার সামর্থ্য না থাকলে সেক্ষেত্রে মা সামর্থ্যবান হলে তিনি অথবা তাদের পক্ষ থেকে দাদা-দাদি, নানা-নানি আকিকা আদায় করবেন। (আল মাউসুআতুল ফিকহিয়্যাহ : ৩০/২৭৭)

অনেকের ধারণা, আকিকার জন্তু নানার বাড়ি থেকে আসতে হয়, এ ধারণা সঠিক নয়।

আকিকার পশুর সংখ্যা : নির্ভরযোগ্য মতো অনুযায়ী ছেলেসন্তানের পক্ষ থেকে একই ধরনের দুটি বকরি এবং মেয়ের পক্ষ থেকে একটি বকরি আকিকা করা সুন্নত। (ফাতাওয়ায়ে শামি : ৬/৩৩৬)

হজরত উম্মে কুরজ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘ছেলের জন্য এক ধরনের দুটি বকরি এবং মেয়ের জন্য একটি বকরি আকিকা করবে। ’ (আবু দাউদ : ২৮৩৪)

তবে ছেলের পক্ষ থেকে একটি বকরি আকিকা করলেও মুস্তাহাব আদায় হয়ে যাবে। যদিও দুটি করা উত্তম। (রদ্দুল মুহতার : ৫/২১৩, আল মাউসুআতুল ফিকহিয়্যাহ : ৩০/২৭৭)

আকিকার দিন : সাধারণ সন্তান ভূমিষ্ঠের সপ্তম দিন আকিকা করা উত্তম।

তবে যদি কেউ কারণবশত সপ্তম দিন না করতে পারে, তবে পরবর্তী সময়ে যেকোনো দিন আদায় করতে পারবে। সপ্তম দিন মনে রাখার একটি সহজ পদ্ধতি হলো, সপ্তাহের যে দিনটিতে সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়েছে, যেমন—শুক্রবার, পরবর্তী সপ্তাহে ঠিক এর আগের দিন, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার আকিকা আদায় করলে তা সপ্তম দিনে পড়বে। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৮৩৭)

আকিকার পশুর ধরন : যেসব জন্তু দিয়ে কোরবানি শুদ্ধ হয় না, সেসব জন্তু দিয়ে আকিকাও শুদ্ধ হয় না। তাই আকিকার ক্ষেত্রে জন্তুর বয়স ও ধরনের দিক থেকে কোরবানির জন্তুর গুণ পাওয়া যায়, এমন জন্তুই নির্বাচন করতে হবে। (তিরমিজি : ৪/১০১)

কোরবানির পশুর সঙ্গে আকিকা করা : কোরবানির জন্তুর সঙ্গে আকিকা করা বৈধ।

একটি পশুতে তিন শরিক কোরবানি হলে সেখানে আরো দু-এক শরিক আকিকার জন্যও দেওয়া যেতে পারে। তদ্রূপ কোরবানির মতো একই পশুতে একাধিক ব্যক্তি শরিক হয়ে আকিকা আদায় করতে পারবে। (দুররুল হুক্কাম : ১/২৬৬)
বড় পশু, অর্থাৎ গরু, মহিষ, উট ইত্যাদিতে ছেলের জন্য এক শরিক আকিকা দিলেও তা আদায় হয়ে যাবে।

আকিকার পশু জবাইয়ের সময় : কোনো কোনো অঞ্চলে একটি কুপ্রথা রয়েছে যে যখন নবজাতকের মাথায় ক্ষুর বসানো হবে, ঠিক সেই মুহূর্তে পশু জবাই করতে হবে, এ ধারণা সঠিক নয়। মাথা মুণ্ডানোর আগে-পরে যেকোনো সময় আকিকার পশু জবাই করা যাবে। হজরত আতা (রহ.)- এর এক বর্ণনা মতে, আকিকার পশু জবাই করার আগে মাথা মুণ্ডিয়ে নেওয়া উত্তম। (আল মুকাদ্দামাতুল মুমাহ্হাদাত : ১/৪৪৯)

আকিকার গোশতের হুকুম : এটি কোরবানির গোশতের মতোই। কাঁচা ও রান্না করা উভয়টিই বণ্টন করতে পারবে। সর্বস্তরের লোক তা খেতে পারবে। এমনকি নিজের মা-বাবা, নানা-নানি, ধনী-গরিব সবাই নিশ্চিন্তে আকিকার গোশত খেতে পারবে। (ফাতাওয়ায়ে শামি : ৬/৩৩৬)

মৃত বাচ্চার আকিকা : যেহেতু আকিকা করা হয় বালামুসিবত দূর করার জন্য, তাই মৃত বাচ্চার পক্ষ থেকে আকিকা করা সুন্নত নয়। (আহসানুল ফাতাওয়া : ৭/৫৩৬)

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৩ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০২৪
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।